সংক্ষিপ্ত

  • রবিবার সকাল, সবেমাত্র শুরু হয়েছে জনতার কারফিউ
  • আচমকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে গেল এক লরি
  • আশপাশের গুটিকয়েক  লোক ছুটে এল, দেখল চালক বসে আছেন, কোনও সাড়াশব্দ নেই
  • ডাকা হল পুলিশকে, পুলিশ ডাকল অ্য়াম্বুলেন্স, তারপর দেখা গেল অন্য় ব্য়াপার

রবিবার সকাল জনতার কার্ফু সবে শুরু হয়েছে শহরের প্রাণকেন্দ্রে আচমকা থেমে গেল এক লরি ব্য়স তারপর থেমেই থাকল নট নড়ন চড়ন রাস্তায় হাতেগোনা যে দু-একজন দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁরা এগিয়ে গেলেন কৌতূহল নিয়ে গিয়ে দেখলেন, ওই লরির চালক স্টিয়ারিংয়ের সামনে নিজের সিটে বসে রয়েছেন কোনও সাড়াশব্দ নেই, মাথাটা শুধু ঝুঁকে রয়েছে

শুরু হল কিঞ্চিৎ হইচই আরও দু-একজন লোক এসে জড়ো হলেন সমবেত স্বরে ডাকা হল চালককে কোনও সাড়া মিলল না খবর গেল থানায় পুলিশ এলচালকের চোখেমুখে জল ছেটানো হল গা ধরে নাড়া পর্যন্ত দেওয়া হল কিন্তু কোথায় কী? টু শব্দটি পর্যন্ত নেইপাশ থেকে কেউ বলে উঠল, নির্ঘাত হার্ট অ্য়াটাক করে মারা গিয়েছে নিশ্চয়কেউ আবার বলল, এখনও প্রাণ আছে বোধহয়হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হোক অবিলম্বে

সেই মতো শুরু হল ব্য়বস্থা হাঁকডাক থেকে শুরু করে জলের-পর-জল ছেটানোয় যখন কোনও  ফল মিলল না, তখন ডাকা হল অ্য়াম্বুলেন্স খানিকক্ষণের মধ্য়েই চলে এল অ্য়াম্বুলেন্স তারপর? হুটারের শব্দে আচমকা নড়েচড়ে বসলেন সেই চালক সবাই  তো তাজ্জব একেবারে বোকা বনে যাওয়ার মতো ব্য়াপার বোঝা গেল, বাবু মদ খেয়ে আর নিজের হুঁশ সামলাতে পারেননি, তাই মাঝ রাস্তায় গাড়ির চাকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন প্রায় আধঘণ্টা পরে হুঁশ ফেরে চালকের আর সেইসঙ্গে স্বস্তি ফেরে রায়গঞ্জের বিবিডি মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন আর পুলিশকর্মীদের জানা যায় ওই চালকের নাম পিন্টু দে সরকার, তিনি উকিল পাড়ার বাসিন্দা

কিন্তু, এতক্ষণ ধরে এতজনকে চাপে রেখেছেন যিনি, যাঁর জন্য় অ্য়াম্বুলেন্স পর্যন্ত ডাকা হয়েছে, তাঁকে কি আর এমনি এমনি ছেড়ে দেওয়া যায়? তাই ওই অ্য়াম্বুলেন্সে করেই লরির চালককে নিয়ে যাওয়া রায়গঞ্জ গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হল আর লরিটিকে নিয়ে যাওয়া হল রায়গঞ্জ থানায় এবং সেই সঙ্গে রবিবাসরীয় সকালের সংক্ষিপ্ত পথনাটিকা সমাপ্ত হল