সংক্ষিপ্ত
ইছাপুরের মেধাবী ছাত্র ছিল শুভজিত চট্টোপাধ্য়ায়। ১৩ মাস পর শুভজিত-র মৃত্যু করোনায় হয়নি জানতে পারল পরিবার।
১৩ মাস পর শুভজিত-র মৃত্যু করোনায় হয়নি জানতে পারল পরিবার। সালটা ২০২০, জুলাই মাস। কোভিড বর্ষের প্রথম অধ্যায়। কলকাতা মেডিক্যালের চত্ত্বরে শ্বাসকষ্টের যন্ত্রণায় ছটফট করছে ছেলে। ৪ টে কোভিড হাসপাতাল ঘোরার পর সেদিন কলকাতা মেডিক্যালের সামনে সন্তান ভর্তি করাতে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিল মা। অবশেষে বেড মিলেছিল। কিন্তু সে যে অনেক দেরিতে। ততক্ষণ সূর্যের শেষ আলো টুকুও শুষে নিয়েছে নিকষ অন্ধকার। বুকের সব ভালোবাসা দিয়ে উজার করে বড় করে তোলা সন্তানকে যে আর দেখতে পাবে না , তা কখনও ভাবেনি ইছাপুরের চট্টোপাধ্য়ায় পরিবার।
আরও পড়ুন, Crime: ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে দেবাঞ্জন দেবের বাড়িতে হানা দিল ED
২০২০ এর ১০ জুলাই, কলকাতা মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার আগে ওই ৪ টে হাসপাতালও ঘুরতে হত না। যদি না কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসত। বেলঘড়িয়ার একটি নার্সিংহোম সেদিন সাদা কাগজে শুভজিত-র কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ বলে লিখে দিয়েছিল। অথচ দীর্ঘ ১৩ মাস পর শুভজিৎ-র মৃত্যু করোনায় হয়নি জানতে পারল পরিবার। সোমবার কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে বেলঘরিয়া থানা। একবছর পর ছেলের সেই কোভিড টেস্টের রিপোর্ট হাতে নিয়ে এদিন কাঁদতে কাঁদতে শ্রাবণী চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, এই রাজ্য়ের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অমানবনিকতার বলি হয়েছে তাঁদের একমাত্র সন্তান। চোখের সামনে নিজের একমাত্র সন্তানের মৃত্যু দেখতে হয়েছে, কাকে বোঝাবো এই যন্ত্রণা। আমি জানতাম আমার ছেলের কোভিড হয়নি, অথচ করোনা পজিটিভ বলে কোনও চিকিৎসাও হয়নি। ছেলেকে ভর্তি করাতে আমাকে ৪ হাসপাতাল ঘুরতে হল। একটা সাদা কাগজের রিপোর্টকে ভিত্তি করে আমার ছেলেটা বিনা চিকিৎসায় মারা গেল। এইভাবে যেন আর কোনও মায়ের কোল খালি না হয়।'
আরও পড়ুন, নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা, বিশ্বভারতীকাণ্ডে এবার প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ উপাচার্য
রাত পৌনে দশটার সময় হাসপাতালের মাধ্যমে শুভজিতের মৃত্য়ু খবর পায় চট্টোপাধ্যায় পরিবার। শুভজিতের মামা-বাবা সেদিন ছেলের মৃতদেহের ময়না তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যর কাছে যান। হাইকোর্টে মামলা করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে কলকাতা পুলিশ মর্গে পাঁচদিন পর ছয় ফুট দূর থেকে ছেলের মুখটা দেখতে পান মা-বাবা। মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়। সেই রিপোর্টের কোথাও কোভিড ইস্যু লেখা নেই। পাশাপাশি, বেলঘড়িয়ার নার্সিংহোমটা সেবার ভূল কোভিড রিপোর্ট দিয়েছিল, সেখানে ভুয়ো নার্স-চিকিৎসক ধরা পড়ায় প্রশাসনের তরফে বন্ধ করে দেওয়া হয়েচে। কিন্তু শুভজিতের মা প্রশ্ন তুলেছেন, ২০২৭ সালে লাইসেন্স শেষ হয়ে যাবার পরেও কী করে সেই নার্সিংহোম বহাল তবিয়তে চলল।
আরও পড়ুন, COVID 19: সংক্রমণে শীর্ষে কলকাতা, ফের মৃত্যু নিয়ে আশঙ্কা বাড়াল উত্তর ২৪ পরগণা
অপরদিকে, ইছাপুরের মেধাবী ছাত্র ছিল শুভজিত চট্টোপাধ্য়ায়। ২০২০ তে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছিল সে। তাঁর মৃত্যু পরেই রেজাল্ট বেরিয়েছে। শুভজিত স্টার মাকর্স নিয়ে পাশ করেছে। অথচ সে জেনে যেতে পারল না। ২০২১ এও হয়তো শুভঙ্কর হেঁটে চলে বেড়াতো। ভাল কলেজে ভর্তি হত। আর সকলের মতোই ভ্য়াকসিন নিত। নতুন জামা কাপড় পরে হই হই করে পরিবারের সঙ্গে-বন্ধুদের সঙ্গে দুর্গা পুজো দেখতো। কিন্তু সেসব কিছুই আর হল না। একটা ভূল রিপোর্ট শেষ করে দিল চট্টোপাধ্যায় পরিবারকে।
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও পড়ুন, রাজ্য়ের সর্বনিম্ন সংক্রমণ এই জেলায়, বৃষ্টিতে হারাতেই পারেন পুরুলিয়ার পাহাড়ে
আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও পড়ুন, বনগাঁ লোকাল নয়, জাপানে ঠেলা মেরে ট্রেনে তোলে প্রোফেশনাল পুশার, রইল পৃথিবীর আজব কাজের হদিস