১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবীর কোল আলো করে আসে একটি ফুটফুটে পুত্রসন্তান, লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবীর তিনকন্যা সন্তান ছিল, তাঁর কোনো পুত্রসন্তানই বাঁচত না
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী জন্মমুহূর্তেই তিন মুষ্টি ক্ষুদ দিয়ে মায়ের কাছ থেকে সসদ্যোজাত ছেলেকে কিনে নেন তাঁর বড়দিদি অপরূপা। ‘ক্ষুদ দিয়ে কেনা’ হল বলে ছেলের নাম রাখা হয়েছিল ‘ক্ষুদিরাম
মেদিনীপুর বিপ্লবী গুপ্ত সমিতির দায়িত্বে তখন জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসু, তাঁর ভাই সত্যেন্দ্রনাথ বসু ও হেমচন্দ্র কানুনগো । জ্ঞানেন্দ্রনাথ ক্ষুদিরামকে নিয়ে যান বিপ্লবী সত্যেন্দ্রনাথের কাছে।
সত্যেন্দ্রনাথের তত্বাবধানে বিপ্লবী সমিতির গোপন আখড়ায় শরীরচর্চা শুরু করেল ক্ষুদিরাম, এছাড়া বন্দুক-রিভলবার চালানোর গোপন শিক্ষাও নিতে লাগলো সে
১৯০৮, ২৫ এপ্রিল ক্ষুদিরাম কলকাতায় এসে পৌছন। কলকাতায় গোপীমোহন দত্তের ১৫ নম্বর বাড়িটি ছিল তখন বিপ্লবীদের তীর্থক্ষেত্র, সেখানে বসেই হেমচন্দ্র ও উল্লাসকর শক্তিশালী বোম তৈরী করতেন।
বই বোম অর্থাৎ যে বোমা বইয়ের ভাঁজে রাখা যেত। সেই বোমই ব্যবহার করা হয় অত্যাচারী কিংসফোর্ডকে হত্যায়। কৌশলে একটি বই তাঁর কাছে পাঠানো হয়, কিংসফোর্ড বই না খোলার কারণে বেঁচে গেলেন।
তারপর কিংসফোর্ডকে হত্যার দায়িত্ব নিল ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকী। ১৯০৮ ৩০ এপ্রিল, রাত ৮টায় বোম ছুঁড়ল দুই বিপ্লবী। ভুলবশত বোমা গিয়ে যে গাড়িতে পড়ল সেই ফিটন গাড়িতে কিংসফোর্ড ছিলেন না।
ঘটনায় নিহত হলেন মিসেস কেনেডি, কন্যা ও চাকর। ১৯০৮ সালের ১১ আগষ্ট হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে জীবন উৎসর্গ করলেন ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনের সর্বকনিষ্ঠ শহীদ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু