সংক্ষিপ্ত

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি একমুহূর্তের জন্যও স্মার্ট ফোন ছেড়ে থাকার পর কারো শরীর খারাপ হতে বা দুশ্চিন্তা হতে শুরু করে তাহলে সেই ব্যক্তি ছোট-বড় নানান রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

স্মার্ট ফোন ছাড়া নিজেদের জীবন এখন কল্পনাও করা যায় না। আজকাল স্মার্টফোন আমাদের ব্যবহৃত অনেক কিছুই জায়গা নিয়ে নিয়েছে। ঘড়ি, ক্যামেরা, নোটবুক থেকে এটিএম কার্ড পর্যন্ত এখন স্মার্টফোনের মধ্যেই মেলে। ইন্টারনেট (Internet) আর সোশ্যাল মিডিয়ার (Social Media) যুগে স্মার্টফোন (smart Phone) সস্তা হলেও মানুষের গোপনীয়তা (Privacy) বড়োই দুর্লভ হয়ে উঠেছে। 

প্রযুক্তি যত উন্নত হয়েছে ততই বেড়েছে স্মার্টফোনের চাহিদা। আজ প্রায় সকলের কাছেই অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন রয়েছে, কারোর কারোর তো আবার একাধিক স্মার্টফোন রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি একমুহূর্তের জন্যও স্মার্ট ফোন ছেড়ে থাকার পর কারো শরীর খারাপ হতে বা দুশ্চিন্তা হতে শুরু করে তাহলে সেই ব্যক্তি ছোট-বড় নানান রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। যদি মোবাইল থেকে কিছুক্ষণের জন্য দূরে থাকলে অস্বস্তি হতে শুরু হয় তাহলে চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে ‘নোমোফোবিয়া’ বলে।

নোমোফোবিয়ার লক্ষণ গুলি কি কি:-
যদি কোন ব্যক্তি সর্বদা তার মোবাইলটিকে সাথে নিয়ে থাকেন, এমনকি টয়লেট বা স্নান করার সময়ও মোবাইলটিকে হাতছাড়া করতে চান না। এছাড়া কিছুক্ষণ পর পর মোবাইল চেক করেন, কোনও নোটিফিকেশন আসছে কিনা। এমনকি পরিবার বা সঙ্গীর সাথে থাকলেও ফোন ব্যবহার করা বা চার্জ করার সময়ও মোবাইল ব্যবহার করা ইত্যাদি কাজ করতে থাকেন, তবে বুঝতে হবে তিনি এই রোগে আক্রান্ত। 

নোমোফোবিয়া কি:-
মোবাইল থেকে দূরে থাকার কারণে যদি কোন ব্যক্তির উদ্বেগ, ভয় ইত্যাদিগুলি অনুভূত হয় সেটাই চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোমোফোবিয়ার লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনও প্রভাবিত হতে পারে। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে ঘুম — সবই অসুবিধা হতে পারে। আরও সহজ ভাষায় বললে, এই মানসিক সমস্যাকে মোবাইল আসক্তিও বলা যেতে পারে।

২০০৭ সালে উন্নত ফিচার নিয়ে বাজারে আসে আইফোন। এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোনের জয়যাত্রা শুরু। ২০১৮ সালে এসে এমন অবস্থা হয়েছে যে স্মার্টফোন যাঁর নেই তাঁর দিকেই সবাই অবাক দৃষ্টিতে তাকান! এক হিসাবে দেখা গেছে, গত বছর বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২৩০ কোটি। চলতি বছরে এই সংখ্যা কমে যাবে, তা ভাবার কোনো যুক্তি নেই। কারণ, কম্পিউটারের প্রায় সব কাজই মুঠোয় পুরে ফেলেছে স্মার্টফোন। বিশেষ করে পৃথিবীর অনুন্নত, স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল অঞ্চলগুলোয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই যন্ত্র।

নোমোফোবিয়া দ্বারা সৃষ্ট অন্যান্য রোগ:
একটানা দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহার করলে মেরুদন্ডের রোগ হতে পারে কিংবা বেঁকে যেতে পারে। এছাড়া কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম জাতীয় রোগ, ঘাড়ে ব্যথা, ফুসফুসের কার্যকরী ক্ষমতা কমে যাওয়া, অনিদ্রা, বিষন্নতা ইত্যাদি। একটি জার্মান সংস্থার মতে, অতিরিক্ত রেডিয়েশনের মোবাইল ব্যবহার করলে মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়।