সংক্ষিপ্ত
- অবশেষে কিছুটা হলেও জট কাটল
- সমঝোতায় পৌঁছল বাম-কং এবং আইএসএফ
- যদিও এখনও ঝুলে রয়েছে উত্তরবঙ্গের সমঝোতা
- দক্ষিণবঙ্গে সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে বলেই দাবি
উত্তম দত্ত-হুগলিঃ- কোন কোনও মাস্টারমশায় রয়েছেন যাঁরা এক বেতে ১ থেকে ১০০০ পর্যন্ত গোনা একবারে শিখিয়ে দেবেন। কিন্তু এমনটা হয় না। একটু ধৈর্য ধরতে হয়। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে এভাবেই ঠাঠ্ঠার ছলে বক্তব্য রাখলেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন আসন সমঝোতা নিয়ে তাঁরা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছেন। আর খুব শিগগিরি সমস্ত বিষয়টা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। সেলিমের এই বক্তব্যের পরই অনেকটা পরিস্কার হয়ে গিয়েছে বাম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে পীরজাদা আব্বাস আলি সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের আসন সমঝোতার বিষয়টি। শনিবার সন্ধ্যায় হুগলির বৈদ্যবাটীতে স্থানীয় সিপিএম পার্টি অফিসে আলোচনায় বসেছিলেন সেলিম। তাঁর সঙ্গে সেখানে বৈঠকে যোগ দেন কংগ্রেসের পক্ষে প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং আব্দুল মান্না এবং আইএসএফ-এর পক্ষে নৌশাদ আলি সিদ্দিকি।
আরও পড়ুন, আজ কলকাতা সহ সারা দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, দেখুন ছবিতে-ছবিতে
আরও পড়ুন, মন্ত্রীর উপর হামলার পর ফের মুর্শিদাবাদে বিস্ফোরক উদ্ধার, মুখে কুলুপ প্রশাসনিক কর্তাদের
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন ২০২১-কে সামনে রেখে এবার জোট তৈরি করেছে বাম-কংগ্রেস এবং আইএসএফ। কিন্তু এই জোটে আসন সমঝোতা নিয়ে একটা সংশয় তৈরি হয়। কারণ, আইএসএফ এমনকিছু আসনের দাবি করে যেগুলি বহু দশক ধরে কংগ্রেসের গড় বলেই পরিচিত এবং এই মুহূর্তেও সেখানে কংগ্রেসের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বেশকিছু স্থানেও বামেদের কিছু আসন ছাড়া নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে একটা কিন্তু কিন্তু ছিল। কিন্তু, সূত্রের খবর শনিবারের বৈঠকের পর দক্ষিণবঙ্গে আসন সমঝোতা একেবারে চূড়ান্ত করে ফেলেছে এই জোট।
দক্ষিণবঙ্গে এমনকিছু আসন আইএসএফ-কে ছাড়তে রাজি হয়েছে কংগ্রেস যেখানে হাত চিহ্নের প্রভাব রয়েছে। এমনকী, একটি জেতা আসনও বামেদের ছাড়তে রাজি হয়েছে কংগ্রেস। তবে, এদিনের এই আসন সমঝোতা বৈঠকে সবচেয়ে বেশি নজর ছিল উত্তরবঙ্গের উপরে। তিন দলের প্রতিনিধিরাই জানান, সমঝোতার একটা লক্ষ্যমাত্রার পৌঁছানো গিয়েছে। বাকি বিষয়টাও খুব দ্রুত ঠিক করে নেওয়া হবে। উত্তরবঙ্গে কংগ্রেসের বহু এলাকা রয়েছে। এখানে এখনও হাত চিহ্ন যথেষ্ট প্রভাবশালী। এমনকী মালদার মতো জায়গায় আসনের দাবি করে বসেছিল আইএসএফ। কিন্তু অধীর চৌধুরীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন এটা সম্ভব নয়। বৈদ্যবাটীর এদিনের বৈঠকে আইএসএফ-ও আসন সমঝোতা নিয়ে সুর নরম করেছে। আইএসএফ-এর চেয়ারম্যান নৌশাদ আলি সিদ্দিকি জানান, প্রথমে তারা একটা সময় ২৯৪টি আসনের কথা বলেছিলেন, আবার একটা সময় ৯৭টি আসনের কথাও বলেছিলেন। কিন্তু এগুলো কোনওটাই চূড়ান্ত নয়। তারা ৪৫টির বেশি বা ৪৫টি-র নিচের আসনেও লড়তে রাজি বলে জানিয়েছেন নৌশাদ। এই মুহূর্তে তৃণমূল সরকারকে সরিয়ে একটা নতুন বাংলা গড়ে তোলাটাই যে এই জোটের লক্ষ্য তা বলেন নৌশাদ। এর আগে মহম্মদ সেলিমও একই কথা বলেন যে, তৃণমূলের অপসারণকে কীভাবে মুছে ফেলে নতুন এক বাংলা তৈরি করা যায় এবং বিজেপি-র বাংলা দখলের অভিসন্ধিকে আটকে দেওয়া যায়- সেদিকেই তাঁদের লক্ষ্য।
কংগ্রেসের পক্ষে প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান, 'এই প্রথম আমাদের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হল, যাতে কথা বলার সুযোগ পেলাম। ২৯৪টা আসন। একটা বৈঠকেই সব সমাধান হয়ে যায় না। আবার আমরা বসবো।' বামেদের পক্ষে মহম্মদ সেলিম বলেন, গোলি যব চলতি হ্যায় তব এক রাউন্ড, জব বোলি চলতা হ্যায় তো কয়ি রাউন্ড হোতা হ্যায়, তাই সবে তো কিছু কথা হয়েছে। আরও অনেক কথাই হবে এই নিয়ে। যদিও, ব্রিগেড সমাবেশে আইএসএফ যোগ দিচ্ছে কি না তা নিয়ে এদিন অবস্থান স্পষ্ট করেনি আইএসএফ। তাদের পক্ষে নৌশাদ আলি সিদ্দিকি জানিয়েছেন, তাঁরা আদৌ ব্রিগেড সমাবেশে থাকবেন কি না তা শিগগিরি জানিয়ে দেবেন।