সংক্ষিপ্ত

  • নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের জের
  • শিয়ালদহ এবং হাওড়া থেকে বাতিল বহু ট্রেন
  • অসমগামী বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল
  • অবরোধের জেরে বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা

নাগরিকত্ব আইন নিয়ে অসম- সহ উত্তর পূর্বের রাজ্যেগুলিতে অশান্তির জের। কলকাতা থেকে অসমগামী পরের পর ট্রেন বাতিল করে দিল পূর্ব রেল। একই সঙ্গে উলুবেড়িয়া- সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভের জেরে পশ্চিমবঙ্গেও বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা। হাওড়া থেকে খড়্গপুরের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকল রেল চলাচল। 

পূর্ব রেলের তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, অসমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে শিয়ালদহ এবং হাওড়া থেকে অসমগামী বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সেগুলি হল

১. ১৫৯৫৯ হাওড়া- ডিবরুগড় কামরূপ এক্সপ্রেস ১৩ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাতিল থাকবে। 

২. ১৩১৭৫ শিয়ালদহ- শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস শনিবার বাতিল করা হয়েছে। 

৩.১৫৯৫৬ দিল্লি- ডিবরুগড় ব্রহ্মপুত্র মেল ১৩ এবং ১৪ ডিসেম্বর বাতিল থাকবে। 

৪. ১২৫০৩ বেঙ্গালুরু ক্যান্টনমেন্ট- আগরতলা এক্সপ্রেস ১৩ ডিসেম্বর বাতিল করা হয়েছে। 

নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এ দিন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় রেল অবরোধ করা হয়। তার মধ্যে রেল চলাচলে সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ে উলুবেড়িয়া স্টেশনে অবরোধের ঘটনায়। আটকে পড়ে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস, কাণ্ডারি এক্সপ্রেস, ইস্ট- কোস্ট এক্সপ্রেস, যশবন্তপুর দুরন্ত এক্সপ্রেস, ধৌলি এক্সপ্রেস- সহ হাওড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া এবং হাওড়াগামী বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন। এ ছাড়াও বহু লোকাল ট্রেনও বিভিন্ন স্টেশনে আটকে থাকে। বন্ধ হয়ে হয়ে হাওড়া এবং খড়্গপুরের মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেনে হামলা চালাতে শুরু করে মারমুখী বিক্ষোভকারীরা। আতঙ্ক ছড়ায় ট্রেনে আটকে থাকা যাত্রীদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, কয়েক হাজার উন্মত্ত জনতা ট্রেনে হামলা চালালেও দেখা মেলেনি পুলিশের। ট্রেনে হামলা চালানোর পাশাপাশি ভাঙা হয় কেবিন রুমও। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরের আঘাতে আহত হন বেশ কয়েকজন যাত্রী। আতঙ্কে ট্রেনের জানলা, দরজা বন্ধ করে দেন যাত্রীরা। বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে বেশ কয়েকজন জিআরপি কর্মীও আহত হন। খড়্গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাওড়া স্টেশনে আটকে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী। 

একইভাবে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা স্টেশন। সেখানে স্টেশন চত্বরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। মারধর করা হয়ে রেল কর্মীদেরও। স্টেশন চতব্রে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে গুরুতর আহত হন কয়েকজন রেল পুলিশ কর্মী। এই ঘটনার জেরে কৃষ্ণনগর এবং লালগোলার মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিপাকে পড়েন অসংখ্য যাত্রী। বাতিল করতে হয় লালগোলা থেকে কলকাতাগামী হাজারদুয়ারী এক্সপ্রেস।

অন্যদিকে বসুলডাঙা স্টেশনে অবরোধের জেরেও শিয়ালদহ ডায়মন্ড হারবার শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। মালদহ ডিভিশনের জঙ্গিপুর স্টেশনে রেল অবরোধের জেরে আজিমগঞ্জ- নিউ ফরাক্কার মধ্যে দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। 

উলুবেড়িয়া এবং বেলডাঙা স্টেশনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ফলে ওই শাখাগুলিতে রাত পর্যন্ত রেল পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। দীর্ঘক্ষণ ট্রেনের মধ্যে নয় স্টেশনে আটকে থেকে প্রবল হয়রানির মধ্যে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী।