সংক্ষিপ্ত

  • ২০১১-র পর  কেশপুরে বামদের আর উত্থান হয়নি 
  • দলীয় কার্যালয়ে পরিচর্যা করার মতো কোনও লোক নেই 
  • তাই দলীয় কার্যালয়টি  তৃণমূলের তুলে দিয়েছে সিপিএম
  • বিজেপি ব্যাখ্যা দিয়েছে' ক্ষমতা যার, কেশপুর তার'

২০১১ সালের পর থেকে কেশপুরে বাম সংগঠনের উত্থান আর হয়নি। পরিস্থিতি দেখে বাম কর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন বিভিন্ন দলে।২০১২ সালে পরিতক্ত বামেদের দলীয় কার্যালয়ে কাজকর্ম হয় তৃণমূলের। ২০১৯ এ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি মাথাচাড়া দিতেই দোতলা বিশাল বড় সিপিএমের লোকাল কমিটির কার্যালয়টি হয়ে যায় বিজেপির। এরপরে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে পুনরায় তৃণমূলের স্বমহিমায় উত্থান। এবার লিখিতভাবে কেশপুরে সেই কার্যালয়কেই তৃণমূলের হাতে তুলে দিলো সিপিআইএমের লোকাল কমিটির নেতারা। বিজেপির ব্যাখ্যা' ক্ষমতা যার, কেশপুর তার।'

আরও পড়ুন, 'পরিবেশ নিয়ে ছেলে খেলা করো না', পরিবেশ দিবসে নিজের হাতে বৃক্ষরোপণ করলেন ফিরহাদ 

এই চিত্রটা দেখা গিয়েছে কেশপুর ব্লক এর আনন্দপুর থানার অন্তর্গত তেঘরী এলাকায়।২০১০ সালে আনন্দপুর এর তেঘরী লোকাল কমিটির অফিস দোতলা পাকার নির্মিত হয়েছিল।  কিন্তু ২০১১ সালে বামেরা ক্ষমতাচ্যুত হয়। তবে তখনো কেশপুরে সিপিআইএমের বিধায়ক ছিলেন।তাহলেও পরিস্থিতির কারণে কোনো বাম কর্মী মাথা তুলে কাজ করার সাহস পাননি তেঘরী এলাকায়। ধীরে ধীরে অনেক বাম কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। বন্ধ পরিতক্ত হয়ে পড়ে থাকা ওই লোকাল কমিটির অফিসটি পরিচর্যা না করতে পারায় পুরনো বাম থেকে তৃণমূলে আসা কর্মীরাই তৃণমূলের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করেছিল ২০১২ সাল থেকে।  তারপর থেকে আর বামেদের সেভাবে ওই এলাকায় উত্থান ঘটে নি। অনেক বাম কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়ে বিজেপি হিসেবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাজ শুরু করেন। 

আরও পড়ুন, 'খুব লজ্জাজনক', কেশপুরে BJP কর্মীদের সামাজিক বয়কট ইস্য়ুতে ধিক্কার নির্মলা-স্বপনের 


২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে বিজেপির খানিকটা উত্থান হতেই তেঘরির পুরনো ওই বামেদের দলীয় কার্যালয় দখল করে নেয় পুরনো সিপিআইএমের বিজেপিতে আসা নেতাকর্মীরা। সমস্ত প্রতীক পতাকা সরিয়ে বিজেপির প্রতীক এঁকে বিজেপি কার্যালয় হিসাবে কাজকর্ম শুরু হয় সেখান থেকে। এর পর পুনরায় ২০২১ এর মে মাসে বিধানসভা নির্বাচনের ফলে তৃণমূলের স্বমহিমায় উত্থান ও বাম বিজেপির ভরাডুবি হতে পট পরিবর্তন হয়। ওই দলীয় কার্যালয়টি লিখিতভাবে ব্যবহারের জন্য তৃণমূলের নেতাদের হাতে তুলে দেন সিপিআইএমের স্থানীয় লোকাল কমিটির পুরনো নেতারা। তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি আনন্দ মোহন দলবেরা বলেন- আমাদের নিজস্ব দলীয় কার্যালয় ছোট পাশে একটি ছিল। সম্প্রতি ঝড়ে সেটি নষ্ট হয়ে যায়। তাই সিপিআইএমের এখানকার লোকাল কমিটির নেতারা নিজেরাই আমাদের জানায় তাদের পরিতক্ত কার্যালয়টি তৃণমূল ব্যবহার করুক পরিচর্যা করুক। সেইমতো লিখিত ভাবে তৃণমূলকে ব্যবহার করার জন্য নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে আমাদের তুলে দিয়েছে। বলা হয়েছে যতদিন তৃণমূল থাকবে ততদিন এই কার্যালয়টি তৃণমূলের হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

আরও পড়ুন, ২১-র জয়ের পর আজ প্রথম দলীয় বৈঠকে মমতা, গুরু দায়িত্ব পেতে চলেছেন কি তৃণমূলের যুবরাজ 

 

স্থানীয় সিপিআইএম লোকাল কমিটির সদস্য শীতল চন্দ্র পাল বলেন-" এতো বড় দলীয় কার্যালয়ে পরিচর্যা করার মতো কোনো লোক নেই। এলাকায় পুরনো দলের কর্মীরা কেউই আর সেভাবে কাজ করছেন না। তাই এই ভবনটি যাতে কোন কাজে লাগে সেই উদ্দেশ্যে তৃণমূলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে লিখিতভাবে।"দলীয় কার্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির পতাকা খুলে ফেলা হয়েছে। কার্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে আঁকা বিজেপির প্রতীক সাদা চুন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়কে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির জেলা নেতা শিবু পানিগ্রাহী। তিনি বলেন-" ক্ষমতা যার কেশপুর তার, এই রাজনীতি চলে কেশপুরে। তাই বামেদের পরে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতে তৃণমূল ব্যবহার করেছিল কার্যালয়টি। ২০১৯ এ লোকসভাতে বিজেপি ক্ষমতায় খানিকটাকটা উঠে আসতেই বিজেপি কে ওরা দিয়ে দিয়েছিল কার্যালয়টি। একুশের নির্বাচনে ফের তৃণমূলের উত্থান হয়েছে তাই তৃণমূলকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেশপুরের রাজনীতিটাই এমন।"