সংক্ষিপ্ত

কয়েকশো পুরুষ মিলে টিকটকারের হেনস্থার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শোরগোল ফেলল আরও এ ভাইরাল ভিডিও। পাকিস্তানও কি আস্তে আস্তে তালিবানিস্তান হয়ে উঠছে?


পাকিস্তানও ক্রমে তালিবান শাসনাধীন আফগানিস্তান হয়ে উঠছে। ক্রমাগত বাড়ছে মহিলাদের উপর হামলা, হেনস্থা করার ঘটনা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, যে বাড়ি থেকে বের হতেই ভয় পাচ্ছেন মহিলারা। লাহোরে গত ১৪ অগাস্ট ৩০০-৪০০ পুরুষ মিলে এক মহিলা টিকটকারকে লাঞ্ছিত করার পর, সম্প্রতি আরও এক মহিলার যৌন নিপীড়নের ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে পাকিস্তানে সাড়া পড়ে গিয়েছে। উঠেছে সমালোচনার ঝড়। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, দুই মহিলা পাকিস্তানের কোনও এক শহরের (অনেকেই দাবি করেছেন ঘটনাটি লাহোরের) ব্যস্ত রাস্তায়, একটি রিকশায় করে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে এক শিশুও বসে রয়েছে। রিক্সাটিকে ঘিরে ফেলেছে কয়েকটি চলন্ত গাড়ি ও মোটরসাইকেল। সেগুলিতে আবার পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা লাগানো। যা থেকে ধরে নেওয়া হচ্ছে ঘটনাটি পাক স্বাধীনতা দিবসের, অর্থাৎ যেদিন ওই টিকটকারকে কয়েকশো পুরুষের হাতে হেনস্থা হতে হয়েছিল। 

"

ভাইরাল ভিডিওটিতে আরও দেখা গিয়েছে ওই গাড়ি ও বাইক আরোহীরা, রিক্সায় বসা মহিলা দুজনকে খারাপ ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং কটু ভাষায় ডাকাডাকি করছে, মৌখিকভাবে তাদের হেনস্থা করছে। এতে ওই মহিলারা দৃশ্যতই বিরক্ত ছিলেন। এরপরই ঘটে এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। ওই মহিলাদের কিছু বোঝার আগেই এক পুরুষকে রিক্সায় লাফিয়ে উঠতে দেখা যায়। তারপর, সে রিক্সায় বসসা মহিলাদের একজনকে জোর করে 'চুমু' খায়। 

দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতে ওই দুই মহিলা এতটাই চমকে গিয়েছিলেন, যে তৎক্ষণাৎ তাঁদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারেননি। পরে অবশ্য ওই ভিডিওতে, এক মহিলাকে তাঁর পায়ের চটি খুলে ওই মোটরসাইকেল আরোহীকে আঘাত করার হুমকি দিতে দেখা যায়। হেনস্থার শিকার হওয়া মহিলা বিরক্ত হয়ে রিক্সা ছেড়ে নেমে পড়ার চেষ্টাও করেন, কিন্তু তাঁর সঙ্গিনী তাঁকে আটকেছিলেন। 

আরও পড়ুন - রান্না খারাপ বলেই জ্বালিয়ে দেওয়া হল আফগান মহিলাকে, কফিনে করে যৌনদাসী পাচার করছে তালিবান

আরও পড়ুন - Afghanistan - 'পাকিস্তানের গ্রাস করার কিংবা তালিবানদের শাসনের পক্ষে অনেক বড় দেশ'

আরও পড়ুন - আপন মেয়ের চোখ উপড়ে নিতেও কসুর করেনি তালিবানি বাবা, পুলিশ হতে চেয়েছিল খাতেরা হাশেমি

এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই পাকিস্তান জুড়ে ব্যপক ক্ষোভ এবং হৈচৈ শুরু হয়েছে। অনেকেই ইমরান খান সরকারের কাছে এই যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এর আগে মহিলা টিকটকার নিগ্রহের ঘটনার সময়, অনেকেই খোলামেলা পোষাকে তিনি টিকটক ভিডিও বানান বলেই হামলার শিকার হয়েছিলেন বলে যুক্তি দিয়েছিলেন। প্রতিবাদীরা, সেইসব পাকিস্তানির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, 'এই মহিলারাও কি টিকটকার? তারা কি এই ধরনের আচরণ নিজেরাই ডেকে এনেছে? পাকিস্তানে কোনও মহিলা কি নিরাপদ?'।

এর আগে, লাহোরে পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার সময় এক জনবহুল এলাকায় এক টিকটকার এবং তাঁর সঙ্গীদের কয়েকশো পুরুষ মিলে যৌন হেনস্থা করেছিল, বলে অভিযোগ উঠেছিল। ওই টিকটকার অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের ঘিরে ধরে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। তাঁর জামা-কাপড় ছিঁড়ে দেওয়া হয়। এমনকী, তারপর তাঁকে নিয়ে শূন্যে লোফালুফিও করেছে দুষ্কতীরা। সেইসঙ্গে, তাঁদের টাকা-পয়সা, মোবাইলও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ৪০০ জন অজ্ঞাত পুরুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে লাহোর পুলিশ। 
 

 

YouTube video player