সংক্ষিপ্ত

গতকালই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটিত হয়েছিল বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। আর তদন্তের শুরুতেই বড় পদক্ষেপ করল তদন্তকারী দল। আমতা থানার তিন পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি সোমবার পুলিশের তরফে মৃত ছাত্রনেতার পরিবারের সদস্যদের রয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল। 

আনিস খানের মৃত্যুকে (Anis Khan Murder Case) কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে রয়েছে রাজ্য় রাজনীতি (State Politics)। দোষীদের বিরুদ্ধে যাতে কড়া পদক্ষেপ করা হয় তার জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই এবার এই ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনার দিন আনিসের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশই (West Bengal Police)। প্রাথমিক তদন্তের পর এই তথ্য হাতে পেয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল (Special Investigation Team) বা সিট। পাশাপাশি এই ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগে আমতা থানার (Amta Police Station) তিন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড (Police Personnel Suspend) করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম, হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার (Arrest) হয়নি বলে জানা গিয়েছে। 

গতকালই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটিত হয়েছিল বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। আর তদন্তের শুরুতেই বড় পদক্ষেপ করল তদন্তকারী দল। আমতা থানার তিন পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি সোমবার পুলিশের তরফে মৃত ছাত্রনেতার পরিবারের সদস্যদের রয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল। এছাড়া পুলিশের হাতে এসেছে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে ঘটনার দিন পুলিশের সাজে নয়, আনিসের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশই। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের মোবাইল লোকেশন (Mobile Location) ট্র্যাক করা হচ্ছে। তবে সাসপেন্ড হওয়া এই তিন পুলিশ কর্মীই সেদিন আনিসের বাড়িতে গিয়েছিলেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যে তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘটনার দিন আনিসের বাবা যখন ওই তিন পুলিশ কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, তাঁরা নির্লিপ্ত ছিলেন। ফলে ঘটনাস্থলে যেতেও তাঁরা দেরি করেছিলেন। 

আরও পড়ুন- আনিসের মৃত্যু রহস্য ধামাচাপা দিতেই রাজ্যের সিট গঠন-কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের

গতকাল রাতে আমতা থানায় গিয়ে পুলিশকর্মীদের রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সিটের দুই শীর্ষ আধিকারিক ডিআইজি সিআইডি অপারেশন মিরাজ খালিদ, বারাকপুর কমিশনারেটের যুগ্ম কমিশনার ধ্রুবজ্যোতি দে পুলিশকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ঘটনার রাতে যাঁরা থানায় ছিলেন, সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় গতরাতে। এরপরই সাসপেন্ড করা হয় ওই তিন পুলিশকর্মীকে। জেলা পুলিশ সুপারের দাবি, জনস্বার্থে এই সাসপেন্ড, যেহেতু তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, সেক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। এই মুহূর্তে একটা বিষয় সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে, এই সিদ্ধান্তটা নিতেই জেলা পুলিশের তিন দিনের বেশি সময় লাগল। পরিবারের তরফে প্রথম থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- আনিস খান খুনের প্রতিবাদে তুলকালাম এন্টালি, মাথা ফাটল ছাত্র পরিষদের সভাপতির, গ্রেফতার একের পর এক

আনিস খুনের কিনারা করতে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে সিট গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সোমবার নবান্ন থেকে পরিবারের সদস্যদের সুবিচার দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই ঘটনায় যেই দোষী হোক না কেন, তদন্ত নিরপেক্ষভাবেই সম্পন্ন হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই আশ্বাসের পরই তদন্ত প্রক্রিয়া গতি এসেছে।

আরও পড়ুন- '১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে সিট', আনিস হত্যাকাণ্ডের ইস্যুতে বার্তা মমতার

উল্লেখ্য, মৃত যুবকের বাবা সালাম খানের অভিযোগ পুলিশের পোশাক পরিহিত ৪ জন লোক বাড়ির ভেতরে ঢুকে আনিসকে খুন করে। পরিবার সূত্রে খবর আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আনিস আগাগোড়া কলকাতাতেই থাকতেন। তিন দিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন। শুক্রবার সন্ধ্যাবেলা পাড়ার একটি জলসাতে গিয়েছিলেন। এরপরে গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন তিনি। তার কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ চার জন লোক রাত ১টা নাগাদ তাঁদের বাড়িতে যান। ওই চারজনের মধ্যে একজন পুলিশের পোশাক পরা থাকলেও বাকিদের শরীরে জলপাই রঙের পোশাক পরা ছিল। আমতা থানার পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা তিনতলা থেকে আনিসকে ফেলে দেয়। তার জেরেই মৃত্যু হয় আনিসের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি।