সংক্ষিপ্ত
৭০ বছর পর আগামী ২৬সে সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব থাকবে সমচেয়ে কম।অত্যাধুনিক টেলিস্কোপের ব্যবহারে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকেই দেখা যাবে বৃহস্পতির উপগ্রহগুলি
সৌরজগতের সবচেয়ে বড়ো গ্রহটি হলো বৃহস্পতি। আয়তনে এটি পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ১১ গুন্ বড়ো। এটির আকারই এটিকে সৌরজগতের বাকি গ্রহগুলির থেকে আলাদা করেছে। বৃহৎ আকারের জন্য মহাকাশবিজ্ঞানীদের কৌতূহলও কম সৃষ্টি হয়নি এই গ্রহকে নিয়ে। এর গতিপথ ,উপগ্রহ থেকে শুরু করে এর পৃষ্ঠতলে কি কি আছে ? কিভাবেই বা আছে এনিয়েও গবেষণা চলেছে বিস্তর। কোনো কোনো বিজ্ঞানী আবার গ্রহটির ব্যাপারে আরো জানতে ২৪ ঘন্টাই চোখ লাগিয়ে রাখেন টেলিস্কোপে। এইরকম টেলিস্কোপপ্রিয় স্টারগেজারদের জন্য এবার সুখবর। আগামী ২৬ সে সেপ্টেম্বর পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসতে চলেছে বৃহস্পতি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন গত ৭০ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল।
পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব প্রায় ৫৯২.৬৯ মিলিয়ন কিলোমিটার। কিন্তু আগামী ২৬সে সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব থাকবে সবচেয়ে কম, মাত্র ৩৬৫ মিলিয়ন কিলোমিটার । বৃহস্পতির এইরকম পৃথিবীর নিকটবর্তী হওয়ার ঘটনাটি মহাজাগতিক বলে জানিয়েছেন নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের গবেষণারত জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যাডাম কোবেলস্কি। তিনি বলেছেন, "ভাল অর্থাৎ অত্যাধুনিক ব্যান্ডযুক্ত বাইনোকুলার ব্যবহার করলে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকেই সেদিন দেখতে পাওয়া যাবে গালিলিয়ান ৩-৪ টি উপগ্রহ। " এছাড়াও ৪ ইঞ্চি বড়ো এবং সবুজ নীল ফিল্টারযুক্ত টেলিস্কোপ ব্যবহার করলেও বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পট এবং ব্যান্ডগুলিকে আরও বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে সেদিন।
প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও বৃহস্পতির এই উপগ্রহগুলিকে পরীক্ষা করার জন্য একসময় আলোকবিজ্ঞানের সাহায্য নিয়েছিল। কিন্তু কোবেলস্কির মতে আমরা যদি সেদিন বৃহস্পতির উপগ্রহগুলি দেখতে চাই তাহলে সুরক্ষিত মাউন্ট যুক্ত টেলিস্কোপই ব্যবহার করতে হবে।
বৃহস্পতির যতগুলি উপগ্রহ আছে তার মধ্যে মাত্র ৫৩ টিকে এখনো পর্যন্ত মহাকাশ বিজ্ঞানীরা নামকরণ করতে পেরেছেন। তবে গবেষকদের অনুমান বৃহস্পতির মোট ৭৯ টি উপগ্রহ আছে। গ্যালিলিও বৃহস্পতির সবচেয়ে বড়ো উপগ্রহ। এছাড়াও বৃহস্পতির অন্যান্য উপগ্রহগুলি হলো আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো। ছ বছর আগে নাসা জুনো নাম একটি মহাকাশযান প্রেরণ করেছিল বৃহস্পতিতে। সেটি গত ছ বছর ধরে বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে এবং প্রদক্ষিণরত অবস্থায় বৃহস্পতির গ্রহপিষ্ঠ ও উপগ্রহগুলির যে যে ছবি জুনো প্রেরণ করেছে সেগুলো বিশ্লেষণ করেই প্রধানত বিজ্ঞানীদের এরম ধারণা।