সংক্ষিপ্ত

ঐতিহাসিক চুক্তি সাক্ষরিত হল ইসরাইল এবং ইউএই-র মধ্যে

কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে চলেছে

মধ্যস্থতা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

নভেম্বরের ভোটের আগে এতে খানিক বাতাস পাবেন তিনি

 

মার্কিন নির্বাচনের ঠিক আগে বিশ্ব রাজনীতিতে দারুণ জয় পেলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার তিনি ঘোষণা করলেন কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার জন্য ইসরাইল এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি একটি চুক্তি করেছে। এদিন টুইট করে এই খবর জানানোর পর ট্রাম্প বলেন এই এটি ঐতিহাসিক সাফল্য মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরার পথ প্রশস্ত করবে। ট্রাম্পের টুইটের পরই ইসরাইল এবং আমিরশাহি দুই দেশের পক্ষ থেকেই এই বিষয়ে নিশ্চিত করে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

এই পদক্ষেপের ফলে মিশর ও জর্ডনের পর তৃতীয় আরব দেশ হিসাবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ইসরাইলের সঙ্গে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চলেছে। এরফলে সম্ভবত দুই দেশে তৈরি হবে দূতাবাস, থাকবেন দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরা। স্থাপিত হবে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক, বিমান যোগাযোগ। এদিনের যৌথ বিবৃতি অনুসারে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইসরাইল 'আগামী সপ্তাহগুলিতে' সরাসরি বিমান যোগাযোগ, সুরক্ষা, টেলিযোগাযোগ, জ্বালানি, পর্যটন ও স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষর করবে। দুই দেশ করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলাতেও অংশীদার হবে।

নভেম্বরের নির্বাচনের আগে এই বিরল কূটনৈতিক জয় ট্রাম্প-কে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে। এর আগে তিনি আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধের অবসান করার চেষ্টা করেছিলেন। তার সেই প্রচেষ্টা এখনও ফলপ্রসু হয়নি। ইসরাইল ও প্যালেস্তাইনি-দের মধ্যে শান্তিও ফিরে আসার দূর-দূরান্ত অবধি সম্বাবনা নেই। ভারত-পাক কিংবা ভারত-চিন দ্বন্দ্ব মেটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেও সুযোগ পাননি। তাই এই বিরল জয়ের পর সাংবাদিকদের মজা করে তিনি বলেছেন, এই চুক্তিটিকে তিনি 'ডোনাল্ড জে ট্রাম্প চুক্তি' হিসাবে অভিহিত করতে চান।

শুধু ট্রাম্পেরই নয়, এতে করে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-র টলমল সরকারও হালে কিছুটা বাতাস পেল। বহু বছর ধরে নেতানিয়াহু গর্ব করেন, প্রকাশ্যে স্বীকৃত না হলেও তার সরকারের সঙ্গে আরব দেশগুলির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এই ঘটনায় তিনি সেই দাবি কিছুটা হলেও স্বীকৃতি পেল। তবে প্যালেস্তাইনিদের ওয়েস্টব্যাঙ্ক ও অন্যান্য অধ্যুষিত অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার দাবি তাঁকে মানতে হয়েছে।

অন্যদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির শাসকদের লক্ষ্য বিশ্বের সামনে প্রমাণ করা, গণতন্ত্র না থাকলেও সহনশীল শাসন দেওয়া যায়। বরাবরই মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদেরক সহনশীল দেশ হিসাবেই নিজেদের তুলে ধরতে চায় তারা। এই পদক্ষেপে তাদের এই প্রচার আরও জোরদার হবে। তবে এতে করে তাদের বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে প্যালেস্তাইনিরা। স্বায়ত্বশাসন পেলেও তারা আরব দেশগুলিকে বারবার বলেছিল যতক্ষণ না স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একটি শান্তি চুক্তি হয়, ততক্ষণ যেন তারা ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করে।