সংক্ষিপ্ত
- লকডাউনের নিয়ম তোয়াক্কা না করে কাজ
- পুরুলিয়াতে একাধিক ইঁটভাটায় চলছে কাজ
- এহেন কাজ করতে গিয়ে হাতির মুখে পড়েন প্রৌঢ়া
- গোটা ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস জেলাশাসকের
লকডাউনের সময়ে নিয়ম ভেঙে চলছিল ইটভাটার কাজ। আর সেই কাজ করতে গিয়েই বুনো হাতির হানায় বেঘোরে প্রাণ হারালেন এক প্রৌঢ়। রবিবার সকালে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়ায় পুরুলিয়ার ঝালদা থানার কুটিডি গ্রামে।
জানা গিয়েছে, রবিবার ভোরে কুটিডি গ্রামের দুজন ইটভাটার শ্রমিক ভোর পাঁচটার সময়ে কাজে বেরোন। ইটভাটায় পৌঁছে কাজ করার সময়ে আচমকাই একটি দাঁতাল এসে পড়ে সেখানে। ওই সময়ে কর্মরত দুই শ্রমিকের মধ্য়ে একজন পালাতে পারলেও পালাতে পারেননি বছর পঁয়ষট্টির ফণি মুড়া। ওই প্রৌঢ়কে সামনে পেয়ে শুড় দিয়ে আছড়ে মারে ওই দাঁতাল। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্য়ু হয়।
খবর পেয়ে বন দফতর ও ঝালদা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই ইটভাটার শ্রমিকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য় পাঠানো হয়। ফণি মুড়ার বাড়ির লোক জানান, লকডাউনের পেটের জ্বালায় ইটভাটায় কাজ করতে যেতে হয়েছিল তাঁকে। স্থানীয় বাসিন্দারাও ঠিক তেমনটাই দাবি করেছেন। এদিকে এই ঘটনায় আবার প্রশ্নের মুখে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। প্রথমত, লকডাউনের সময়ে ইটভাটার কাজ কোনওভাবেই জরুরি পরিষেবার ভেতর পড়ে না। তাহলে কী করে চলছিল সেখানকার কাজ? দ্বিতীয়ত, তাহলে কি পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না জেলার প্রান্তিক মানুষগুলো, যার জন্য় তাঁদের লকডাউনের মাঝেই ইটভাটায় কাজ করতে যেতে হচ্ছে?
ঝালদা ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কার্যকরী সভাপতি জগদীশ মাহাতো বলেন, "রাজ্য সরকার এতো আর্থিক ক্ষতির মধ্যে দিয়েও সকলের জন্য বিনা পয়সায় চাল-আটা দিচ্ছে লকডাউন সফল করার জন্য। এই সময়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজের লাভের জন্য লকডাউনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ইঁটভাটার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আর যার পরিণামে একজন শ্রমিকের মৃত্যু মৃত্য়ু হলো।" মৃত শ্রমিকের স্ত্রী টুনুবালা মুড়া ও দাদা পূর্ণচন্দ্র মুড়া বলেন, লকডাউন চললেও পেটের জ্বালায় গোকুলনগর গ্রামের অজিত মাহাতোর ইট ভাটায় কাজ করতে গিয়েছিলেন ফণি মুড়া। সেখানেই রবিবার ভোরবেলা হাতির কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছে তাঁর পরিবার। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার স্পষ্ট জানান, "লকডাউনের সময়ে ইটভাটার কাজ চলতে পারে না। যদি নিয়ম ভেঙে এই কাজ করে কেউ করে থাকেন, প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।"
প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগেই, লকডাউনের সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে দাঁতালের হানায় মৃ্ত্য়ু হয় এক ব্য়ক্তির। যদিও সেখানে এরকম কোনও অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি জেলা প্রশাসনকে।