সংক্ষিপ্ত
- হাতির আক্রমণে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় চাপে বন দফতর
- এবার একেবারে অন্য পথে হাতি সমস্যার সমাধান করতে চাইছে বন দফতর
- গত দশবছর আগে যে পথে হাতিকে ফেরত পাঠানো হত
- এবার সেই পুরনো পথ তৈরির উদ্যোগ শুরু করা হল
হাতির আক্রমণে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় চাপে বন দফতর ৷ এবার একেবারে অন্য পথে হাতি সমস্যার সমাধান করতে চাইছে বন দফতর ৷ গত দশবছর আগে যে পথে হাতিকে ফেরত পাঠানো হত, এবার সেই পুরনো পথ তৈরির উদ্যোগ শুরু করা হল ৷ সেই সঙ্গে সময়ের আগেই হাতিকে ঝাড়খণ্ডের দলমায় ফেরত পাঠানোর প্রচেষ্টা শুরু করে দিল বনদফতর।
মেদিনীপুরের ডিএফও সন্দীপ কুমার বেরওয়াল বলেছেন, সময়ের কিছুটা আগেই হাতির দলকে ঝাড়খণ্ডে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে হাতির দলের সদস্যরা ফিরে যেতে শুরু করে। কিন্তু এবার এখন থেকেই তা শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের জন্য পাঠানোর লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যাবস্থা ৷ দশ থেকে বারো বছর আগে যে পথে হাতিকে পাঠানো হত, সেই পথেই পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ৷
এজন্য রাস্তা তৈরি করতে কাজে নেমে পড়েছেন আমাদের কর্মীরা ৷ দীর্ঘ ৮ বছরের বেশি সময় ধরে জঙ্গলমহলে হাতির সমস্যা মাথা চাড়া দিয়েছে ৷ কোনওভাবেই সেই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার পাকাপাকি রাস্তা বের করতে পারেনি বনবিভাগ ৷ দলমা ও ময়ুরঝর্না থেকে হাতির পাল পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম বাঁকুড়াতে প্রবেশ করলে ফেরত যেতে চায়নি ৷ তাদের বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে পাঠালেও অল্পদিনেই ফেরত আসছে রাজ্যের জঙ্গলমহলের জেলাতে ৷ ব্যাপক ক্ষতি করছে ৷ বাধা দিলে প্রানহানি করে চলেছে ৷ নতুন বছরে সেই প্রাণহানি প্রায় রোজই ঘটে চলেছে ৷
সোমবার পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর মিলিয়ে ১১টি হাতির হামলাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৷ ফসল বাড়িঘর ক্ষতির হিসেবও সেই তুলনায় অনেক বেশি ৷ পরপর মৃত্যুর ঘটনায় চিন্তিত বনদফতরও। হাতি বিশেষজ্ঞদের মতে লোভনীয় খাবারের সন্ধানে এ রাজ্যে আসা হাতিগুলিকে এখনই তাড়া করে ফেরত পাঠানো খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়।আগে ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে একপাল হাতির দল আসত। মাসচারেক থাকার পর তারা ফের ফিরে যেত দলমাতেই। তিন–চার মাসের বেশি কখনও তারা থাকত না এ রাজ্যে।
কিন্তু হাতি আনাগোনার চরিত্র এখন পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। এখন প্রায় সারা বছর ধরেই হাতিদের আনাগোনা চলছে। তাড়িয়ে ফেরত পাঠানোর পরদিনই ফেরত আসছে হাতির পাল ৷বর্তমানে একশোর বেশি হাতি স্থায়ীভাবে রয়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে৷ তাই বনকর্তারা এবার বড় উদ্যোগ নিয়েছেন ৷ ডিএফও সন্দীপ বেড়াওয়াল জানান, গত দশবছর আগে একটি অন্য পথে হাতির পালকে দলমাতে ফেরত পাঠানো হত ৷ এবার সেই পথকেই সক্রিয় করা হচ্ছে ৷ পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলার বনদফতর যুগ্ম ভাবে উদ্যোগ নিয়ে সেই পথকে সক্রিয় করার কাজে নেমে পড়েছে ৷ সেই পথে ফসল ও অন্যান্য বাধা সরিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে ৷ গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে সহযোগীতার করতে আবেদন করা হচ্ছে ৷ এই মাসেই সেই কাজ শুরু হবে ৷ আশা করছি, এই বড়ো উদ্যোগে হাতির পালকে লম্বা সময়ের জন্য জেলা থেকে সরিয়ে রাখতে পারব।