কলকাতায় উদ্ধার সিংহ শাবক, তিনটি বানর, পাচারের আগেই বমাল গ্রেফতার ৩

  • বন্যপ্রাণ শাখার বড় সাফল্য
  • একটি সিংহ শাবক-সহ গ্রেফতার তিনটি বানর
  • বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে গ্রেফতার

/ Updated: Jun 01 2019, 04:18 PM IST

Share this Video
  • FB
  • TW
  • Linkdin
  • Email


কলকাতার একেবারে কাছেই পাচার হওয়ার সময় উদ্ধার হল সিংহ শাবক। তার সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি হোয়াইট হেডেড লেঙ্গুর শাবক। শুক্রবার রাতে বিমানবন্দরের কাছে বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ের উপরে একটি গাড়ি থেকে প্রাণীগুলিকে উদ্ধার করে পুলিশ এবং বনপ্রাণ শাখার অফিসাররা। প্রাণীগুলিকে বাংলাদেশ থেকে বনগাঁ সীমান্ত হয়ে এ রাজ্যে আনা হয়েছিল। সেখান থেকে সম্ভবত সেগুলিত পশ্চিম ভারতে পাচারের পরিকল্পনা ছিল। ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

কয়েক বছর আগেই এই শহর থেকে উদ্ধার হয়েছিল বেশ কয়েকটি মার্মোসেট প্রজাতির বাঁদর ছানা। এছাড়াও তক্ষক, বিদেশি পাখী মাঝেমধ্যেই পাচারের সময় ধরা পড়ে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে কলকাতার বুক থেকে পাচার করার সময় সিংহ উদ্ধারের কথা মনে করতে পারছেন না বন দফতরের কর্তারাও। তাও আবার একটি নয়, একসঙ্গে তিনটি।

প্যান্থেরা লিও নামে যে প্রজাতির সিংহশাবককে উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলি মূলত মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকায় দেখতে পাওয়া যায়। আর হোয়াইট হেডে লেঙ্গুর প্রজাতির এই বানরদের মূলত ভিয়েতনাম এবং চিনে পাওয়া যায়। এই হোয়াইট হেডেড লেঙ্গুর অতি বিরল প্রজাতির প্রাণী। তাদের সংখ্যাও দ্রুত কমছে, গোটা বিশ্বে মাত্র সত্তরটির মতো হোয়াইট হেডেড লেঙ্গুর টিকে রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। 

বন্যপ্রাণ শাখা সূত্রে খবর, বন্যপ্রাণী পাচারের বড় একটি বরাত বাংলাদেশ হয়ে এ রাজ্যে ঢুকতে পারে বলে আগেই তাদের কাছে খবর ছিল। সেই মতো শুক্রবার রাত দুটো নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরের কাছে বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ের উপরে অপেক্ষা করছিলেন ওয়াইল্ড লাইফ কন্ট্রোল ব্যুরো এবং ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল সেলের অফিসাররা। সঙ্গে ছিল পুলিশও। সন্দেহভাজন একটি স্করপিও গাড়ি দেখে সেটিকে তাড়া করে আটকান আধিকারিকরা। আর সেই গাড়ি থেকেই উদ্ধার করা প্রাণীগুলিকে। সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ির চালক-সহ তিন পাচারকারীকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নেন বন প্রাণ শাখার অফিসাররা। 

বন প্রাণ শাখার আধিকারিকদের ধারণা, বাংলাদেশ থেকে বনগাঁ সীমান্ত হয়ে প্রাণীগুলিকে এ রাজ্যে ঢোকানো হয়। এর পর বর্ধমান হয়ে সেগুলিকে পশ্চিম ভারতের কোথাও পাচারের পরিকল্পনা ছিল। তবে গোটা পাচার পর্বে একাধিকবার প্রাণীগুলির হাত বদল হয় বলে খবর। আগে থেকে পাচারকারীও জানতে পারত না, ঠিক কার হাতে প্রাণীগুলিকে তুলে দিতে হবে। ফোনে যে নির্দেশ আসত, সেই অনুযায়ী কাজ করত তারা। 

অতীতেও এই ধরনের প্রাণী পাচারের সময় উদ্ধারের পরবর্তী সময়ে সেগুলির ঠাঁই হয়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানায়। এ ক্ষেত্রেও উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলিকে চিড়িয়াখানাতেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে শনিবার সকালে। ধৃত তিনজনকে জেরা করছে বন দফতরের কর্তারা। এই প্রাণী পাচার চক্রের সঙ্গে কারা কারা যুক্ত, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।