সংক্ষিপ্ত

অ্যারেস্ট মেমো-তে মূলত অভিযুক্ত কী জামা-কাপড়, অলঙ্কার পরে রয়েছেন এবং তাঁর কাছ থেকে কি কি জিনিস হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে তার একটা তালিকা থাকে। কিন্তু, এমন কোনও অ্যারেস্ট মেমো এখনও পর্যন্ত সই করানো হয়নি। তাই টেকনিক্যালি অনুব্রত গ্রেফতার হয়েছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার না আটক? এই মুহূর্তে এই প্রশ্ন সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত সূত্রে যা খবর তাতে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করা নিয়ে কোনও উত্তর দেয়নি সিবিআই। তবে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মতে অনুব্রত মণ্ডলকে এতদিন সাক্ষী হিসাবে গরু পাচারকাণ্ডে জেরার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, বৃহস্পতিবার সকালে সিবিআই বোলপুুরে অনুব্রত-র বাড়িতে যে নোটিস দেয় তাতে তাঁকে গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত সাব্যস্ত করা হয়েছে।

সিবিআই সূত্রে খবর যে কাউকে গ্রেফতার করা হলে একটি অ্যারেস্ট মেমো দেওয়া হয়। এই অ্যারেস্ট মেমো-তে অভিযুক্ত-র আত্মীয়-স্বজন অথবা নিকট জনের সই থাকতে হয়। এই অ্যারেস্ট মেমো-তে মূলত অভিযুক্ত কী জামা-কাপড়, অলঙ্কার পরে রয়েছেন এবং তাঁর কাছ থেকে কি কি জিনিস হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে তার একটা তালিকা থাকে। কিন্তু, এমন কোনও অ্যারেস্ট মেমো এখনও পর্যন্ত সই করানো হয়নি। তাই টেকনিক্যালি অনুব্রত গ্রেফতার হয়েছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার সকালে যখন অনুব্রতের বাড়িতে সিবিআই প্রবেশ করে ততক্ষণে চারপাশ ঘিরে ফেলেছে আধা সেনা। বাড়ির ভিতরে কারও প্রবেশ এবং বের হওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনুব্রত-র বাড়ির সামনে যে পুলিশ কর্মীরা মোতায়েন থাকেন তাঁদের কাউকে ভিতরে যেতে দেওয়া হয়নি। বোলপুর থানার পুলিশ অনুব্রত নিচুপট্টির বাড়িতে পৌঁছলেও তাঁদেরও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জানা গিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলকে এরপর ১ ঘণ্টা ধরে জেরা করে সিবিআই। এমনকি তাঁর বিভিন্ন ঘরে তল্লাশিও চালিয়ে বেশকিছু নথি আটক করা হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, বাড়িতেও অনুব্রত জেরার প্রশ্নে উত্তর দিতে অস্বীকার করেন। এমনকী অধিকাংশ প্রশ্নেই তিনি প্রায় নিশ্চূপ ছিলেন। কোনও উত্তর দিতে চাননি। সিবিআই-এর মতে তাঁরা বাড়ি বয়ে জেরার জন্য পৌঁছলেও তাতে অনুব্রত যে নিস্প্রিয়তা দেখিয়েছেন তাতে মনে করা হচ্ছে যে তিনি তদন্তে অসহযোগিতা করেন।

তদন্তে অসহযোগিতার জন্য সিবিআই অফিসাররা অনুব্রতকে আটকের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা অনুব্রতকে কীভাবে বাড়ি থেকে বের করা হবে এবং কীভাবে তাঁর মেডিক্যাল করা হবে তার ছক আগে থেকেই কষা ছিল। অনুব্রত মণ্ডল প্রায়ই বলেন যে তাঁর শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে। ফলে রোজই তাঁকে অক্সিজেন নিতে হয়। অনুব্রত-র বাড়ি থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার বের করে সিবিআই-এর গাড়িতে তোলা হয়। জানা গিয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে মেডিক্যাল করিয়ে আরও জেরা করার সিদ্ধান্ত নেয় সিবিআই। এরপর তাঁকে আসানসোল আদালতে তোলা হবে বলেই খবর। আদালতে তোলা হলে অনুব্রত গ্রেফতার হয়েছেন বলেই ধরে নেওয়া হবে। তবে, এই প্রতিবেদনের প্রায় শেষ পর্যায়ে সিবিআই-এর একটি সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার। বোলপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারই করা হয়েছে। সিবিআই সরকারিভাবে এত সিলমোহর না দিলেও এটাই সত্যি।