সংক্ষিপ্ত

  • লকডাউনের জেরে বিপন্ন মালদার আমসত্ত্ব শিল্প
  • আমসত্ত্ব শিল্পের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার
  • এই শিল্পকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছেন অনেকেই
  • এখন বহু মহিলা এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন

অনিয়মিত আবহাওয়া, প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা আর রাজ্যে লকডাউন পরিস্থিতিতে বিপন্ন মালদার ঐতিহ্যবাহী আমসত্ত্ব শিল্প। এই পরিস্থিতিতে আমসত্ত্ব শিল্পের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। সরকারের এই উদ্যোগে খুশি কারিগররাও।

আরও পড়ুন- রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর, জামাইষষ্ঠীতে গোটা একদিন ছুটির ঘোষণা মমতার

এক সময় মালদার আমের খ্যাতি ছিল গোটা বিশ্বে। আর তার এই খ্যাতি অর্জনে যোগ্য ভূমিকা পালন করত মালদার তৈরি সুমিষ্ট আমসত্ত্ব। কিন্তু, বর্তমানে অনিয়মিত আবহাওয়া আর লকডাউন পরিস্থিতিতে ধুঁকতে বসেছিল এই শিল্প। লকডাউনের জেরে আমসত্ত্ব বাইরে পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। আর সেই সময় সরকারের তরফে সর্বতোভাবে সাহায্য করা হয়েছে আমসত্ত্ব প্রস্তুতকারী গোষ্ঠীগুলিকে। লকডাউনে যখন পরিবারে আর্থিক অনটন তখন এই শিল্পকে আঁকড়ে ধরেই বহু কারিগর আশায় বুক বাঁধছেন।

এক সময় মালদার ইংরেজবাজার থানা সংলগ্ন মাত্র কয়েকটি গ্রামের মানুষ, এই আমসত্ত্ব তৈরির কাজ করতেন। কিন্তু, এখন আশপাশের গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে এ ব্যবসা। মূলত মহিলারা এই আমসত্ত্ব তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন বছরের বেশ কয়েকটা মাস।আয়ও হয় বেশ ভালোই। আর এবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় খুশি এই সব কারিগররা। তাঁদের বক্তব্য, নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদায় প্রচারে এসে আম এবং আমসত্ত্ব চেয়েছিলেন। তাই মালদা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আমসত্ত্ব তৈরির কারিগররা এখন আশায় বুক বাঁধছেন। তাঁদের আশা, আগামী দিনে নিশ্চয়ই মুখ্যমন্ত্রী এই শিল্পের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেবেন। 

এক সময় মালদায় তৈরি আমসত্ত্বের কদর ছিল খুব। রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে ভারতের বিভিন্ন জায়গা ও ভিন দেশেও পাড়ি দিত এই আমসত্ত্ব। এখনও দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় মালদা থেকে আমসত্ত্ব পাঠানো হয়। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই আমসত্ত্ব তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছেন। আর এই ধারা যাতে অব্যাহত থাকে সেটাই চান কারিগররা। কিছুদিন আগেও জেলার কোতয়ালি, আড়াপুর, কল্যাণপুরের মাত্র কয়েকঘর মানুষ এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এখন বহু মহিলা এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

২ কেজি আমসত্ত্ব তৈরি করতে উন্নত মানের ৩৫ থেকে ৪০ কেজি আম প্রয়োজন হয়। এরপরে আছে প্রক্রিয়াকরণ এবং শ্রমিকদের খরচ। তারপরে যে দামে কারিগররা তাদের তৈরি আমসত্ত্ব বিক্রি করতে পারছেন, তাতে খুব একটা লাভের মুখ দেখছেন না তাঁরা। এখনও এই শিল্পে কোনও সরকারি প্রশিক্ষণ নেই। নেই বাজারজাত করার ব্যবস্থা। বহু আবেদনেও মেলেনি সরকারি ব্যবস্থায় উন্নত প্যাকেজিং বা প্রক্রিয়াকরণের কোনও সহজ ব্যবস্থা। এ নিয়ে একটা ক্ষোভ রয়েছে কারিগরদের মনে। তবে আগামীদিনে নিশ্চই এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদী তাঁরা। সকলেরই আশা জেলার ঐতিহ্যবাহী এই পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে আরও অনেক বেশি উদ্যোগী হোক সরকার।