সংক্ষিপ্ত

  • গত বছর এক পাচারকারীর থেকে সোনা ছিনতাই করেন অভিযুক্ত অফিসার
  • ছিনতাইয়ের অভিযোগে ধৃত এএসআই এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার
  • ধৃতদের ছ' দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত
     

উর্দি পরে সোনা ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন এএসআই পদ মর্যাদার এক অফিসার। অভিযুক্ত ওই পুলিশ অফিসার মালদহের ইংরেজবাজার থানায় কর্মরত ছিলেন। ইতিমধ্যেই ছিনতাইয়ের অভিযোগে ওই অফিসারকে গ্রেফতার করে এ দিনই আদালতে পেশ করা হয়েছে। ওই অভিযুক্তের সহকারী হিসেবে গ্রেফতার হয়েছে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারও। 

ধৃত ওই অফিসারের নাম রাজীব পাল। তাঁর সঙ্গী সিভিক ভলেন্টিয়ারের নাম ইলিয়াস সবজি। অভিযোগ ২০১৯ সালের ২৯ মে এক সোনা পাচারকারীর থেকেই ওই সোনা ছিনতাই করেন অভিযুক্ত অফিসার।  বেআইনি সোনা পাচারের অভিযোগে কলকাতার বরানগরের বাসিন্দা স্বাগত মণ্ডল নামে ওই পাচারকারীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

আরও পড়ুন- বিপদে বন্ধু পুলিশ, পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীর অ্য়াডমিট কার্ড পৌঁছে দিলেন এএসআই..

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্বাগত মণ্ডল নামে ওই পাচারকারী গত বছর মে মাসে ১ কেজি ৪০০ গ্রাম সোনা নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে এসেছিল। সেখান থেকে ওই সোনা নিয়ে ফেরার সময় ঘটনার দিন ওল্ড মালদহ থানা এলাকার অন্তর্গত জাতীয় সড়কের ধারে স্বাগতর থেকে সোনা কেড়ে নেন পুলিশ অফিসার রাজীব সাহা এবং তাঁর দলবল। ছিনতাইয়ের সময় উর্দি পরেই ছিলেন রাজীব। তাঁর সঙ্গে সিভিক ভলেন্টিয়ার ইলিয়াস- সহ আরও বেশ কয়েকজন সোনার দোকানের কর্মী ছিল। 

সোনা ছিনতাই হয়ে যাওয়ার পরে ওল্ড মালদহ থানায় অভিযোগ জানাতে যায় স্বাগত। কিন্তু সোনা থাকার প্রমাণ হিসেবে যথাযথ নথি দেখাতে না পারায় অভিযোগ গ্রহণ করেনি পুলিশ। পরবর্তী সময় অবশ্য গত ১১ নভেম্বর থানায় মামলা রুজু হয়। যদিও তদন্তে নেমেও বিশেষ অগ্রগতি করতে পারেনি পুলিশ।

কিন্তু গত ১১ ফেব্রুয়ারি মালদহের অভিরামপুর এলাকায় পুলিশের পোশাক পরেই এক মহিলার থেকে গয়না ছিনতাই করার অভিযোগ ওঠে তিনজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেন জেলা পুলিশের কর্তারা। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের  নির্দেশ দেন খোদ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। এই ঘটনার তদন্তে পুলিশ নামতেই কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বের হয়। সুজাপুরের বাসিন্দা এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জেরা শুরু করে পুলিশ। সেই অভিযুক্তই জানায়, এক পুলিশ অফিসারও সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। সেই সূত্র ধরেই সামনে আসের এএসআই রাজীব পালের নাম। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করে ওল্ড মালদহ থানার পুলিশ।

পুলিশ মনে করছে, সোনা পাচারকারী স্বাগতর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল রাজীব পালের। তা না হলে স্বাগত কখন গয়না নিয়ে মালদহের উপর দিয়ে যাবেন, তা জানা সম্ভব হতো না ওই পুলিশ অফিসারের পক্ষে। তিনজনকেই হেফাজতে নিয়ে আরও তথ্য হাতে পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এ দিন মালদহ সিজেএম আদালতে পেশ করা হলে অভিযুক্তদের ছ' দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।