ক্রিকাটার ইমরান খান সকলের পছন্দের পাত্র ছিলেন কিন্তু রাজনীতির ময়দানে তাঁকে সকলে পছন্দ করে না ইমরান খান এখন সেনাবাহিনীর আজ্ঞাবাহী সমালোচনায় সরব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি
পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ক্রিকেটার, এখন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী। ক্রিকেটার ও রাজনীতি দু-ক্ষেত্রেই ইমরান জনপ্রিয়। তবে দুই ইমরানে বিস্তর ফারাক। ক্রিকেট জীবনে ইমরান মোটামুটি সর্বস্বীকৃত সজ্জন এই পরিচয়ে থাকলেও রাজনীতিক; বিশেষত প্রধানমন্ত্রী ইমরান মোটেও সর্বজনশ্রদ্ধেয় নন। ইমরান একবার তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলেছিলেন ঠিকই, তা সত্ত্বেও নিন্দুকের দেওয়া তালেবান খান তকমা থেকে তিনি মুক্ত নন। উগ্রপন্থীদের সমঝে চলা বা সেনাবাহিনীর আজ্ঞাবাহী হওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আছেই। সেই সঙ্গে কেউ কেউ ইমরানকে পাকিস্তানি ট্রাম্পও বলে থাকেন।
আমেরিকার সেনা বাহিনীর ড্রোন হামলায় নিহত পাকিস্তানি তালেবান কম্যান্ডার ওয়ালি-উর-রেহমানকে নিয়ে ইমরান খান এক টুইট বার্তায় বলেছিলেন-ড্রোন হামলায় শান্তিকামী নেতা ওয়ালি-উর-রেহমানকে হত্যার মাধ্যমে যোদ্ধাদের প্রতিশোধ যুদ্ধ ও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হল। একথা একদমই মানা যায়নি।
সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় একেবারেই নারাজ ছিলেন তালেবান নেতা মোল্লা ফজলুল্লাহ। তার লোকেরাই হামলা চালিয়েছিল মালালা ইউসুফজাইয়ের ওপর। অন্যদিকে তখন এই হাকিমুল্লাহ মেহসুদই সরকারের সঙ্গে অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে নমনীয় ছিলেন। অথচ মেহসুদকে হত্যা করা হল। তখনও ইমরান আমেরিকার তীব্র সমালোচনা করলেন।

এরপর ইমরান উত্তর ওয়াজিরিস্তানসহ খাইবার পাখতুনখোয়া ও উপজাতীয় বেল্টে মার্কিন ড্রোন হামলার কট্টর সমালোচক বলে পরিগনিত হন। ২০১৩ সালে ইমরান বলেছিলেন, পাকিস্তানে তালেবানদেরও অফিস খুলতে দেওয়া উচিত। এমনকি টেলিভিশন-রেডিওতেও শর্ত ছাড়া তাদের বলবার সুযোগ দেয়া উচিত। তাঁর যুক্তি ছিল, আমেরিকা যদি আফগান তালেবানকে কাতারে অফিস খুলে দিতে পারে, তো পাকিস্তানে তালেবান কেন বঞ্চিত থাকবে! যদিও তিনি এও বলেছিলেন, তালেবান সংবিধান অবজ্ঞাকারী হলে সেক্ষেত্রে কোনো ছাড় নয়। পরের বছর মার্চে ইমরানের দলের প্রভাবশালী নেতা ও খাইবার পাখতুনখোয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী শওকত ইউসুফজাই জানালেন, তাঁর দল নাকি সবসময়ই প্রদেশটির রাজধানী পেশোয়ারে তালেবানের অফিস খোলা সমর্থন করে
পাকিস্তানে নির্বাচনের মাত্র ২২ দিন আগে বেলুচিস্তানে এক সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ৪৯ জন।আইএস তার দায় স্বীকার করে, তারপরও ইমরান ওই ঘটনায় দায়ী করেন মুসলিম লীগকেই। তবে সন্ত্রাসবাদের জন্য উগ্রপন্থী বা তালেবানদেরও দায়ী করেছেন। ২০১৬ সালে ইমরান তালেবানকে 'সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘যারাই নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করবে, তারাই সন্ত্রাসবাদী’।

