সংক্ষিপ্ত
টোকিও অলিম্পিকে প্রথম পদক ভারতের। ভারোত্তলন বিভাগে রূপো দিতেলেন মীরাবাঈ চানু। মোট ২১২ কেজি ভারোত্তলন করেন তিনি। একইসঙ্গে ইতিহাস তৈরি করলেন তিনি। জয়ের পর আবেগঘনভাবে নিজের প্রতিক্রিয়া দিলেন মীরাবাঈ চানু।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েলথ গেমস, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সহ একাধিক প্রতিযোগিতায় পদক পাওয়ার আশাটা আগেই পূরণ হয়েছিল। কিন্তু অধরা থেকে গিয়েছিল অলিম্পিকের মঞ্চে পদক জয়। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে আশা জাগিয়েও সাফল্য আসেনি। তারপর একের পর এক প্রতিযোগিতায় নজির গড়লেও, রিও-র ক্ষতটা এই ৫ বছর ধরে নিজের অন্দরেই বয়ে বেড়াচ্ছিলেন মীরাবাই চানু। অবশেষে রিও-র ক্ষতে প্রলেপ টোকিও অলিম্পিকে। হল স্বপ্নপূরণ। ভারোত্তলনের ৪৯ কেজি বিভাগে রূপো জিতে ইতিহাস তৈরি করলেন মীরাবাই চানু।
একসময় জঙ্গলে কাঠ কুড়ানো থেকে শুরু করে অলিম্পিকের মঞ্চে রূপো জয়। মাঝে অনেক বাঁধা-বিপত্তি অতিক্রান্ত করতে হয়েছে চানুকে। রিও অলিম্পিকের হারের পর হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিজের ভিতরের আগুনটা নিভতে দেননি। তাই তো ঘুড়ে দাঁড়িয়ে শুধু নিজেকে প্রমাণ করলেন তা নয়, বিশ্ব মঞ্চে গর্বিত করলেন গোটা দেশকে। গোল্ড হাতছাড়া হওয়ার কিছুটা আফশোস থাকলেও, অলিম্পিক পোডিয়ামে দাঁড়ানোর স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে শনিবার খুবই খুশি চানু। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবৃতি জারি করে দিয়েছেন নিজেক প্রতিক্রিয়াও।
মীরাবাই চানু তার প্রতিক্রিয়া লিখেছেন,'sএটা আমার কাছে সত্যি স্বপ্ন সত্য়ি হওয়ার মত। এই মদক আমি আমার দেশকে উৎসর্গ করলাম এবং সকল দেশবাসীকে এই সফরে আমার পাশে থাকার জন্য ও শুভকামনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি আমার পরিবারকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই, বিশেষ করে আমার মা যাকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে আমার জন্য ও আমাপ উপর বিশ্বাস রেখেছে। এছাড়াও সমর্থন ও সহযোগিতা করার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ সরকার, ক্রীড়া দফতর, সাই, আইওএ, ভারতীয় ভারোত্তলন সংস্থা, রেলওয়া, কিউজিসি, স্পনসর ও আমার মার্কেটিং এজেন্সি আইওএসকে। এছাড়াও আমার কোচ বিজয় শর্মা ও সাপোর্টিং স্টাফ তাদের ক্রমাগত আমাকে নিয়ে কঠোর পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। শেষে ভারোত্তলন পরিবারের সকল সদস্য ও দেশবাসীকে আরও একবার ধন্যবাদ। জয় হিন্দ'।
বাড়ির মেয়ের ম্য়াচ ঘিরে সকাল থেকেই কিছুটা হলেও চিন্তায় ছিল গোটা পরিবার। ম্যাচের শুরু থেকেই নজর রেখেছিলেন টিভির পর্দায়। পরিবারের সকে মিলে একসঙ্গে দেখেন চানুর ঐতিহাসিক মুহূর্ত। চানুর রূপো জয় নিশ্চিৎ হতেই উৎসবে মাতেন পরিবারের সদস্যরা।থ নিজেদের মধ্যে গান-বাজনা করেন সকলে। সেই তুলে ধরে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে। রূপোর মেয়ে কবে ফের দেশে ফিরবেন সেই অপেক্ষাই এখন করছেন মীরাবাই চানুর পরিবারের সদস্যরা। চানু ফিরলে ফের উৎসব মুখরিত হয়ে উঠবে গোটা পরিবার।
২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিকে ৬৯ কেজি বিভাগে কর্ণম বালেশ্বরীর হাত ধরে ভারোত্তলনে ভারতের ঘরে এসেছিল ব্রোঞ্জ পদক। দীর্ঘ ২১ বছর পর সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটল মীরাবাঈ চানুর হাত ধরে। শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মীরাবাই চানুকে। নিজের রাজ্যের মেয়ের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও মীরাবাঈ চানুর প্রশংসায় উঠেছে ঝড়। চানুর কীর্তিতে গর্বিত পুরো দেশ।