সংক্ষিপ্ত
- বন্ধুর স্ত্রী -এর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক
- তার জেরেই পিটিয়ে খুন বন্ধুকে
- বনগাঁ মহকুমার গাইঘাটা থানা এলাকার ঘটনা
- ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গাইঘাটা থানার পুলিশ
শুভদীপ পুততুন্ডু, বারাসাত: বন্ধুর স্ত্রীকে পেতে বন্ধুকে খুন করল এক ব্যক্তি। বন্ধুকে খুন করে ঘরে দেহ রেখে সেই রেখেই রাত্রিযাপন করল বন্ধুর স্ত্রী -এর সঙ্গে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমার গাইঘাটা থানা এলাকায়। অভিযুক্ত সপ্না সরকার ও রামকৃষ্ণ সরকারের একটি পাঁচ বছেরের ছেলেও আছে। সূত্রের খবর, অভিযুক্ত সুজিত দাসের সঙ্গে মিস কলের মাধ্যমে রামকৃষ্ণ সরকারের স্ত্রী সপ্না সরকারের পরিচয় হয়। পরে সেই থেকেই তাঁদের মধ্যে প্রনয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় আট মাস ধরে চলছিল তাদের সম্পর্ক। আর সেই সম্পর্কেরই পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় সপ্না সরকারের স্বামী রামকৃষ্ণ সরকার। দু'জনের সম্পর্কের কথা জেনেও যান রামকৃষ্ণ বাবু। সেই নিয়ে বেশ ঝামেলাও হয় তাঁদের মধ্যে। বচসার সময় স্ত্রী সপ্নাকে রামকৃষ্ণ সরকার মারধর করেন বলে অভিযোগ। আর তার প্রতিশোধ নিতেই রামকৃষ্ণ বাবুকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে সুজিত ও স্বপ্না।
আরও পড়ুন: বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জের, আবারও স্বামীকে খুনের অভিযোগ স্ত্রী -এর বিরুদ্ধে
পরিকল্পনা মাফিক সোমবার দশমীর দিন সুজিত তার নিজের বাড়িতে দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার নেমন্তন্ন করে রামকৃষ্ণ এবং স্বপ্নাকে। এর পরে সন্ধ্যাবেলায় রামকৃষ্ণ এবং সুজিত দু'জনে মিলে মদ্যপান করে এলাকায় ঠাকুর দেখতে বেরোয়। ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে দু'জনের মধ্যে ফের অশান্তি বাঁধে স্বপ্নাকে নিয়ে। মদ্যপ অবস্থাযতেই সুজিত এবং রামকৃষ্ণের মধ্যে বেশ কয়েকবার কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। কোনওরকমে স্বপ্নাই মেটায় সেই ঝামেলা। এরপর বাড়ি ফেরার সময় স্বপ্না ও রামকৃষ্ণকে অনুসরণ করতে থাকে সুজিত। বাড়িতে ঢোকার মুখে পিছন দিক থেকে সুজিত একটি চেলাকাঠ এর কাঠের টুকরো দিয়ে রামকৃষ্ণ বাবুর মাথায় সজোরে আঘাত করে। মাথায় আঘাত লেগে রামকৃষ্ণ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ আর্তনাদ করতে করতে রামকৃষ্ণ জ্ঞান হারায়। সপ্নার পরামর্শে রামকৃষ্ণ বাবুর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ফের আবার ওই চেলা কাঠ দিয়ে সুজিত বেশ কয়েকবার রামকৃষ্ণের মাথায় আঘাত করে। মৃত্যু হবার পর সুজিত রামকৃষ্ণ বাবুর দেহটি নিয়ে গিয়ে একটি বাঁশ বাগানে লুকিয়ে রেখে দেয়। পরে দু'জনে মিলে মৃতদেহটি সুজিতের ঘরের খাটের নীচে মাটির নীচে চাপা দিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: পরকীয়ায় বাঁধা শাশুড়ি, খুন করলো বৌমা ও তার পুরোহিত প্রেমিক
পরে এই ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে গাইঘাটা থানার পুলিশকে ফোনে ঘটনার কথা জানায়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনা তদন্তে নামে। অবস্থা বেগতিক দেখে গতকাল বিকেলে বাংলাদেশে পালিয়ে যাবার পরিকল্পনা করেছিল সুজিত এবং স্বপ্না। সেই মত তাঁরা বাড়ি থেকেও বের হয়। মোবাইল ফোনের টাওয়ার ধরে গাইঘাটার বন্যা এলাকা থেকে গাইঘাটা থানার পুলিশ দু'জনকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়ে বনগাঁ আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে খুনে ব্যবহৃত চেলাকাঠের টুকরো, একটি শাবল, একটি কোদাল ও রক্তমাখা নাইটি ও গেঞ্জি। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখছে গাইঘাটা থানার পুলিশ।