সংক্ষিপ্ত

  • পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন এক তরুণী
  • পরিবারের  আর্থিক অবস্থা ভাল নয়, চিকিৎসা করানোরও সামর্থ্য নেই তাঁর
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বার্তা দেখে সটান ওই তরুণীর বাড়িতে হাজির বিডিও
  • নিজের কোলে তুলে ওই তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন তিনি

পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে শয্যাশায়ী। চিকিৎসার করানোর সামর্থ্য নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেখে অসহায় তরুণীর পাশে দাঁড়ালেন খোদ বিডিও। স্রেফ টাকা দিয়ে দায় সারাই নয়, বরং নিজে বাড়িতে গিয়ে ওই মহিলাকে কোলে তুলে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে নিজের খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন। ওই মহিলার ওষুধ ও খাবারেরও ব্যবস্থা করেছেন তিনি।  বিডিও আশ্বাস দিয়েছেন, ওই মহিলার জন্য সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করে দেবেন তিনি। পূর্ব বর্ধমানের রায়না-১ ব্লকের বিডিও সৌমেন বণিকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই। 

বর্ধমান শহরের ছোটনীলপুরে বাড়ি চন্দনা নন্দীর।  বৃদ্ধা মাকে নিয়ে থাকেন তিনি। পরিবারের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভালো নয়। ইতিহাস নিয়ে এমএ পাস করেছেন চন্দনা। বাড়িতে টিউশনি পরিয়ে যা রোজগার করেন, তা দিয়েই কোনওমতে সংসার চলে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন,  দিন কয়েক আগে পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন ওই তরুণী। বর্ধমানের অনাময় হাসপাতালে চিকিৎসার পর বাড়িতে চলে আসেন চন্দনা।  কিন্তু এখনও সুস্থ হয়ে ওঠেননি তিনি।  বরং বাড়ি ফেরার পর ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হতে শুরু করে।  এখন আর হাঁটাচলারও ক্ষমতা নেই, শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন চন্দনা। এদিকে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই! চন্দনাদের প্রতিবেশী সৌভিক ঘোষ। তিনি বর্ধমানের মন্তেশ্বের বিডিও অফিসের কর্মী।  পাড়ার মেয়ের এমন করুণ দশার কথা বন্ধু অনাবিল সেনগুপ্তকে জানান তিনি।  গোটা ঘটনাটি ফেসবুকে পোস্ট করেন অনাবিল। আর সেই পোস্টটি নজরে পড়ে যায় পূর্ব বর্ধমানের রায়না ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সৌমেন বণিকের। 

শরীরের কঠিন অসুখে যখন দিশেহারা চন্দনা ও তাঁর মায়ের, তখনই দেবদূতের মতো উদয় হন রায়না ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সৌমেন বণিক। রবিবার সকালে বর্ধমান শহরের ছোটনীলপুরে চন্দনার বাড়িতে হাজির হন তিনি।   ব্যক্তিগতভাবে যতটুকু করার তো করেইছেন, অসহায় ওই তরুণীর জন্য সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বিডিও এমন মানবিক ভূমিকায় মুগ্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা।  প্রশাসনিক ব্যবস্থায় একেবারেই তৃণমূল স্তরের আধিকারিক হলেন বিডিও।  রোজকার প্রয়োজনে তাঁর কাছে যেতে হয় সাধারণ মানুষ। সুতরাং গ্রাম বাংলায় সাধারণ মানুষের কাছে বিডিওরাই প্রশাসনের মুখ।  সেই বিডিওই যখন প্রশাসনিক দায়িত্বেও বাইরে গিয়ে স্রেফ মানবিকতার খাতিরে আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান, তখন তা ভিন্নমাত্রা পায়।