সংক্ষিপ্ত
অভিশপ্ত সেই বিকানের এক্সপ্রেসের এক আহত যাত্রী বলেন, তাঁর ভাইপো সহ মোট ২২ জন বিকানের থেকে কোচবিহার ফিরছিলেন। সকলে এস-১৩ কামরায় ছিলেন। দুর্ঘটনায় তিনি ও তাঁর মেয়ে পিঙ্কি গুরুতর ভাবে আহত হন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল গড়াতে না গড়াতেই জলপাইগুড়ি জেলায় ময়নাগুড়িতে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা (Train Acciden)। লাইনচ্যুত হয়ে যায় আপ বিকানের এক্সপ্রেস (Bikaner Express)। আর এক্সপ্রেসের ট্রেনের লাইনচ্যুত হলে যে কী সাঙ্ঘাতিক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে তা ফের একবার প্রমান দিল এই বিকানের এক্সপ্রেস (Bikaner Express)। দুমড়ে মুছড়ে পড়ে থাকা কামড়া গুলো থেকে যেমন ভেসে এসেছে শেষ মুহুর্তও বাঁচার আর্তনাদ তেমনই স্বজন হারানোর কান্নায় ফেটে পড়ছিল তাঁদের প্রিয়জনেরা। এখানেই শেষ নয়, ট্রেনের কামড়া থেকে বের করে আনা হচ্ছিল বাচ্চা থেকে বড় অনেকেরই মৃতদেহ। শুধু তাই নয়, ময়নাগুঁড়ির মর্মান্তিক বিকানের এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত (Derailment Of Bikaner Express) হওয়ার দুর্ঘটনায় এখনও খোঁজ মেলেনি অনেক পরিবারের সদস্যের। কেও আবার তাঁর সন্তানের জন্য বিয়ের গয়না নিয়েও ফিরছিলেন। কিন্তু বিকানের এক্সপ্রেসের (Bikaner Express) এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এক নিমেষে যেমন কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য প্রাণ তেমনই ভেঙে দিয়েছে অনেকের ঘর বাঁধার স্বপ্নও। দুর্ঘটনার কবল থেকে যারা ক্ষণিকের জন্য রক্ষা পেয়েছেন বা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা অনেকেই স্বজনকে ফিরে পাওয়ার আশায় দিশাহীনভাবে হাতড়ে বেড়াচ্ছে সেই অভিশপ্ত স্থান।
অভিশপ্ত সেই বিকানের এক্সপ্রেসের এক আহত যাত্রী বলেন, তাঁর ভাইপো সহ মোট ২২ জন বিকানের থেকে কোচবিহার ফিরছিলেন। তাঁরা সবাই এস-১৩ কামরায় ছিলেন। দুর্ঘটনায় তিনি ও তাঁর মেয়ে পিঙ্কি গুরুতর ভাবে আহত হন। সেই দিনই তাঁদের উদ্ধার করে গ্রামবাসী এবং প্রশাসনের লোকেরা ভর্তি করেছিল হাসপাতালে। জ্ঞান ফিরতেই পরিজনদের খোঁজ শুরু করেন ওই আহত যাত্রী। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে শুরু করে দুর্ঘটনাস্থলের পাশে অস্থায়ী ক্যাম্পে এসেও তন্ন তন্ন করে খোঁজ করেন তাঁরা। তাঁর ১৭ বছর বয়সী ভাইপো সম্রাট এবং সঙ্গে থাকা মালপত্রের জন্য দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে তাঁর। কোতোয়ালি থানার দোমুখা এলাকার সেই বাসিন্দা বলেন, তাঁরা সকলে সুস্থ থাকলও ভাইপোকে কিছুতেই পাচ্ছেন না। বেদনার সুরে বলেন, সে কি আদৌ বেঁচে আছে! রেল আধিকারিকরা এখনও তাঁর ভাইপো-র ব্যাপারে কোনও তথ্যই জোগাড় করে উঠতে পারেন নি। তাই তিনি একপ্রকার হতাশ ও নিরাশ। অপেক্ষা শুধু ভাইপোর খোঁজ পাওয়ার।
Maynaguri Rail Accident: রেল দুর্ঘটনায় পৃথক তদন্ত করবে জিআরপি, অভিযোগ দায়ের এক যাত্রীর
ময়নাগুড়ির ট্রেন দুর্ঘটনা উসকে দিল গাইসালের স্মৃতি, স্থানীয়দের চোখের সামনে ভেসে উঠল লাশের স্তূপ
Maynaguri Train Accident: দুমাসের মেয়েকে দেখা হল না ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত সুভাষের
উল্লেখ্য়, গত বৃহস্পতিবার মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির দোহমনি এলাকায়। ঘটনায় প্রাণ হারান ৯ জন। আহত ৪৩ জনেরও বেশি। আহতদের ভর্তি করা হয়েছিল ময়নাগুড়ি গ্ৰামীণ হাসপাতাল, জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আহতরা অনেকেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন। আর তারপরই ছুটে গিয়েছেন দুর্ঘটনাস্থলের দিকে। উদ্দেশ্য একটাই, প্রিয়জনের যদি একটা খোঁজ পাওয়া যায়!