১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছিল দেশজুড়ে। সেই জোয়ার এসে ধাক্কা দিয়েছিল বাংলার মাটিকেও। শ্লোগান উঠেছিল “ইংরেজ ভারত ছাড়ো, করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে, বন্দেমাতরম।”
তমলুক থানার আকাশ বাতাস কাঁপছিল সেদিন সত্তোরোর্ধ এক বৃদ্ধার গলার দাপটে। তবে ইংরেজদের কানে সে আওয়াজ সহ্য হয়নি। ছুটে এসেছিল তারা বন্দুক নিয়ে। আন্দোলনকরীদের ওপর নির্বিচারে চলেছিল গুলি
মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা। গুলি এসে লাগল তাঁর পায়ে, হাতের শঙ্খ মাটিতে পড়ে গেল, পরের বুলেটের আঘাতে হাত নেমে এলো মাটিতে। তখনও তিনি বলছেন, “ইংরেজ তুমি ভারত ছাড়ো।”
পরের বুলেট এসে লাগল তাঁর কপালে। প্রাণহীন দেহ পড়ে গেল মাটিতে। কিন্তু জাতীয় পতাকা তখনো হাতের মুঠোতে ধরা। সেই মহিয়সী নারীর নাম মাতঙ্গিনী হাজরা। যাঁর অন্য নাম গান্ধী বুড়ি।
মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা। সে কারণে তাঁর অন্য নাম ছিল গান্ধী বুড়ি। দেশ জুড়ে ১৯৩০ সালে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হলে তিনি সক্রিয়ভাবে যোগদান করেন
কাঁথি থেকে লবণ সত্যাগ্রহ শুরু হয়। তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রামের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে শুরু হয় পুলিশের অত্যাচার। মুক্তি পর আবার আন্দোলনে যোগদান আবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৪২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তমলুক থানা দখলের সময় পুলিশের গুলিতে তাঁর প্রাণ যায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেও দেশের পতাকাকে তিনি মাটিতে ফেলেননি।