সংক্ষিপ্ত
- বিয়ের আসরে গাছের গায়ে রাখি বন্ধন
- রায়গঞ্জের নবদম্পতির অভিনব উদ্যোগ
- পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দিতেই প্রয়াস
- প্লাস্টিকের বদলে বিয়ে আসরে মাটির, থালা- গ্লাসের ব্যবহার
বিয়ের আসরে অভিনবত্ব আনতে অনেকেই বিভিন্ন রকম চমক দিয়ে থাকেন। এবার মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির মেলবন্ধনের বার্তা দিতে বিবাহ বাসরে গাছের গায়ে রাখী বাঁধার অভিনব উদ্যোগ নিলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপক তাপস পাল। বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে এমন উদ্যোগ দেখে বাস্তবিকই অবাক হয়েছেন রায়গঞ্জের পুরপ্রধান থেকে শুরু করে অন্যান্য অতিথিরা। পরিবেশ সংরক্ষণের বার্তা দিতে তাপসবাবুর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রত্যেকেই। নিজের বিয়েতেই এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাপসবাবু।
বৌভাতের আসরে পরিবেশের সঙ্গে মানুষের মেলবন্ধন ঘটাতে পঞ্চভূতের ক্ষিতি, অপ, তেজ, মুরুত ও ব্যোম এই পাঁচটি নামে গাছ রেখে তাদের গায়ে রাখি পরিয়ে এক অনন্য নজির গড়লেন তিনি। নিজের বিয়েতে এই নবদম্পতির স্লোগান ছিল, একটি বিবাহ একটি বৃক্ষরোপণ। শুধু তাই নয়, বর্তমান প্রজন্মকে পরিবেশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করতে ইকো ফ্রেন্ডলি সেল্ফির আয়োজনও করা হয়েছিল প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে। বিবাহ বাসরে রাখা গাছেদের সঙ্গে সেল্ফি তুলে তা সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার বার্তাও দেন নবদম্পতি।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ রাখী বন্ধনের মাধ্যমে বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব বোধের কথা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। তাপসবাবু তাঁর বিয়ের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে পরিবেশের সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার বার্তা দিতে চেয়েছেন গাছেদের রাখি পরানোর মাধ্যমে। মানুষ আর প্রকৃতির মধ্যে বন্ধন যাতে কোনওমতেই আলগা না নয়, সেজন্যই তাঁর এই অভিনব প্রয়াস। পরিবেশ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে তাঁর বিবাহ অনুষ্ঠানে আসা অতিথি অভ্যাগত এভাবেই আপ্যায়ণ করলেন পাল দম্পতি। তাঁর আবেদন উপহার বা লৌকিকতা নয়, বিবাহ অনুষ্ঠানে পঞ্চভূতের নামে নাম রাখা পাঁচটি গাছে রাখf পjfয়ে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করা।
শুধু পরিবেশ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করাই নয়, প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার বর্জন করতে প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে অতিথিদের প্ল্যাস্টিকের থালা গ্লাসের বদলে মাটির থালা গ্লাসে খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করেন তাপস বাবু। বিয়ের অনুষ্ঠানে তাপসবাবু বার্তা দিয়েছেন. 'একটি বিবাহ একটি বৃক্ষরোপণ।'
এমনই এক অভিনব বিবাহ অনুষ্ঠানে এসে তিনি গর্বিত বোধ করছেন বলে জানান রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, 'নিজের বিয়ের দিনে অন্যান্যরা বিভিন্ন রকম আনন্দ আর উল্লাস নিয়ে থাকেন। কিন্তু তাপসবাবু যেভাবে প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলেছেন, তার জন্য নবদম্পতিকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।' তিনি এও বলেন, অধ্যাপক তাপস পাল পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করবেন, সেগুলি বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করবে রায়গঞ্জ পুরসভা।