সংক্ষিপ্ত
মঙ্গলবার একটু বেলা গড়াতেই জনা পঞ্চাশেক গ্রামবাসী কাঁধে কোদাল এবং মাটি কাটার পাত্র নিয়ে মাঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে হাজির হয়। তারা অভিযোগ করতে থাকে যে তারা কোনওভাবেই ১০০ দিনের কাজ তাদের দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী, যারা কিছুদিন ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ করেছেন তাদের অর্থও আটকে রাখা হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করে।
১০০ দিনের কাজ নিয়ে ক্ষোভ ছড়াল সাধারণ মানুষের মনে। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে যে খোদ পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝোলায় সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভকারীদের আরও অভিযোগ অর্থ নিয়ে জব কার্ড বিক্রি করে দিচ্ছেন বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান। কোনও জব কার্ড বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়, আবার কোনওটা ১০০০ টাকাতে- এমনই অভিযোগ করেছেন এই বিক্ষোভকারী। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে পড়ে যে পুলিশ ছুটে আসে। এই ঘটনা পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির মাঠা গ্রাম পঞ্চায়েতে।
মঙ্গলবার একটু বেলা গড়াতেই জনা পঞ্চাশেক গ্রামবাসী কাঁধে কোদাল এবং মাটি কাটার পাত্র নিয়ে মাঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে হাজির হয়। তারা অভিযোগ করতে থাকে যে তারা কোনওভাবেই ১০০ দিনের কাজ তাদের দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী, যারা কিছুদিন ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ করেছেন তাদের অর্থও আটকে রাখা হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করে। আবার কিছু বিক্ষোভকারী জানান, অর্থ ঢুকলেও তার পরিমাণ কম। ১০০ দিনের কাজে রোজকার যে মজুরি সরকার নির্ধারণ .করে দিয়েছে সেই অর্থ দেওয়া হচ্ছে না মাঠা গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে। এমন অভিযোগেও অনেকে সরব হন।
কিছু বিক্ষোভকারী কাঁধে কোদাল ও মাটি কাটার পাত্র কাঁধে করে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে পরে। বিক্ষোভকারীরা পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে গিয়ে প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে চান। অভিযোগ, এক্ষেত্রেও পঞ্চায়েত অফিসের লোকজন বিক্ষোভকারীদের ভিতরে ঢুকতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। এতে শুরু হয় বাত-বিতণ্ডা। এরপরই বিজেপি পরিচালিত মাঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের মূল সদরের গ্রিলের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন ছিলেন ভাদরি কালিন্দী। তিনি অভিযোগ করেন, দিনের পর দিন কাজের আশ্বাস পেলেও কাজ দেওয়া হচ্ছে না। ১০০ দিনের কাজ তাদের দেওয়া হচ্ছে না। তাই কাজ নিয়ে তবেই বাড়ি ফিরবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন ভাদরি। তাপস কালিন্দী নামে একজন বিক্ষোভকারী অভিযোগ করেন যে, বিজেপি পরিচালিত এই পঞ্চায়েতে দুর্নীতিগ্রস্ত। ১০০ দিনের কাজ দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করে তাপস। তার আরও অভিযোগ যে, অর্থ নিয়ে জব কার্ড বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে একই পরিবারের একাধিক জব কার্ড। ৫০০ থেকে ১০০০ টাকাতে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে জব কার্ড। এই অভিযোগ করে তাপস। এমনকী, যারা ১০০ দিনের কাজে যে কয় দিন কাজ করেছেন সেই পারিশ্রমিকের পুরোটা মিলছে না বলেও অভিযোগ করেছে সে।
রথু মাহাতো নামে আর এক বিক্ষোভকারীর অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজ পেতে গেলে বিডিও অফিসের রিসিট আনতে হচ্ছে। ব্লক অফিস থেকে সেই রিসিট আনলেও তা নিয়ে নিচ্ছে মাঠা গ্রাম পঞ্চায়েত এবং তা ফেরত দিচ্ছে না বলেও তার অভিযোগ। আবার কিছু বিক্ষোভকারীর অভিযোগ, বিডিও অফিস থেকে রিসিট আনলেও কাজ দেওয়া হচ্ছে না। পুরো বিষয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ এক্কেবারে নসাৎ করেছেন মাঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান মালতি হাঁসদা। তিনি পাল্টা গোটা বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে একটা সমস্যা চলছে। কারণ জব কার্ড নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। এই সমস্য়া ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে মিটে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মালতি। জব কার্ডে অর্থ নেওয়ার বিষয়েও তিনি সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দেন।