সংক্ষিপ্ত
আর্জেন্টিনার জার্সিতে জীবনের শেষ ম্যাচে একাধিক রেকর্ড গড়ার সুযোগ মেসির হাতে। এই ম্যাচে জয় ছিনিয়ে আনতে পারলে একদিকে যেমন নতুন ইতিহাস গড়বে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে এই ম্যাচেই ৬টি ব্যাক্তিগত রেকর্ড গড়ার সুযোগও রয়েছে মেসির সামনে।
শেষ লড়াইয়ে মেসি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে শেষ ৯০ মিনিট খেলতে চলেছে মেসি। উলটোদিকে এমবাপের ফ্রান্স। ৩৬ বছরের ব্যর্থতার গ্লানি মুছে রেকর্ড গড়ার সুযোগ মেসির সামনে। তবে শুধু একটা নয়, এই এক ম্যাচে একসঙ্গে ছ'টি রেকর্ড গড়তে পারবেন লিও মেসি। তবে দেশের জার্সিতে শেষ ম্যাচে লিওর কাছে পাখির চোখ বিশ্বকাপ জয়। কাপ জেতার এটাই শেষ সুযোগ মেসির সামনে। তবে ইতিহাস পক্ষে নেই আর্জেন্টিনার। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে পরাজয়। ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেও জার্মানির কাছে হার। ২০১০ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ। ২০০৬ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিলেন মেসি। প্রথম ম্যাচে নেমে গোলও করেছিলেন তিনি। তাঁরপর ২০১০ সালে ফের বিশ্বকাপের মঞ্চে নামেন মেসি। খেলেছিলেন প্রধান ফুটবলার হিসেবেই। তখন আর্জেন্টিনার দায়িত্বে দিয়েগো মারাদোনা। তাঁরপর মোট পাঁচটি বিশ্বকাপে মোট ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। মোট গোলসংখ্যা ১১। অন্য আজকে মেসির উলটো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা এমবাপে মাত্র দু'টি বিশ্বকাপেই খেলেছেন ১৩টি ম্যাচ। গোল সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯। এমবাপের গতির সামনে এখন টিকে থাকাই আর্জেন্টিনার সামনে মূল চ্যালেঞ্জ।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে ষষ্ঠবার খেলছে আর্জেন্টিনা। একদিকে ব্রাজিল ও ইতালির পরে পরপর বিশ্বকাপ জয়ী দেশের তালিকায় নাম লেখানোর সুযোগ ফ্রান্সের সামনে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার জার্সিতে জীবনের শেষ ম্যাচে একাধিক রেকর্ড গড়ার সুযোগ মেসির হাতে। এই ম্যাচে জয় ছিনিয়ে আনতে পারলে একদিকে যেমন নতুন ইতিহাস গড়বে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে এই ম্যাচেই ৬টি ব্যাক্তিগত রেকর্ড গড়ার সুযোগও রয়েছে মেসির সামনে। সম্প্রতি নিজের ফুটবল কেরিয়ারের ১০০০তম ম্যাচ খেলেছেন মেসি। গোল সংখ্যায় ছাপিয়ে গিয়েছেন দিয়েগো মারাদোনাকেও। এবার নতুন রেকর্ড গড়ার লক্ষ্যে ৩৫ বছরের কিংবদন্তি ফুটবলার।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ১৬টি ম্যাচ জিতেছেন লিওনেল মেসি। ফাইনালের ম্যাচে জিততে পারলে বিশ্বকাপের ময়দানে ১৭তম ম্যাচ জিতে জার্মান ফুটবলার মিরোস্লাভ ক্লোজের রেকর্ড ভেঙে ফিফা বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ী ফুটবলারের তকমা পাবেন লিও। এই ম্যাচে নামার সঙ্গেই অপর জার্মান ফুটবলার লোথার ম্যাথাউস রেকর্ড ভেঙে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি দেখা যাওয়া খেলোয়াড়ের শিরোপাও পাবেন মেসি। বিশ্বকাপে ২,২১৭ মিনিট খেলে সবচেয়ে বেশি মিনিট বিশ্বকাপের ময়দানে খেলার রেকর্ড রয়েছে ইতালিয়ান ফুটবলার পাওলো মালদিনীর। বিশ্বকাপে মেসি এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ২,১৯৪ মিনিট। পাওলোর রেকর্ড ভাঙতে আর মাত্র ২৩ মিনিট খেলতে হবে মেসিকে। ফাইনালের ম্যাচেই এই রেকর্ড ভাঙবে বলেই আশা করছেন ভক্তরা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ১০টি গোল তৈরির সুযোগ করে সর্বোচ্চ সহযোগিতার রেকর্ড রয়েছে ব্রাজিলীয় কিংবদন্তি ফুটবলার পেলের হাতে। আজকের ম্যাচে মেসি অন্তত্য দু'টি গোলের সুযোগ তৈরি করলে পারলেই পেলের রেকর্ড ভাঙবেন তিনি। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে গোল্ডেন বল উঠেছিল মেসির হাতে। এই বিশ্বকাপেও গোল্ডেন বল নিজের হাতে রাখতে পারলে দু'টি গোল্ডেন বল প্রাপ্ত বিশ্বের প্রথম ফুটবলারের সিরোপা পাবেন মেসি। এছাড়া বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতার জন্য থাকে গোল্ডেন বুট। এখন পর্যন্ত মাত্র সাত জন ফুটবলার এই সম্মান পেয়েছেন, লিওনিদাস দা সিলভা (১৯৩৮), গ্যারিঞ্চা (১৯৬২), রোনালদো (১৯৯৮ গোল্ডেন বল, ২০০২ গোল্ডেন বুট), পাওলো রসি (১৯৮২), সালভাতোরে শিলাচি (১৯৯০), এবং প্রাক্তন আর্জেন্টিনা তারকা মারিও কেম্পেস (১৯৭৮) এই সম্মান পেয়েছিলেন। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে মেসিও এমবাপে দু'জনেই গোল্ডেন বুটের দাবিদার। এই বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট পেলে, একই সঙ্গে গোল্ডেন বুট ও গোল্ডেন বল প্রাপ্ত দ্বিতীয় ফুটবলার হবেন মেসি। এই ম্যাচেই ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলেকে টপকানোর সুযোগ মেসি কাছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে ২০টি গোলের অবদান রয়েছে মেসির। এর মধ্যে ১১টি নিজের গোল এবং ৯টি সহযোগী। অন্যদিকে পেলের বিশ্বকাপে গোলের অবদান ২২টি। ১২টি নিজের গোল ও ১০টি সহযোগী। ব্যক্তিগত ও সহযোগী মিলিয়ে আর মাত্র তিনটি গোল করতে পারলেই পেলেকে ছাড়িয়ে যাবে মেসি।
আরও পড়ুন -
বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচ লুকা মডরিচের, মরক্কোকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান ক্রোয়েশিয়ার
চোট নিয়েই খেলতে তৈরি মেসি, বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে উজ্জীবিত আর্জেন্টিনা শিবির