সংক্ষিপ্ত

বলা হয় ইতিহাস নিজেই নিজের পুনরাবৃত্তি করে

ঠিক তাই ঘটল কান ভাইদের ক্ষেত্রে

১৯১৮-১৯'এর স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির বলি হয়েছিলেন একজন

যমজ ভাই-এর প্রাণ গেল কোভিড-১৯'এ

 

কোনও চাকা যেভাবে ঘোরে, বলা হয়, ইতিহাসও সেইভাবে ফিরে ফিরে আসে। ১৯১৮-১৯ সালে বিশ্বে করোনার মতো বৃহৎ আকারে না হলেও ভয় ধরিয়েছিল স্প্যানিশ ফ্লু মহামারি। সেই মারির দাপটে প্রাণ হারিয়েছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াই করা এক মার্কিন যোদ্ধার যমজ ভাই। এক শতাব্দী পর করোনাভাইরাস কেড়ে নিল সেই যোদ্ধার প্রাণ।

করোনায় মৃত প্রাক্তন সেই মার্কিন যোদ্ধার নাম ফিলিপ কান। ইও জিমার যুদ্ধে তিনি লড়েছিলেন শুধু নয়, হিরোশিমা এবং নাগাসাকি-তে পরমাণু বোমা হামলার পরে বিমান থেকে তিনি ওই দুই জায়গায় নজরদারির কাজও করেছিলেন।

ফিলিপ কান-এর এক যমজ ভাই ছিল স্যামুয়েল কান। তাঁরা দুজনেই ১৯১৯ সালের ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। স্যামুয়েল-এর জীবন বেশি লম্বা হয়নি। সেই সময় বিশ্বে ছড়িয়েছিল স্প্যানিশ ফ্লু। সেই মহামারিতেই মারা গিয়েছিল স্যামুয়েল। ইতিহাসের আশ্চর্য পুনরাবৃত্তিতে ঠিক ১০০ বছর পর আরেক ভাই-ও ইহলোক ত্যাগ করলেন আরেক মহামারির প্রকোপেই।

সবচেয়ে অদ্ভূত বিষয় হল, ফিলিপ কান-এর নাতি ওয়ারেন জিসম্যান জানিয়েছেন, পিলিপ সবসময় ভয় পেতেন, তাঁর জীবদ্দশায় আরও একটি মহামারি আসবে। প্রায়শই এই বিষয়ে আত্মীয়দের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করতেন তিনি। শতায়ু ফিলিপ জিসম্যানকে বলতেন, 'ইতিহাস নিজেই নিজের পুনরাবৃত্তি করে, ১০০ বছর সময়কাল মোটেই দীর্ঘ নয়'। করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার আগ দিয়ে তিনি বারবারই তাঁর ভাইয়ের বিষয়ে কথা তুলতেন।

বিপর্যয়েও মুসলিম-বিদ্বেষ, দরজা থেকে করোনাযোদ্ধা'কে তাড়িয়ে বিপাকে জাত-জালিয়াত

 

১৫ বছরের প্রেম, নার্সের উদ্যোগে করোনায় মৃত্যুর ঘন্টাখানেক আগে করলেন বিয়ে

করোনা-রহস্য উদঘাটনে আসরে 'ফেলুদা', কাগজ কুচিই জানান দেবে পজিটিভ না নেগেটিভ

১৭ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তার আগে তাঁর দেহে, সর্দি-কাশি, হাল্কা জ্বরের মতো করোনাভাইরাসের উপসর্গগুলি দেখা দিয়েছিল। হাসপাতাললে ভর্তি হওয়ার পর ক্রমে অবস্থার অবনতি ঘটে। ১৯৪০ সালে ইউএস আর্মির এয়ার কর্পস পাইলট প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন ফিলিপ কান। প্রথমে ইও জিমার যুদ্ধ এবং পরবর্তীতে জাপানের উপর ফায়ার বম্বিং হামলায় তিন অংশ নেন। এরজন্য  দুটি ব্রোঞ্জ তারকা-ও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বরাবরই যুদ্ধ-কে ঘৃণা করতেন তিনি। বলতেন, 'যুদ্ধে সৈন্যরা মারা যায় ঠিকই, তবে অসামরিক লোকরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা'। গত সোমবার পশ্চিম ব্যাবিলনের নিউ মন্টেফিয়র কবরস্থানে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।