- Home
- Religion
- Puja Vrat
- Rath Yatra 2025: রথ যাত্রায় পুরী মন্দিরে কেন সোনার ঝাড়ুু ব্যবহৃত করা হয়? জেনে নিন প্রাচীন এই ঐতিহ্যের তাৎপর্য
Rath Yatra 2025: রথ যাত্রায় পুরী মন্দিরে কেন সোনার ঝাড়ুু ব্যবহৃত করা হয়? জেনে নিন প্রাচীন এই ঐতিহ্যের তাৎপর্য
এই যাত্রা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং ইতিহাস, ভক্তি এবং শতাব্দী প্রাচীন আচার-অনুষ্ঠানের উদযাপনও। একটি জীবন্ত রূপ। এই যাত্রার একটি অনন্য ঐতিহ্য হল সোনার ঝাড়ু দিয়ে পথ পরিষ্কার করা।

প্রতি বছর, আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালন করা হয় ওড়িশার পুরী শহরে ভগবান জগন্নাথের বিখ্যাত রথযাত্রা। এই অনুষ্ঠানটি কেবল ওড়িশাতেই নয়, সমগ্র ভারত জুড়ে গভীর ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সাংস্কৃতিক গর্বের প্রতীক বলে মনে করা হয়।
এই শুভ তিথি উপলক্ষে, দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার লক্ষ ভক্ত পুরীতে পৌঁছান, যাতে তারা ভগবান জগন্নাথ, তাঁর বড় ভাই ভগবান বলরাম এবং বোন দেবী সুভদ্রার বিশাল রথ টানার সৌভাগ্য লাভ করতে পারেন। বিশ্বাস করা হয় যে রথ টানা পাপের বিনাশ করে এবং পুণ্য অর্জন করে।
এই যাত্রা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং ঐতিহ্য, ভক্তি এবং শতাব্দী প্রাচীন আচার-অনুষ্ঠানের একটি জীবন্ত রূপ।
যাত্রার সময় অনেক বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়, যা এই উৎসবকে অত্যন্ত পবিত্র এবং বিশেষ করে তোলে। ভগবানকে রথে বসিয়ে গুন্ডিচা মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়, যা তাঁর মাসির বাড়ি বলে মনে করা হয়।
সেখানে তিনি কয়েক দিন বিশ্রাম নেন এবং তারপর ফিরে আসেন। জগন্নাথ রথযাত্রার এই অনুষ্ঠান ভক্তদের জন্য একটি আবেগগত বন্ধনও, যেখানে বিশ্বাস, সেবা এবং ভক্তি তার তুঙ্গে।
এই উৎসব কেবল আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও ভারতের বৈচিত্র্য এবং ঐক্যকে প্রতিফলিত করে।
পুরীর জগন্নাথ রথযাত্রায় একটি অত্যন্ত বিশেষ এবং অনন্য ঐতিহ্য পালন করা হয়, যা এই উৎসবের পবিত্রতা এবং গভীরতা আরও বৃদ্ধি করে।
রথযাত্রা শুরু হওয়ার আগে, একটি বিশেষ অনুষ্ঠান হয় যেখানে প্রভুর রথের পথ পরিষ্কার করা হয়। এই অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বিশেষ বিষয় হল পরিষ্কার করা হয় একটি বিশেষ ঝাড়ু দিয়ে, যার হাতলে সোনার শিল্পকর্ম থাকে।
এই ঝাড়ু কোনও সাধারণ ব্যক্তি ব্যবহার করেন না, বরং রাজবংশের রাজা বা তার প্রতিনিধি নিজের হাতে ব্যবহার করেন।
এই প্রতীকী পরিষ্কারের উদ্দেশ্য হল প্রভুর পথকে পবিত্র করা এবং দেখানো যে ঈশ্বরের সামনে সকলেই সমান, সে রাজা হোক বা সাধারণ ভক্ত।
সোনার ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করা
পুরীর জগন্নাথ রথযাত্রা একটি অত্যন্ত বিশেষ এবং শুভ ঐতিহ্য দিয়ে শুরু হয়। রথ টানার আগে, ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার পথ একটি বিশেষ উপায়ে শুদ্ধ করা হয়।
এই পরিষ্কারের জন্য, সোনার হাতলযুক্ত একটি ঝাড়ু ব্যবহার করা হয়, যা রাজকীয় ব্যক্তি গজপতি মহারাজ বা তাঁর প্রতিনিধি নিজের হাতে চালান।
এই পবিত্র পরিষ্কারের পরে, বৈদিক মন্ত্র জপ করা হয়, যা পরিবেশকে আধ্যাত্মিক শক্তিতে পূর্ণ করে। এই পুরো আচারটি রথযাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা বলে মনে করা হয়।
এটি বিশ্বাস করা হয় যে সোনা, একটি অত্যন্ত বিশুদ্ধ এবং শুভ ধাতু হওয়ায়, দেবতাদের পূজা এবং বিশেষ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়।
যখন এই ধাতু দিয়ে তৈরি ঝাড়ু দিয়ে ভগবানের পথ পরিষ্কার করা হয়, তখন স্থানটি আরও পবিত্র হয়ে ওঠে যেন ভগবানকে স্বাগত জানানোর জন্য ভূমি প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এই ঐতিহ্য আরও দেখায় যে ভক্তরা তাদের জীবনের সেরা জিনিসগুলি ভগবানকে উৎসর্গ করতে চান। এটি কেবল একটি পরিষ্কার প্রক্রিয়া নয় বরং শ্রদ্ধা, ভক্তি এবং নম্রতার প্রতীক, যেখানে মন, কথা এবং কর্ম দিয়ে ভগবানের সেবা করা হয়।
ধর্মীয় তাৎপর্য
পুরী রথযাত্রার আগে বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার আচারে সোনার ঝাড়ু ব্যবহার কেবল ঐতিহ্যের বিষয় নয় বরং গভীরভাবে ধর্মীয়।
সোনাকে সর্বদা শুভ, পবিত্রতা এবং দেবত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে আসছে। তাই যখন সোনার হাতলযুক্ত ঝাড়ু দিয়ে ভগবান জগন্নাথের পথ পরিষ্কার করা হয়, তখন এটি কেবল একটি আচার নয় বরং গভীর বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধার প্রতীক।
এই আচার এই অনুভূতিকে প্রতিফলিত করে যে ভগবানের জন্য যা কিছু করা হয় তা সর্বোত্তম হওয়া উচিত।
পথ পরিষ্কার করা একটি প্রতীকী উপায় যা দেখায় যে ভক্তরা তাদের প্রতিমাকে স্বাগত জানাতে পূর্ণ প্রস্তুতি এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে এগিয়ে যান। এটি ভক্তদের নিঃস্বার্থ সেবার নিষ্ঠা এবং চেতনাকে প্রতিফলিত করে।

