সংক্ষিপ্ত

  • গত ৯ আগস্ট ভারতের সঙ্গে বানিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল পাকিস্তান
  • বানিজ্য যুদ্ধ শুরু করে এখন পাকিস্তানই ব্যাপক চাপে পড়েছে
  • কারণ, আমদানি থকে রপ্তানি সব বিষয়েই ভারতের উপর নির্ভরশীল তারা
  • এখন পিছিয়েও আসতে পারছে না

ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পর গত ৯ আগস্ট ভারতের সঙ্গে বানিজ্য়িক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল পাকিস্তান। বানিজ্য যুদ্ধ শুরু করে এখন পাকিস্তানই ব্যাপক চাপে পড়েছে। কারণ, আমদানি থকে রপ্তানি সব বিষয়েই ভারতের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল পাকিস্তান। বিষয়টা অনেকটা কালিদাসের যে ডালে বসে আছে, সেই ডালই কাটার মতো।  

রপ্তানি দুই দেশের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বলতে গেলে প্রায় একইরকম। ভারতের মোট রপ্তানির ০.৭৩ শতাংশ যায় পাকিস্তানে, সেখানে পাকিস্তানের মোট রপ্তানির ১.৬২ শতাংশ আসে ভারতে। কিন্তু আমদানির ক্ষেত্রে ভারত পাকিস্তানের উপর যতটা নির্ভরশীল, তার থেকে অন্তত পাঁচ গুণ বেশি ভারত নির্ভরতা রয়েছে পাকিস্তানের।  ২০১৮ সালে ভারতের মোট আমদানীর ০.০৯ শতাংশ এসেছিল পাকিস্তান থেকে। আর পাকিস্তানের মোট আমদানির ৩.৯ শতাংশ গিয়েছিল ভারত থেকে।

পাকিস্তানি পণ্যের মধ্যে ভারত সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল সিমেন্টের ক্ষেত্রে। ভারতের যা সিমেন্ট আমদানি হয়, তার ২১.৩ শতাংশ আসে পাকিস্তান থেকে। আর কোনও পণ্যই ভারত  ১ শতাংশের বেশি আমদানি করে না পাকিস্তান থেকে।

কিন্তু, পাকিস্তান অন্তত ৪০টি পণ্যের ক্ষেত্রে ভারতের উপর দারুণভাবে নির্ভর করে। এরমধ্যে খাদ্যশস্য থেকে শুরু করে মাংস, কাঁচা লোহা, অলঙ্কার, শুকনো ফল, তুলোর মতো পণ্য রয়েছে। শুধু পাকিস্তানের আমদানির ক্ষেত্রেই নয়, রপ্তানির ক্ষেত্রেও ভারত বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। অ্যালুমিনিয়াম আকর, পলিমার, লোহা ও ইস্পাত, উল, সিন্থেটিক রবারের মতো ২৬টি পণ্য়ের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের রপ্তানির ১০ শতাংশের বেশি আসত ভারতে।

বানিজ্য বন্ধের ফলে এই সমস্ত ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়েছেন পাক ব্যবসায়ীরা। একদিকে যেমন ভারত থেকে আমদানী বন্ধ করায় বিভিন্ন পণ্যের হাহাকার দেখা দিচ্ছে পাকিস্তানে। যার ফলে পাকিস্তানের বাজারে অনেক পণ্যই এখন অগ্নিমূল্য। এর পাশাপাশি পাকিস্তানে তৈরি পণ্য বিক্রির বাজারের অভাবে পস্তাচ্ছেন পণ্য প্রস্তুতকারকরা।

এর আগেও পাকিস্তানকে এইরকম কালিদাস সুলভ সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গিয়েছিল। বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইকের পর পাকিস্তান তাদের আকাশ সীমা বন্ধ করে দিয়েছিল। ভারতীয় বিমানগুলিকে অনেকটা ঘুরে যেতে হচ্ছিল ঠিকই, কিন্তু ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখ পড়েছিল পাকিস্তান। প্রতিদিন প্রায় ৪০০টি করে বিমানের এয়ার টোল হারিয়েছিল তারা। যার ফলে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয় তাদের। অবশেষে ১২ জুলাই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিল পাক সরকার। বানিজ্যের ক্ষেত্রেও সেষ পর্যন্ত সেই দিকেই এগোতে বাধ্য হবে পাকিস্তান এরকমটাই সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা।