সংক্ষিপ্ত
- বিবাহিত যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ
- সালিশি সভায় কান ধরে দুজনকে ওঠবোস
- গ্রামের মাতব্বরদের সামনে হল এই ঘটনা
- ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল চারিদিকে
শাজাহান আলি, ঘাটাল: এক বিবাহিত তরুণের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, এমনই অভিযোগ তুলে সালিশি সভায় কান ধরে দুজনকে ওঠবোস করানো হল গ্রামের মাতব্বরদের সামনে। এমনই এক ভিডিও প্রকাশ্যে চলে আসায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল এলাকায়। ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় অস্বস্তিতে তরুণীর পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থানার মনসুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কন্দর্পচক গ্রামে। এই ঘটনার সময় সিভিক ভলেনটিয়াররাও উপস্থিত ছিলেন বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে বেআইনি এই ঘটনা স্বত্তেও কেন ওই সিভিকরা পুলিশকে খবর দিল না। পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানান- বিষয়টি শুনেছি, তদন্ত হবে ৷
স্থানীয় সূত্র মারফত জানা গেছে, ওই যুবকের বাড়ি ঘাটালের ইড়পালায়। পেশায় ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি। সেই সূত্র ধরেই পরিচয় গড়ে ওঠে কন্দর্পচক গ্রামের বেরা পাড়ার এক পরিবারের সঙ্গে। পরে ওই পরিবারেরই যুবতীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যুবতীর বাড়িতে তার যাতায়াতও ছিল। গত শুক্রবারও ওই যুবক এসেছিল যুবতীর বাড়িতে। এরপরই গ্রামের কিছু মাতব্বরের কথায় দুজনকে তুলে নিয়ে আসা হয় পাড়ার শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে। অনেক রাত অবধি সালিশি চলার পর জামাইষষ্ঠীর দিন 'মোচ্ছব' করার অপরাধে দুজনকেই কান ধরে ওঠ বোস করানো হয়। পরে সেই দৃশ্য মোবাইলবন্দি করে ছেড়ে দেওয়া হয় বাজারে।
ওই সালিশি সভায় হাজির করা হয়েছিল তরুণীর বাবা-মাকেও।তাদের সামনেই তাদের মেয়েকে অপর যুবকটির সঙ্গে শাস্তি হিসেবে প্রকাশ্যে কানে ধরে উঠবোস করানো হয় ৷ ঘটনার সময়ে সিভিকরা উপস্থিত থাকায় গ্রামের লোকজনও কিছু বলতে সাহস পায়নি ৷ বিষয়টি নিয়ে কেউই প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি বলেই জানান স্থানীয় এক মহিলা ৷
কানে ধরে উঠবোস করানোর ভিডিও ভাইরাল হতেই নড়ে বসে প্রশাসন ৷ শনিবার সন্ধায় পুলিশে সুপার দীনেশ কুমার বলেন, বিষয়টি শুনেছি ৷ সেটি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
ওই এলাকায় এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই রাতে ওই গ্রামের পাশের গ্রাম ধসাচাঁদপুরের মোড়লরা একই ভাবে এক গৃহবধূ এবং এক যুবককে গাছে বেঁধে জোর করে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। তা নিয়েও এলাকায় বিতর্কের ঝড় ওঠে। সম্পর্ক থাকা ও হাতেনাতে ধরে ফেলার পরে স্থানীয় স্তরে বিধান দেওয়ান দেওয়ার রীতি রয়েছে মোড়লদের ৷ তবে তা নিয়ে বর্তমানে শুরু হয়েছে শোরগোল ৷