ভগবান কৃষ্ণের ৯৯ সন্তানের কী হয়েছিল? তাঁর কন্যারা কারা ছিলেন? জেনে নিন
ভগবান কৃষ্ণের স্ত্রী'দের সম্পর্কে অনেকেই জানেন। কিন্তু তাঁর সন্তানদের সম্পর্কে কতজন জানেন? শুধুমাত্র শাম্ব বা প্রদ্যুম্নই নয়, তাঁর আরও অনেক সন্তান ছিল।

শ্রীকৃষ্ণের নাম শুনলেই বহু ভক্ত আপ্লুত হন। তাঁর শৈশবের লীলা, মাখন চুরি, গোপিনীদের প্রেম, গীতার উপদেশ মনে পড়ে। তিনি মহাভারতের যুদ্ধে অর্জুনের পাশে ছিলেন। কৃষ্ণ একজন গুরু, দেবতা এবং স্বামী হিসেবে পরিচিত। কিন্তু পিতা হিসেবে তাঁর সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানেন। পুরাণ অনুসারে, কৃষ্ণের প্রায় ৯৯ জন সন্তান ছিল। ভাগবত এবং হরিবংশের মতো পুরাণ গ্রন্থের উপর ভিত্তি করে পণ্ডিতরা এই সংখ্যাটি অনুমান করেছেন।
পুরাণ অনুসারে, কৃষ্ণ দ্বারকার রাজা হিসেবে দীর্ঘ জীবনযাপন করেন। তাঁর অনেক স্ত্রী ছিল। দ্বারকায় বসবাসের সময় কৃষ্ণের অনেক পুত্র জন্মগ্রহণ করে। কিছু পুরাণে তাঁর সন্তানের সংখ্যা ভিন্ন, তবে সবচেয়ে প্রচলিত সংখ্যা হল ৯৯। তাঁরা সকলেই যদুবংশীয় ছিলেন। এই সন্তানেরা পিতার মতোই সাহসী ও বুদ্ধিমান ছিলেন। কৃষ্ণ তাঁদের রাজনীতি, যুদ্ধবিদ্যা এবং ধর্মে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।
কৃষ্ণের সন্তানদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলেন প্রদ্যুম্ন, যিনি কৃষ্ণ ও রুক্মিণীর পুত্র। শৈশবে অপহৃত হওয়ার পর তিনি একজন সাহসী যুবক হিসেবে বড় হন। তাঁকে প্রেমের দেবতা কামদেবের অবতার হিসেবেও বর্ণনা করা হয়। আরেক পুত্র শাম্বের গল্পটি দুঃখজনক। তাঁর অহংকারী স্বভাবের কারণে তিনি অভিশপ্ত হন, যা যদুবংশের ধ্বংসের কারণ হয়। চারুদেষ্ণ, ভানু এবং গদের মতো পুত্ররাও সাহসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
কৃষ্ণের কন্যারাও ছিলেন, যদিও পুরাণে তাঁদের নাম খুব কমই পাওয়া যায়। রুক্মিণীর কন্যা ছিলেন সুশীলা। সত্যভামার কন্যা ছিলেন চারুমতী। জাম্ববতীর কন্যা ছিলেন ভদ্রা, যিনি দুর্যোধনকে বিবাহ করেন। সত্যভামার আরও কন্যা ছিলেন ভানু, ভীমরিকা এবং জলন্ধমা। তাঁর কন্যারা রাজপরিবারে বিবাহিত হন, যা দ্বারকার সাথে অন্যান্য রাজ্যের সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছিল।
কৃষ্ণের ৯৯ সন্তানের গল্প ভক্তদের কাছে আকর্ষণীয়, যদিও এটি ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত নয়। এই গল্পগুলি কৃষ্ণের জীবনের বিশালতা তুলে ধরে। তিনি কেবল দেবতা নন, একজন রাজা, পিতা এবং পথপ্রদর্শক হিসেবেও তাঁর ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর সন্তানদের কাহিনি সাহস, ধর্ম এবং দায়িত্বের মতো মূল্যবোধ শেখায়। তাই এই গল্পগুলি আজও ভক্তদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।

