সংক্ষিপ্ত

পুলিশ জানতে পেরেছে, শেখর ও শুভজিতের সঙ্গে নতুন করে সংসার শুরু করার জন্যই ঘর ছেড়েছিলেন অনন্যা ও রিয়া। ঠিক করেছিলেন প্রেমিককে বিয়ে করবেন। এরপর বালির বাড়ি ছাড়ার পর শেখর ও শুভজিতের সঙ্গে তাঁরা পাড়ি দিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদে।

প্রেমিকের (Lover) হাত ধরে শ্বশুরবাড়ি ছেড়েছিলেন বালির দুই গৃহবধূ (Wives)। আসানসোলে (Asansol) বুধবার পুলিশের (Police) হাতে ধরা পড়েন বালির কর্মকার পরিবারের দুই বউ ও তাঁদের দুই প্রেমিক। এদিকে পুলিশের হাতে ধরা পড়তেই যেন রাগে ফুঁসে ওঠেন ওই বাড়ির বড় বউ অনন্যা। তাঁদের বিষয় নিয়ে বেশি মাথা ঘামানোর জন্য ট্রেনের (Train) মধ্যেই পুলিশকে ধমক দেন তিনি। বৃহস্পতিবার আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন দুই বউ। অন্যদিকে গ্রেফতারের (Arrest) পর দুই রাজমিস্ত্রি শেখর রায় এবং শুভজিৎ দাসকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

বালির নিশ্চিন্দার বাসিন্দা কর্মকার পরিবারের বড় ছেলে পলাশের স্ত্রী অনন্যা আর ছোট ছেলে প্রভাতের স্ত্রী রিয়া। ঘটনাটা ঘটেছিল চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বর। শীতের পোশাক কিনতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রিয়া ও অনন্যা। তারপরই বাড়িতে কাজ করা দুই রাজমিস্ত্রি শেখর রায় এবং শুভজিৎ দাসের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এদিকে শ্বশুরবাড়ি ছাড়ার সময় নিজের সন্তান আয়ুষকেও সঙ্গে নিয়েছিলেন রিয়া। বুধবার আসানসোলে মুম্বই মেল থেকে তাঁদের আটক করে পুলিশ। অপহরণ সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে শেখর ও শুভজিতের বিরুদ্ধে। তাঁরা মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। আসানসোল থেকে গ্রেফতার করার পর তাঁদের সবাইকেই বুধবার নিয়ে আসা হয় বালিতে। 

পুলিশ জানতে পেরেছে, শেখর ও শুভজিতের সঙ্গে নতুন করে সংসার শুরু করার জন্যই ঘর ছেড়েছিলেন অনন্যা ও রিয়া। ঠিক করেছিলেন প্রেমিককে বিয়ে করবেন। এরপর বালির বাড়ি ছাড়ার পর শেখর ও শুভজিতের সঙ্গে তাঁরা পাড়ি দিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদে। সেখানেই রয়েছে শেখর ও শুভজিতের বাড়ি। এদিকে বিবাহিত মহিলাকে ফের বিয়ে করতে চায় ছেলে তা জানতে পেরে বিয়েতে সম্মতি দেয়নি শেখর ও শুভজিতের পরিবারের সদস্যরা। তারপর চারজন মিলে রাজ্য ছাড়েন। চলে গিয়েছিলেন মুম্বইতে। সেখানে এক পরিচিতের কাছে যান তাঁরা। এদিকে টাকাও শেষ হয়ে যাচ্ছিল। হাতে কোনও কাজও ছিল না। ফলে বেশিদিন তাঁরা মুম্বইতে কাটাতে পারেননি। অবশেষে ঠিক করেন রাজ্যে ফিরবেন। পুলিশের অনুমান, ততদিনে বাড়ির লোককে কোনওভাবে বিয়েতে রাজি করে ফেলেছিলেন শেখর ও শুভজিৎ। তাই ফিরছিলেন বাড়ি। কিন্তু, গন্তব্যে আর যাওয়া হল না। পাতা হল না নতুন সংসার।  

মুম্বই মেলে চড়ে রাজ্যে ফিরছিলেন চারজন। আসানসোলে ট্রেন থামতেই ট্রেনে পুলিশকে দেখে তাঁরা কিছুটা ঘাবড়ে যান। তারপরই তাঁদের আটক করে পুলিশ। কিন্তু, পুলিশ আটক করতেই রেগে যান অনন্যা। পুলিশের সামনে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা স্বীকার করে নিয়ে পাল্টা তিনি প্রশ্ন করেন, "আমি শেখরকে ভালোবাসি। আপনাদের কে মাথা ঘামাতে বলেছে? আমরা স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। কেউ আমাদের জোর করেনি।" তবে অনন্যা পুলিশের সামনে মুখ খুললেও রিয়া চুপ করে ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে বালিতে ফিরলেও দুই বধূকে এই মুহূর্তে শ্বশুরবাড়িতে তুলতে চায় না পরিবার। তাই আপাতত থানাতেই রয়েছেন তাঁরা। অবশ্য আয়ুষকে তুলে দেওয়া হয়েছে তার বাবার হাতে।