সংক্ষিপ্ত
একসঙ্গে বিজেপির (BJP) বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্য়াপ গ্রুপ ছাড়লেন বনগার (Bangaon) ৫ বিধায়ক। মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক (Matua Vote Bank) অটুট থাকলেও, সংগঠনে মতুয়াদের প্রতিনিধিত্ব না থাকার প্রতিবাদেই এই সিদ্ধান্ত বলে খবর।
এই রাজ্যে একসময় মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক (Matua Vote Bank) ছিল বামেদের (Left Front) দিকে। তারপর প্রায় এক দশক ধরে তাঁরা আশীর্বাদ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। কিন্তু, ২০১৯ সাল থেকেই দেখা গিয়েছিল পরিবর্তনের হাওয়া। মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কের জোরেই উত্তর ২৪ পরগণা (North 24 Parganas) এবং নদীয়ার (Nadia) মতুয়া অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে দুর্দান্ত ফল করেছিল বিজেপি (BJP)। যা গেরুয়া শিবিরের রাজ্যের সার্বিক ফলে প্রভাব ফেলেছিল। বিধানসভা ভোটে রাজ্যে কাঙ্খিত ফল না করতে পারলেও, বিজেপির মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক ছিল অটুট। কিন্তু, এবার কি বিজেপির সঙ্গ ছাড়তে চলেছে মতুয়ারা? একটা ফাটল যে ধরেছে, তা স্পষ্ট।
শুক্রবার বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটির নাম ঘোষিত হয়েছিল। তারপর দিনই রাজ্যজুড়ে সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। আর তারপরই বিজেপির বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার পাঁচ-পাঁচজন বিধায়ক - বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, গাইঘাটার বিধায়ক তথা ঠাকুর পরিবারের অন্যতম সদস্য সুব্রত ঠাকুর, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী এবং কল্যাণের বিধায়ক অম্বিকা রায়। পাঁচজনের কেউই, এখনই এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি, কিন্তু, তাঁদের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির রাজ্য কমিটি এবং নতুন জেলা সভাপতিদের মধ্যে মতুয়াদের প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। তার প্রতিবাদেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন তাঁরা।
শোনা যাচ্ছে ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা বলেছেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ বারবার বিজেপির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে। মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক এখনও মজবুত। বনগার সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, আবার, তিনি মতুয়া মহাসংঘের প্রধানও বটে। এখন দলীয় সংগঠনে যদি মতুয়াদের প্রতিনিধিত্বই না থাকে, বিধায়করা মতুয়াদের মুখ দেখাবেন কীভাবে? অশোক কীর্তনিয়া (Ashok Kirtania) সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর (Mukutmani Adhikari) দাবি, এটা সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙঘেরই (All India Matua Mahasanga) সিদ্ধান্ত।
শান্তনু ঠাকুর বলেছেন, এই বিষয়ে তিনি খোঁজ খবর নিয়ে তবেই মন্তব্য করবেন। অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) অবশ্য মতুয়া বিধায়কদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সরে যাওয়াকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁর দাবি, সংগঠনে রদবদল ঘটলে, ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকেই।
এর আগে, বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে (Sayantan Basu) রাজ্য কমিটি থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর একইরকম বিদ্রোহ দেখা গিয়েছে তাঁর দিক থেকেও। তিনিও বিজেপির বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সেই রাতেই সায়ন্তন বসুর বিধাননগরের বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) বেশ কয়েকজন নেতা। সায়ন্তনের পর মতুয়া সম্প্রদায়েও বিদ্রোহের সুর শোনা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে সাংগঠনিক রদবদলের পর আরও টালমাটাল অবস্থা রাজ্য বিজেপির।