সংক্ষিপ্ত

তিনদিন ধরে নিঁখোজ থাকার পর আজ পুকুরে ভেসে উঠলো মৃতদেহ। দেবী মনসার নাম করে নানা বুজরুকির অবসান ঘটল শুক্রবার।

জল থেকে উঠবে মা মনসা (Devi Manasa)। কিন্তু না আর শেষ রক্ষা হল না। তিনদিন ধরে নিঁখোজ থাকার পর আজ পুকুরে ভেসে উঠলো মৃতদেহ। দেবী মনসার নাম করে নানা বুজরুকির (superstition) অবসান ঘটল শুক্রবার। আবারও কুসংস্কারের বলির সাক্ষী থাকলো পুরুলিয়ার (Purulia) বলরামপুর (Balarampur)। গত মঙ্গলবার দিন বলরামপুর থানার বাঘাডি গ্রামের গৃহবধূ যমুনা কর্মকার হঠাৎ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। এর পরেই যমুনার পরিবারের লোকজন এক ওঝার দ্বারস্থ হন। 

ওঝার নিদান অনুযায়ী পরিবারের লোকজন জানতে পারে যমুনা কর্মকার স্থানীয় একটি পুকুরে ডুব দিয়ে মনসার ভর নিয়ে উঠবে। ওই পুকুরেই রয়েছে যমুনা কর্মকার। ওঝার নিদান অনুযায়ী তাই পরিবারের লোকজন বুধবার সকাল থেকেই মা মনসার পূজা অর্চনা শুরু করে দেন। এই ঘটনা চাউর হয়ে যায় আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামে। একদিকে মা মনসার ভক্তি অন্যদিকে বিস্ময়কর এই বিষয়টি দেখতে বুধবার সকাল থেকে বহু মানুষ ভিড় জমান বাঘাডি গ্রামের পুকুর পাড়ে।

কিন্তু বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত ওই পুকুরের জল থেকে উঠে আসেনি মা মনসা রূপী যমুনা কর্মকার। এলাকার মানুষের বিশ্বাস এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে বুধবার রাতে পুকুরপাড়ে আলোর ব্যবস্থা করে ঝাঁঝর ঘন্টা বাজিয়ে মা মনসার কৃপা লাভের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এই ঘটনার পরেই যমুনার পরিবারের পক্ষ থেকে বলরামপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। অবশেষে অনেক অপেক্ষা, অনেক বুজরুকি, অনেক কুসংস্কারের  অবসান ঘটিয়ে বাঘাডি গ্রামের ওই পুকুরে যমুনা কর্মকারের মৃতদেহ ভেসে ওঠে। 

বলরামপুর থানার পুলিশ পুকুর থেকে যমুনা কর্মকারের মৃতদেহ শনাক্তকরনের জন্য বলরামপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা যমুনা কর্মকারকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বলরামপুর থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায় গত বুধবার দিন মৃতার ভাই একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। জোর কদমে তদন্তে নেমেছে বলরামপুর থানার পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার বা আটক হয়নি।