সংক্ষিপ্ত
- বীরভূমের মুরারইয়ের ঘটনা
- দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা
- ঘটনায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
দুর্নীতি ও দল বিরোধী কাজের অভিযোগে বহিস্কার করা হল বীরভূমের এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে। আর এই ঘটনায় আবারও জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি প্রকাশ্যে চলে এলো। বহিষ্কৃত নেতা মুরারই ২ নম্বর ব্লকের মিত্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বাবুল আখতার ওরফে আপেল শেখ। শনিবার বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ১নম্বর ব্লকের মল্লারপুর শিববাড়ি মাঠের জনসভায় বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন অনুব্রত মণ্ডল।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেলের দিকে মিত্রপুর অঞ্চলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করতে যান নয়াগ্রামের এক গৃহবধূ। ওই গৃহবধূর অভিযোগ তাঁকে প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিতেন অঞ্চল সভাপতি বাসারুজ্জামান মোল্লা ওরফে বকুল। তাতে রাজি নাহওয়ায় স্বাথ্যসাথী কার্ডের লাইন থেকে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। ওই গৃহবধূর স্বামী প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকেও মাটিতে ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন গৃহবধূ। তাঁকে
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্ত গৃহবধূ অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে পাইকর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এই ঘটনায় ফের একবার তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযুক্ত অঞ্চল সভাপতি বাসারুজ্জামানের দাবি, নয়াগ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য আপেল শেখের প্ররোচনাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ওই দম্পতি। আপেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শুক্রবার পঞ্চায়েতের ১৯ জন সদস্য এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৩ জন এবং ২৩ জন বুথ সভাপতি পদত্যাগ করেছিলেন।
শনিবার বিকেলে মল্লারপুরের জনসভা থেকে ওই সদস্যকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন অনুব্রত। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অনুব্রত বলেন, 'পঞ্চায়েতসদস্য হয়ে কোনও রকম দুর্নীতি করা যাবে না। মানুষের সেবা করার জন্য তিনি পঞ্চায়েত সদস্য হয়েছেন। কিন্তু তিনি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাই তাঁকে বহিস্কার করা হলো। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।'
যদিও দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত আপেল শেখ। তিনি বলেন, “এক গৃহবধূ ও তাঁর স্বামীকে মারধর করেছে অঞ্চল সভাপতি। ঘটনাচক্রে ওই দম্পতি আমার গ্রামের বাসিন্দা। তাই ওরা ভাবছে আমি ওদের দিয়ে থানায় অভিযোগ করিয়েছি।' বহিষ্কৃত নেতার পাল্টা অভিযোগ, 'অভিযুক্ত অঞ্চল সভাপতি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পদে রয়েছেন। আবার তাঁর স্ত্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। একই সঙ্গে তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসেবে কাজ করেন। বাসারুজ্জামানের শ্বশুর মশাই ব্লক সভাপতি। এছাড়াও একাধিক পদে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তিনি।' আপেলের অভিযোগ, বাসারুজ্জামান এক সময়ে গাড়ি চালিয়ে রোজগার করতেন। এখন তাঁর সম্পত্তি দেখলেই কে দুর্নীতিগ্রস্ত তা প্রমাণ হয়ে যাবে বলে কটাক্ষ করেছেন ওই তৃণমূল নেতা। আপেল জানান. 'আমি এখনও হাতে বহিষ্কারের চিঠি পাইনি। চিঠি হাতে পেলে তখন পদক্ষেপ করব।'
এ দিকে এদিনের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করেন অনুব্রত। তিনি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। কী করতে এসেছেন জানি না। পশ্চিমবঙ্গের অনেক প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আপনি দেখে যান একটি ব্লকের জনসভায় কত লোক জমায়েত হয়েছে। দেখলে আপনার চাঁদি উড়ে যাবে।'