সংক্ষিপ্ত
- লকডাউনের মরশুমে আমরা কি তবে ফিরে পেলাম আমাদের সেই হারিয়ে যাওয়া পাড়াকে?
- সোমবার সকালে, সোশাল সাইটে দেখা গেল এক ভিডিয়ো
- বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বাঙালি আবার এক হয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে গেয়ে উঠল রবীন্দ্রসঙ্গীত, "আগুনের পরশমণি"
- মনে পড়ে গেল শঙ্খ ঘোষকে-- আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি। এমনটাই তো ছিল আমাদের শহর। আমাদের কলকাতা। আমাদের পাড়া। আমাদের পড়়শি। আমাদের আশপাশ। আমাদের চারপাশ। লকডাউনের মরশুমে আমরা কি তবে ফিরে পেলাম আমাদের সেই হারিয়ে যাওয়া পাড়াকে? সোমবার সকালে, সোশাল সাইটে দেখা গেল এক ভিডিয়ো। লকডাউনের সময়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বাঙালি আবার এক হয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে গেয়ে উঠল রবীন্দ্রসঙ্গীত, "আগুনের পরশমণি"।
লকডাউনের মধ্য়ে বিপর্যস্ত ইতালির মানুষ মৃত্য়ুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বারান্দা থেকে বারান্দায় সঙ্গীতমুখর হয়ে উঠেছিল কিছুদিন আগে। আর সেই ভিডিয়ো দুনিয়াজুড়ে ভাইরাল হয়েছিল। কীভাবে বাঁচতে হয়, মড়কের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কীভাবে বেঁধে বেঁধে থাকতে হয়, তা দেখেছিল গোটা দুনিয়া।
যদিও কলকাতা আর তার আশপাশে একসময়ে বারো ঘর এক উঠোনের মতো করে বেঁধে বেঁধে থাকত গোটা পাড়া। পাড়া যেন ছিল পরিবারেরই বর্ধিত অংশ। নব্বইয়ের দশকে বিশ্বায়নের ঝোড়ো হাওয়ায় মধ্য়বিত্ত পাড়ার ওপর শকুনের মতো উড়তে থাকে রিয়েল এস্টেট। পঞ্চাশবছর ধরে একসাথে থাকা মানুষগুলো তল্পিতল্পা গুটিয়ে পাড়া ছাড়তে থাকে। পাড়া ছাড়তে বাধ্য় হয়। পুরনো বাড়ির জায়গায় তৈরি হয় জি-প্লাস-থ্রি-র নতুন সমীকরণ। পাড়া-কে-পাড়া উজাড় হয়ে যায়। পাড়ার ভূগোল ক্রমে ইতিহাসে পরিণত হয়। চেনা বাড়ি চেনা পাড়া ছেড়ে অনিশ্চিতের উদ্দেশে রওনা দেয় কলকাতার পাড়াকাতর মানুষ।
লকডাউনের মরশুমে তবে কি আমাদের সেই পাড়ার কি পুনর্জন্ম ঘটল?