সংক্ষিপ্ত
- ১০ বছর ধরে খারাপ অবস্থা গ্রামের রাস্তার
- অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে নারাজ
- হাসপাতালে যাওয়ার পথে মৃত্যু রোগীর
- রাস্তা সংস্কারের দাবিতে গাছের চারা পুঁতে বিক্ষোভ
১০ বছর ধরে খারাপ অবস্থা গ্রামের রাস্তার। তারওপর বর্ষায় আরও বেহাল দশা হয়ে পড়েছে রাস্তার। সেই খানাখন্দে ভরা বেহাল রাস্তা দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা গেলেন রোগী। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষীপুর গ্রামে। তাই রাস্তা সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান।
শুক্রবার রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তার মধ্যে ধানের চারা রোপণ করে বিক্ষোভে সরব হন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন অনেক হয়েছে নেতাদের প্রতিশ্রুতি,আর নয়। জানা যায় দীর্ঘ দশ বছর ধরে লক্ষীপুর গ্রামে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা কঙ্কালসার অবস্থায় পড়ে আছে। ২০১৭ সালের বন্যার পর আরো রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি নেতাদের বারবার বলেও কোনও কাজ হয়নি দীর্ঘ দশ বছর ধরে। প্রতিদিনই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে এই রাস্তায়। রাস্তা বেহাল হওয়ায় বর্ষার শুরুতেই চলাচল ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। এক হাঁটু কাদা ভেঙে পারাপার করতে হয় স্থানীয়দের। এরই প্রতিবাদে এদিন বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা।
সূত্রের খবর, রাস্তাটি তৈরি হওয়ার পর ১০ বছর ধরে কোনো সংস্কারই হয়নি। মূলত ১০ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে নিত্যদিন ওই বেহাল রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। নসরপুর, ভেলাবাড়ি, চন্ডীপাড়া ও গাররা-ভাটল প্রভৃতি গ্রাম সহ বিহারের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রয়েছে এই রাস্তার।
স্থানীয় বাসিন্দা টিটুন ঠোগদার জানান তার বাবা সোনাতন ঠোগদার প্রায় পনেরো দিন ধরে অসুখে ভুগছিলেন। বুধবার মালদায় এক বেসরকারি নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়ার জন্য এম্বুলেন্স ভাড়ার কথা বললে রাস্তা খারাপের জন্য আসতে অস্বীকার করে। অটোতে করে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই মারা যান তিনি বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা নকুল চন্দ্র ঠোগদার জানান ২০১৭ সালের বন্যার পর রাস্তাটি আরো খারাপ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসন কর্তাদের বহুবার জানানো হয়েছে। ভোটের আগে জনপ্রতিনিধিরা এই রাস্তা মেরামতের আশ্বাস দিলেও তাতে কোনও রকম কাজ হয়নি। বর্তমানে রাস্তার হাল এতটাই খারাপ যে, কোথাও হাঁটু সমান জল, কোথাও আবার বৃষ্টির জমা জল বইছে রাস্তার উপর দিয়ে। রাস্তার উপরে জল জমে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এমনকি এই গ্রামে কোনো অ্যাম্বুলেন্স আসতে চায় না। খারাপ রাস্তার জন্যই বুধবার এক রোগী রাস্তাতেই মারা যায়।
বাসিন্দাদের দাবি বর্ষা শুরু হতেই মশা-মাছির উপদ্রব বেড়েছে। আর স্থানীয় বাসিন্দারা এভাবেই বছরের পর বছর খানাখন্দে ভরা কর্দমাক্ত এই পথ দিয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পান অভিভাবকেরা।
মাঝরাতে চিকিৎসা করাতে কিংবা গর্ভবতী মায়েদের এই পথ দিয়ে হাসপাতলে পৌঁছতে কার্যত নাভিশ্বাস ওঠে। রাস্তা খারাপের কারণে ছোট চার চাকার গাড়িও এই পথে আসতে চায় না। এমনকি অনেক সময় রোগীদের মধ্য রাতে হাসপাতালে পৌঁছতে গিয়ে রাস্তাতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। জেলা পরিষদের সদস্য সন্তোষ চৌধুরী জানান রাস্তাটি সংস্কারের জন্য জেলা পরিষদকে জানানো হয়েছে। বর্ষার পর রাস্তাটি সংস্কার করার আশ্বাস দেন তিনি।