সংক্ষিপ্ত
জর্জ ফ্লয়েড মারা গিয়েছেন ছয় দিন হয়ে গিয়েছে
কিন্তু তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে ক্রমে বাড়ছে প্রতিবাদ
শনিবার এইরকম এক প্রতিবাদী যুবতীর ছবি ভাইরালল হল
সকলে বলছেন, এতেই উত্তাল মার্কিন মুলুকের সামগ্রিক মেজাজটা ধরা পড়েছে
সামনে বন্দুক এবং লাঠি হাতে উদ্যত সশস্ত্র শ্বেতাঙ্গ পুলিশ বাহিনী। আর তাদের সামনে শান্তভাবে হাঁটু গেড়ে বসে রয়েছেন এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবতী। পিছনে আরও বেশ কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গ আত্মসমর্পনের ভঙ্গিতে বসে। এই একটি ছবিতেই পুলিশি অন্যায়-অত্য়াচার, হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও লুটপাটের উত্তাল মার্কিন মুলুকের সামগ্রিক মেজাজটা ধরা পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। ফটোগ্রাফার ডাই সুগানো-র তোলা এই ছবিটি এখন ইন্টারেটে ভাইরাল।
গত সোমবার প্রকাশ্য রাস্তায় এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার হত্যা করেছিল জর্জ ফ্লয়েড নামে এক ৪৬ বছরের আফ্রিকান-আমেরিকান-কে। তাঁকে উল্টো করে রাস্তায় শুইয়ে তার ঘাড়ের উপর পা দিয়ে চেপে রেখেছিল পুলিশ। 'আই কান্ট ব্রিথ (আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না)' বলতে বলতে সেখানেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। আর সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েই এখন আমেরিকায় আগুণ জ্বলছে।
করোনাভাইরাস-এর থেকেও মারাত্মক এই বর্ণবিদ্বেষের ভাইরাস, এমনটাই মনে করছেন মার্কিনিরা। তাই প্রদেশের পর প্রদেশে দাবানলের মতো ছড়াচ্ছে বিক্ষোভের আগুণ। 'আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না' - নিহত জর্জ ফ্লয়েড-এর এই শেষ বলা কথাটাই প্রতিবাদের প্রধান স্লোগান হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে যেভাবে শ্বেত আধিপত্য মাথাচাড়া দিচ্ছে, তাতে তাঁরা নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না বলেই এই প্রতিবাদ।
তবে ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এইসব প্রতিবাদ টতিবাদ করা চলবে না। কড়া হাতে তা দমন করাস হবে। আর তারপর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে উঠেছে। শনিবার, বেশ কয়েকটি শহরে প্রতিবাদীদের সঙ্গে পুলিশের তীব্র সংঘর্ষ বাধে। ইন্ডিয়ানাপোলিসে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুও হয়েছে। যদিও সেখানকার পুলিশের দাবি, তাদের কোনও সদস্য এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। নিউইয়র্কের মতো বানিজ্যকেন্দ্রে দেখা গিয়েছে পথ অবরোধ করে থাকা জনতাকে একপ্রকার ঠেলেই এগিয়ে চলেছে পুলিশের গাড়ি। সান হোসে শহরে তো যুদ্ধক্ষেত্রের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
ডাই সুগানোর তোলা ভাইরাল হওয়া এই ছবিটি সান হোসে-তেই তোলা। জানা গিয়েছে, সেখানে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপর পাথর এবং বোতল ছুড়েছিল। জবাবে পুলিশ ছোড়ে স্টান গ্রেনেড। এমনকী প্রতিবাদী জনতার উপর জ্বালাময় রাসায়নিক স্প্রে করা হয়। শিকাগো লস অ্যাঞ্জেলেস, সিয়াটেল, ফিলাডেলফিয়া - সব জায়গাতেই এক ছবি। রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজারর বিক্ষোভকারী। জ্বলছে গাড়ি ও অন্যান্য সম্পত্তি। আধপোড়া অবস্থায় পড়ে রয়েছে মার্কিন জাতীয় পতাকা।
আবার এরমধ্যে এক অংশের মানুষ আবার লুটপাটও চালাচ্ছেন। শনিবার লস এঞ্জেলেস শহরের ফেয়ারফ্যাক্স-এ জনতা সিবিএস টেলিভিশন সিটি স্টুডিওতে জোর করে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। পুলিশ তাদের বাধা দিলে স্বাভাবিকভাবেই সংঘর্ষ বাধে। সেই সময়ই আবার একদল লোক ফেয়ারফ্যাক্সের দ্য গ্রোভ শপিং সেন্টারে লুটপাট চালায়। লুট হয়েছে ধনীদের জায়গা হিসাবে পরিচিত বেভারলি হিলস এলাকার বেশ কয়েকটি দোকানেও।