প্রধানমন্ত্রী মোদী মহাকুম্ভে স্নান করলেন। ৫ই ফেব্রুয়ারি স্নানের পেছনে গুপ্ত নবরাত্রি, পিতৃ তর্পণ এবং ভীষ্মাষ্টমীর শুভ যোগ। জেনে নিন এই দিনের ধর্মীয় ও জ্যোতিষীয় তাৎপর্য।
দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সংগম নগরী প্রয়াগরাজে পৌঁছেছেন, যেখানে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মেলা ‘মহাকুম্ভ’এ অংশগ্রহণ করে পবিত্র সংগম নদীতে আস্থার ডুব দিয়েছেন। তাঁর এই পবিত্র স্নানের ছবি এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, শাহী স্নানের জন্য নির্ধারিত তারিখের পরিবর্তে কেন ৫ই ফেব্রুয়ারি এই দিনটি বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী? আসুন জেনে নিই এই দিনের ধর্মীয়, জ্যোতিষীয় এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্য।
৫ই ফেব্রুয়ারি কেন বিশেষ?
১. গুপ্ত নবরাত্রির অষ্টমী তিথির গুরুত্ব:
৫ই ফেব্রুয়ারি মাঘ মাসের গুপ্ত নবরাত্রির অষ্টমী তিथि পালিত হয়, যা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত শুভ বলে বিবেচিত হয়। এই দিন:
- স্নান, ধ্যান, পূজা-পাঠ এবং তপস্যা করলে বিশেষ পুণ্য লাভ হয়।
- দেবী দুর্গার গুপ্ত রূপের পূজা করলে শক্তি, সমৃদ্ধি এবং মোক্ষ লাভ হয়।
- শাস্ত্র অনুসারে অষ্টমী তিথিতে তপস্যা এবং স্নান অত্যন্ত ফলদায়ক বলে মনে করা হয়।
২. পিতৃ তর্পণ এবং মোক্ষ লাভের যোগ:
হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, মাঘ মাসের অষ্টমী তিথিতে পবিত্র নদীতে স্নান করে এবং পিতৃপুরুষদের জল, তিল, অক্ষত এবং ফল অর্পণ করলে পিতৃপুরুষদের আত্মার শান্তি লাভ হয়। এই দিন:
- পিতৃ তর্পণের বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পিতৃপুরুষদের আশীর্বাদ লাভ হয়।
- মোক্ষ লাভের জন্য এই তিथि অত্যন্ত শুভ বলে বিবেচিত হয়।
- গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতীর সঙ্গমে স্নান করলে জন্মান্তরের পাপের ধ্বংস হয়।
৩. ভীষ্মাষ্টমীর ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় তাৎপর্য:
৫ই ফেব্রুয়ারি ভীষ্মাষ্টমী হিসেবেও পরিচিত। হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অনুসারে:
- মহাভারতের ভীষ্ম পিতামহ সূর্যের উত্তরায়ণ হওয়ার পর শুক্ল পক্ষের অপেক্ষায় মাঘ মাসের অষ্টমী তিথিতে প্রাণ ত্যাগ করেছিলেন।
- ভীষ্ম পিতামহের মোক্ষ লাভের কারণে এই দিনটি মোক্ষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
- এই দিনে গঙ্গা স্নান করলে আধ্যাত্মিক শুদ্ধি এবং মোক্ষ লাভের পথ সুগম হয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর ধর্মীয় আস্থা এবং আধ্যাত্মিকতা তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপে প্রতিফলিত হয়। তাঁর মহাকুম্ভ স্নানের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র একটি ভ্রমণ নয়, বরং ধর্মীয় এবং জ্যোতিষীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অনুপ্রাণিত। গুপ্ত নবরাত্রির অষ্টমী, পিতৃ তর্পণের বিশেষ যোগ এবং ভীষ্মাষ্টমীর শুভ যোগের কারণে তিনি ৫ই ফেব্রুয়ারি মহাকুম্ভ স্নানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
