সংক্ষিপ্ত
কাতারের রাজধানীর আশেপাশে সৌক ওয়াকিফ মার্কেট এবং ফ্যান জোনে নীল-সাদা রং-এর ঢেউ। বিশ্বকাপের চূড়ান্ত লড়াই চাক্ষুশ করতে কাতারে কারে মানুষ ভিড় করছে শহরে।
সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছে আর্জেন্টিনা। দেশের জার্সিতে নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন লিওনেল মেসি। ফ্রান্সের বিপক্ষে জয়েই এখন একমাত্র লক্ষ্য মেসির। ৩৬ বছর পর ফের কাপ জয়ের সুযোগ আর্জেন্টিনার সামনে। এই ম্যাচ নিয়ে তুঙ্গে উন্মাদনা সমর্তজকদের মধ্যে। ইতিমধ্যেই কাতারে ভিড় করতে শুরু করেছেন নীল-সাদা জার্সিধারীরা। ফাইনালের টিকিটের জোগার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন সমর্থকরা। মেসির হাতেই যে ট্রফি উঠবে সেবিষয় একপ্রকার নিশ্চিত তাঁরা। কাতারের রাজধানীর আশেপাশে সৌক ওয়াকিফ মার্কেট এবং ফ্যান জোনে নীল-সাদা রং-এর ঢেউ। বিশ্বকাপের চূড়ান্ত লড়াই চাক্ষুশ করতে কাতারে কারে মানুষ ভিড় করছে শহরে। সূত্রের খবর কমপক্ষে ৪০,০০০ আর্জেন্টিনীয় দোহায় রয়েছেন। আর্জেন্টিনা থেকে ম্যাচ দেখতে আসার জন্য বিশেষ বিমানেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাতার সর্বত্রই দেখা মিলছে ১০ নম্বর নীল-সাদা জার্সিধারীদের।
'আমরাই চ্যাম্পিয়ন হচ্ছি', আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মুখে এখন এই একটাই কথা। 'পাগলের মতো লাগছে। আমার সারা জীবনে এইধরণের অভিজ্ঞতা আগে কখনও হয়নি', ফাইনাল ম্যাচের আগে একটি সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে বললেন ২৩ বছরের আর্জেন্টিনা সমর্থক ক্যামিলা বার্নস্টাইন। বাবা ও ভাই-এর সঙ্গে খেলা দেখতে এসে আবেগঘন গলায় ক্যামিলা আরও বললেন,'এটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। কখনও ভাবিনি আমরা ফাইনালে পৌঁছব। এবারের বিশ্বকাপ আমরাই জিতব।' দোহায় দ্বিগুন দামে বিকোচ্ছে বিশ্বকাপ ফাইনালের টিকিট। বহু সমর্থকরা দোহায় এসেছেন টিকিট ছাড়াই। হয়তো এত দাম দিয়ে টিকিট কেনার সামর্থও নেই অনেকেরই। তবু প্রিয় দলের জয় চাক্ষুশ করতে চান তাঁরা। মেসি কি পারবে গোটা বিশ্বের সমর্থকদের স্বপ্নপূরণ করতে?
বিগত ১৬ বছর ধরে কার্যত ফুটবল বিশ্বে রাজত্ব করেছেন মেসি। ক্লাব ফুটবলে একের পর এক সাফল্য। বিশ্বের সেরার তালিকায় নিজের জায়গা করে নিয়েছেন লিও। আজকে দেশের জার্সিতে নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন তিনি। দেশের হয়ে ব্যর্থতার দাগ মোছার শেষ সুযোগ মেসির সামনে। বার্সেলোনার হয়ে লা লিগা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, কোপা দেল রে থেকে শুরু করে প্যারিস সঁ জরমঁ-এর লিগ ওয়ান যাবতীয় ট্রফি জেতা হয়ে গেলেও আন্তর্জাতিক ফুটবলে সফলতার নজির কম। দেশের হয়ে মাত্র একটি অলিম্পিক্স সোনা ও একটি কোপা আমেরিকা ছাড়া আর কিছুই নেই। কাপ জেতার এটাই শেষ সুযোগ মেসির সামনে। তবে ইতিহাস পক্ষে নেই আর্জেন্টিনার। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে পরাজয়। ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেও জার্মানির কাছে হার। ২০১০ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ। ২০০৬ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিলেন মেসি। প্রথম ম্যাচে নেমে গোলও করেছিলেন তিনি। তাঁরপর ২০১০ সালে ফের বিশ্বকাপের মঞ্চে নামেন মেসি। খেলেছিলেন প্রধান ফুটবলার হিসেবেই। তখন আর্জেন্টিনার দায়িত্বে দিয়েগো মারাদোনা। তাঁরপর মোট পাঁচটি বিশ্বকাপে মোট ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। মোট গোলসংখ্যা ১১। অন্য আজকে মেসির উলটো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা এমবাপে মাত্র দু'টি বিশ্বকাপেই খেলেছেন ১৩টি ম্যাচ। গোল সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯। এমবাপের গতির সামনে এখন টিকে থাকাই আর্জেন্টিনার সামনে মূল চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন -
মেসির 'ওয়ান লাস্ট ডান্স', শেষ ম্যাচে ছ'টি রেকর্ড গড়ার সুযোগ লিওর কাছে
আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফাইনালে ইতিহাস গড়তে তৈরি দিদিয়ের দেশঁ, হুগো লরিস