সংক্ষিপ্ত
ক্লাবের তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি এলাকায় বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য এই ধরনের উস্কানিমূলক প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। এই পূজা কোন ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে করা হয়নি।
মমতা রূপী দুর্গাপূজা(Durga Puja) ঘিরে বিতর্ক (Controversy) যেন পিছু ছাড়তে চাইছে না মালদহের(Maldaha) হরিশ্চন্দ্রপুরে। দুর্গা প্রতিমা প্যান্ডেলের কোনায় রেখে দশভূজা রূপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) পুজো করাতে হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার পিপলা রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের এ বছর দুর্গাপূজায় থিম হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দশভূজা মূর্তি ও তার সঙ্গে সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরো নানা মূর্তিকে তুলে ধরা হয় পূজামণ্ডপে। তৈরি করা হয়েছিল বিশ্ব বাংলা লোগো। ফুটবল আকৃতির মণ্ডপে দশভূজা মমতা ও হুইলচেয়ারে মমতা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন জন-কল্যাণ মূলক প্রকল্পের নাম দশভূজা মমতার হাতে দেওয়া হয়েছিল।
শুধু তাই নয় মূল মন্ডপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধান ভাবে বসিয়ে কোনায় ছোট্ট সিংহ বাহিনী প্রতিমা তৈরি করে পুজো করেছিল। ছিল না লক্ষ্মী গণেশ কার্তিক সরস্বতী মূর্তিও। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে এলাকা জুড়ে বিতর্কের ঝড়। পুজো শেষ হয়ে গেলেও, নিন্দায় সরব হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরের পুরোহিত সমাজ। আগামী কয়েক বছরের জন্য পুজোকে বেআইনি ঘোষণা করে বন্ধ করার দাবি তুলেছেন এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার দাবি তুলেছেন তারা।
যদিও বিগত কয়েক দিন সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত এই পূজামণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এই পুজো নিয়ে এলাকার তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের উন্মাদনা ছিল চরম। তৃণমূল কর্মী সমর্থক পরিচালিত রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের সম্পাদক নিজেই তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান। এই পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। কিন্তু এই দূর্গা পূজার আগে শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়।
যদিও ক্লাবের তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি এলাকায় বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য এই ধরনের উস্কানিমূলক প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। এই পূজা কোন ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে করা হয়নি। দুর্গাপ্রতিমা সঙ্গে সঙ্গে কার্তিক গণেশ লক্ষ্মী সরস্বতী পুজো করা হয়েছে। রাজ্যের জনকল্যাণ মূলক প্রকল্প গুলো তুলে ধরতেই আমরা এই থিমের আয়োজন করেছিলাম। এর বেশি কিছু নয়।
রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা বুলবুল খান বলেন, "বিজেপি এই পুজোর ভালো দিক দেখছে না। আমরা যে সকলে মিলে পুজো করে সম্প্রীতির বার্তা দিচ্ছি সেটা ওদের চোখে পড়ছে না। কারণ ওরা বিভাজনের রাজনীতি করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক প্রকল্প যা দিয়ে মানুষের উপকার হয় তা থিমের মাধ্যমে তুলে ধরেছি। পুজো বন্ধ করে দেওয়া, সাম্প্রদায়িকতা এটাই বিজেপির রাজনীতি।"
রাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণ মহা সংস্থার পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি গৌতম চক্রবর্তী বলেন, " আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। মা দুর্গার মূর্তিকে এক কোনে রেখে পুজো করছে, কিন্তু এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা দুর্গা রূপে দেখানো হচ্ছে। যা একদম ঠিক নয়। এটা ধর্ম এবং সংস্কৃতির অপমান। "
বিজেপি নেতা রূপেশ আগরওয়াল তীব্র আক্রমণ করেন এই নিয়ে। তিনি বলেন, পুজোর মধ্যে রাজনীতির রং লেগেছে। গণেশ, কার্তিক, লক্ষী, সরস্বতী ছাড়াই পুজো হয়ে গেল। মা দুর্গার জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পুজো আমাদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছে। তাই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো যাতে এই পুজো কয়েক বছরের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।"