সংক্ষিপ্ত

সংযুক্ত মোর্চার ব্রিডেগ আশা দেখিয়েছিল

কিন্তু, ভোটে তার প্রতিফলন পড়ল না

রক্তক্ষরণ অব্যাহত বাম-কংগ্রেসের

দাগ কাটতে পারলেন না আব্বাসও

দিনটা ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। প্রখর রোদের তাপ অগ্রাহ্য করে ব্রিগেড ময়দানে মানুষ ভিড় দেখে তৃপ্তির ঢেকুড় তুলেছিলেন বাম-কংগ্রেস নেতারা। ওই দিনই প্রথমবার জোটের মঞ্চে দেখা গিয়েছিল তৃতীয় সঙ্গী আইএসএফ-এর নেতা পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীকে। যেভাবে তাঁকে কেন্দ্র করে মৌলবাদীদের হাত ধরেছে বাম-কংগ্রেস বলে প্রচার করেছিল বিজেপি ও তৃণমূল, তাতে এই জোট যে রাজ্য রাজনীতিতে ভাল প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে, তা স্পষ্ট হয়েছিলে। কার্যকালে, অর্থাৎ ভোটের ফলের বের হতে কিন্তু, দেখা গেল, একেবারেই দাগ কাটতে পারেনি এই তৃতীয় পক্ষ।

বেলা ২টো পর্যন্ত যে ফলাফলের ট্রেন্ড পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে মাত্র ২টিতে এগিয়ে রয়েছে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরা। বাদবাকি কোনও জায়গাতেই সেভাবে প্রভাব নেই মোর্চার প্রার্থীদের। বাম হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে অশোক ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্য়ায় - কেউই জেতার মতো জায়গায় নেই। এবারের নির্বাচনে ব্যাপক সাড়া ফেলা মিনাক্ষী মুখোপাধ্য়ায়, সৃজন ভট্টাচার্য, প্রতীক-উর রহমান, দীপ্সিতা ধর, সায়নদীপ মিত্র, শতরূপ ঘোষদের মতো তরুণ মুখদেরও কেউ জয় পাওয়ার মতো জায়গায় নেই।

ধরাশায়ী জোটসঙ্গী কংগ্রেসও। পরাজয়ের মুখে হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। যে মালদা মুর্শিদাবাদকে কংগ্রেসের গড় বলা হত, সেখানেও এবার হাত চিহ্ন প্রায় ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের ২০টি আসনের মধ্যে একটিতেও এগিয়ে নেই তারা। ৫-৬ রাউন্ডের গণনার পর ১৭টি আসনে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস, বাকি ৩টিতে এগিয়ে বিজেপি। কোথাও কোথাও তো কংগ্রেস রয়েছে ৩ নম্বরে। লাগোয়া মালদা জেলাতেও প্রথম চার রাউন্ড গণনার পর, ১২টি আসনের মধ্যে ৮টিতেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাকি ৩টিতে এগিয়ে বিজেপি। ইংরেজবাজারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দুই ফুলের।

বরং, দক্ষিণ ২৪ পরগণাতেই দুটি আসন পেতে পারে, বাম কংগ্রেসের তুলনায় রাজনীতির ময়দানে নেহাতই শিশু আইএসএফ। অশোকনগর ও ক্যানিং পূর্ব আসনে তৃণমূলের সঙ্গে তীব্র টক্কর চলছে।

এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় বাম-কংগ্রেস আলাদা ভাবে লড়েছিল। ধস নেমেছিল তাদের ভোটব্যাঙ্কে। পুরো লাভটাই তুলেছিল বিজেপি। সাড়ে ৬ শতাংশে নেমে এসেছিল বামেদের ভোট। এবার এখনও অবধি গণনায় দেখা যাচ্ছে বামেরা ৩ শতাংশের মতো ভোট পেয়েছে, কংগ্রেস আরও কম, আড়াই শতাংশের মতো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, লোকসভা নির্বাচনে যেমন বিজেপির পক্ষে গিয়েছিল বামেদের ভোট, বিধানসভা নির্বাচনে আবার বিজেপিকে আটকাতে বাম-কংগ্রেসের ভোট গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে।