সংক্ষিপ্ত

পুলিশ সুপারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে এটা করা হয়েছে। যারা একাজ করেছে তারা খুব শীঘ্রই ধরা পড়বে। 

ফের মাওবাদীদের নাম করে পোস্টার পড়ল মেদিনীপুরে। সাদা কাগজের উপরে লালকালিতে লেখা হয়েছে পোস্টারে। জঙ্গলমহলের মানুষের নানা দাবি নিয়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের ঈশ্বরপুর এলাকায় এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। মাওবাদীদের নাম করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। শেষে লেখা হয়েছে "আমরা আসছি"। এর আগে মেদিনীপুর সদরে জামশোল এলাকায় শালগাছের গুঁড়ি কেটে রাস্তার উপরে ফেলা হয়েছিল। মেদিনীপুর ধেড়ুয়া রুটে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল মাওবাদীদের মতো করে। পুলিশ সুপারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে এটা করা হয়েছে। যারা একাজ করেছে তারা খুব শীঘ্রই ধরা পড়বে। 

শনিবার সকালে মেদিনীপুর সদর ব্লকের ঈশ্বরপুর এলাকায় একটি মুদি দোকানের গায়ে সাদা কাগজের উপর লাল স্কেচপেন দিয়ে লেখা একটি পোস্টার সাঁটানো ছিল। সেখানে বলা হয়েছে, "মাওবাদী জিন্দাবাদ, আদিবাসীদের পাট্টা দেওয়া হচ্ছে না কেন, হেনস্থা হচ্ছে কেন? ঘুষ নিয়ে পদ বিক্রি করা হচ্ছে কেন? অবৈধ বালি খাদান চলছে কেন? ঘুষখোর নেতারা জবাব দাও, জবাব তোমায় দিতে হবে। না হলে জবাব নিয়ে নেব। জনগণ জাগো, জাগো জনগন জাগো। প্রশাসন বন্ধুরা সঠিন কাজ করুন। ঘুষখোর নেতাদের সাথে সাথ দিবেন না। ডাক দিয়েছে মাওবাদীরা চাকরির লোভ দেখিয়ে মাওবাদীকে কেনা যাবে না। আমরা আসছি..."৷  সবশেষে লেখা রয়েছে সিপিআই মাওবাদী ৷ পুলিশ ওই পোস্টার উদ্ধারের পর তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। 

৫ সেপ্টেম্বরে একইভাবে মেদিনীপুর থেকে ধেড়ুয়া হয়ে ঝাড়গ্রাম যাওয়ার জঙ্গলের উপর দিয়ে যাওয়া রাজ্য সড়কে কেউ বা কারা পুরোনো মোটা শালগাছ কেটে ফেলে রেখেছিল। রাস্তা অবরোধের চেষ্টা হয়েছিল রাতেই। গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ পরদিন সেটি বুঝতে পারে। এছাড়াও বেশ কয়েক দফাতে মাওবাদীদের নাম করে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এতে চাপা আতঙ্ক ও কৌতুহল তৈরি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে। 

শনিবার এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার দিনেশ কুমার বলেন, "পোস্টার পেয়েছি। গতবারে গাছও কাটা হয়েছিল। আমরা সেবার স্থানীয় একজনকে গ্রেফতার করে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। স্থানীয়দের মনে আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। অন্যদিকে আজকের ক্ষেত্রেও লেখা দাবিগুলি অন্যরকম। যা দেখলেই বোঝা যায় পোস্টারটি মাওবাদীদের বিষয় নয়। যে বা যারা এই কাজ করেছে খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহলে কয়েক মাসে মাওবাদী লিঙ্কম্যান, পুরনো মাওবাদী মামলায় থাকা লোকজনদের অনেককেই চাকরি দেওয়া হয়েছে। আবার অনেকেই কাগজে মাওবাদীর সঙ্গে যুক্ত থাকার নথি বা মামলা দেখাতে পারেননি বলে চাকরি পাননি। তাঁরাই পুনরায় এলাকায় চাপা আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। 

YouTube video player