সংক্ষিপ্ত
১৯১৮ ফ্লু দেখেছিলেন মার্কিন বৃদ্ধা
এখন লড়াই করছেন করোনাভাইরাসের সঙ্গে
মৃত্যুর আগে স্ত্রীকে লেখা চিঠি
বেঁচে থাকার গল্প বললেন স্বামী
দেখতে দেখতে জীবনের ১০৫টা বসন্ত পার হয়ে এসেছেন। বিশ্ব যুদ্ধ থেকে শুরু করে জীবনের নানা ওঠাপড়ার সাক্ষী লুবিকা গ্রেনকো। সালটা ছিল ১৯১৮। ভয়াবহ ফ্লুর সেই প্রচণ্ড দাপট দেখেছিলেন। শতাব্দী প্রাচিন এই মহামারী কেড়ে নিয়েছিল তাঁর মাকে। একই সঙ্গে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর দুধের শিশু এক মাসের বোনের। হাসপতালের বিছানা শুয়ে শুয়ে পুরনো কথাই মনে করছেন লুকিবা। সামনের অগাস্টেই ১০৬ বছরে পা রাখবেন লুবিকা। কিন্তু লুবিকার জীর্ণ প্রায় শরীরে থাবা বসিয়েছে মারাত্মক ছোঁয়াছে করোনাভাইরাস। গত ২৯ এপ্রিল থেকেই তিনি নিউ মেক্সিকোর হাসপাতালে ভর্তি। পাশে রয়েছে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। নাতনি জানিয়েছেন ঠাকুমার কাছে গল্প শুনেছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় নাকি তিনি জন্মেছিলেন। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর ভয়াবহ সেই মন্দার দিনগুলিরও তিনি দেখেছেন। ঠাকুমাই তাঁকে জানিয়েছিলেন তাঁর মা প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিল। কিন্তু আর কোনও দিন ফিরে আসেনি। তবে ঠাকুমা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে সে বিষয়ে আশাবাদী নাতি। কারণ তাঁকে যথেষ্ট নিরাপত্তার ঘেরাটোপে রাখা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন তাঁর ঠাকুমা এখনও জানেনই তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তাই অনেকটাই চিন্তামুক্ত শতাব্দী প্রাচীন মহিলা। তবে এখনও বেঁচে থাকতে চান।
স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর মোবাইল ফোন ঘাঁটতে ঘাঁটতেই চিঠিটি পেয়েছিলেন স্ত্রী। যেখানে রয়েছে দম্পতির প্রাণের গল্প। একই সঙ্গে প্রেমের গল্পও বটে। কারণ সেই লেখায় স্বামী স্ত্রীর উদ্দেশ্যেই লিখেছিলেন কেটি তাঁরে একটি সেরা জীবন উপহার দিয়েছেন। এরপর আর তাঁর চাওয়ার কিছুই থাকতে পারে না। দুই সন্তানের বাবা হিসেবেই তিনি গর্বিত। তিনি নিজেকে একজন সুখী মানুষ হিসেবেই প্রতিপন্ন করেছেন। কেটি ও তাঁর সন্তানদের জন্য বুকভরা ভালোবাসা রেখে গেছেন তিনি। পাশাপাশি কেটি ও সন্তানদের জন্য সুন্দর আর আনন্দময় জীবনের প্রার্থনাও করেছেন তিনি। কানেকটিকাটের বাসিন্দা ৩২ বছরের জোনাথন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেই জানাযায় তিনি করোনা আক্রান্ত। ২০ দিন হাসপাতালে থাকার পর মৃ্ত্যু হয় তাঁর।
আরও পড়ুনঃ করোনা মোকাবিলায় ভারতের কাজ প্রশংসা পেয়েছে বিদেশে, বৈঠকে বিরতির আগে মোদীর মন্তব্য ...
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সোমবারের হিসেব অনুযায়ী আক্রান্তের সংখ্যা ১৩, ৬৮,৯৪৩। মৃত্যু হয়েছে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষেরষ করোনা আক্রান্ত দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মৃতের সংখ্যায় অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে চিন, ইতালি, ব্রিটেনকে। পাশাপাশি গোটা দেশ জুড়ে তৈরি হয়েছে প্রবল মন্দা। কাজ হারিয়েছেন অনেক মানুষই। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হতাশা। সেখানে জীবনের গল্প বলে বেঁচে থাকার আলোই দেখাচ্ছেন লুবেকা-জোনাথনরা।