সংক্ষিপ্ত

  • বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে মাত্র ৭৭টি আসন জিতেছে বিজেপি
  • এই ভরাডুবির জন্য রাজ্য নেতৃত্বকে দায়ি করলেন শোভন
  • বাংলা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভুল তথ্য দিয়েছেন রাজ্য নেতারা
  • এমনই অভিযোগ তুলেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়

২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে রাজ্যে ১৮টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। সেই ফলের নিরিখে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ২০০-র বেশি আসনে জয়ী হবে বলে আশাবাদী ছিল তারা। কিন্তু, সেখানে বিজেপির ঝুলিতে যায় মাত্র ৭৭টি আসন। আর রাজ্যে বিজেপির এই ভরাডুবির জন্য বঙ্গ বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দলের বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। আর এবার সেই একই সুর শোনা গেল দলের প্রাক্তন নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল। তার জন্যই বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে।

আরও পড়ুন- কলকাতায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু যুবকের, 'ইচ্ছাই নেই কাজের', জমা জল নিয়ে বিস্ফোরক দিলীপ

এ প্রসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, "কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারাবাহিক ভাবে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল। সেই ভুল তথ্যের প্রেক্ষিতেই রণনীতি নির্ধারণ করা হয়েছিল।" আর তার জন্যই রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে।  

বিধানসভা ভোটের সময় রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করতেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। শোভনের অভিযোগ,  ওই বৈঠকগুলিতে রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধিরা যে তথ্য পরিবেশন করতেন, তার সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির কোনও সম্পর্ক থাকত না। রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অমিত শাহকে ভুল খবর দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তাঁর। 

২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু, তাঁরা দলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একাধিক বার রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দিলীপ ঘোষ তাঁদের 'ডাল-ভাত' বলে কটাক্ষ করেছিলেন। পরে যদিও দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে সেই সংঘাত মেটে। এদিকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর প্রায় দেড় বছর কেটে গেলেও কোনও দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছিল না তাঁদের। তারপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বৈঠক করেন তাঁরা। শোভনকে কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষকের পদে বসায় বিজেপি। বৈশাখীকে সহ-আহ্বায়ক করা হয়। কিন্তু, সেখানেও সমস্যা মেটেনি। তারপর বিধানসভা ভোটে প্রার্থী তালিকা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। 

আরও পড়ুন- আশঙ্কাই সত্যি হল, গঙ্গায় ভাসছে উত্তরপ্রদেশ-বিহার থেকে আসা করোনা রোগীর পচাগলা দেহ

বিধানসভা ভোটে বেহালা-পূর্বের আসনে শোভনের নাম প্রস্তাব করা হয়নি। বরং বেহালা পশ্চিম আসনে লড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সেই প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। তারপর চলতি বছর মার্চে বিজেপি ছাড়েন শোভন ও বৈশাখী। বিজেপি ছাড়া প্রসঙ্গে শোভন বলেছিলেন, "আসন বদলানোয় আমি অপমানিত বোধ করেছিলাম। এমনকি, ভোটে হারা নেতাদেরও পুরনো আসন দেওয়া হয়েছিল। আমার ক্ষেত্রে কেন তা হল না?" বেহালা পূর্বে শোভনকে টিকিট না দেওয়ার ঘটনাকে আগেই রাজ্য বিজেপি নেতাদের চক্রান্ত ও বিশ্বাসঘাতকতা বলে চিহ্নিত করেছিলেন বৈশাখী।