সংক্ষিপ্ত

দেড় ঘণ্টার অভিযানে সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়ে অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের 'বাহুবলি' জেলা সভাপতিকে গ্রেফতার করতে সিবিআইকে শতাধিক কেন্দ্রীয় বাহিনী নিতে হয়েছিল। বীরভূমের বিশ্বভারতীর রতনকুঠি গেস্ট হাউসে বুধবার মধ্যরাত থেকেই পরিকল্পনা শুরু করে সিবিআই। 

রাজ্য রাজনীতিতে সকাল থেকেই শোরগোল। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। যে অনুব্রত মন্ডলের দাপটে বীরভূমে একটা গাছে পাতাও নড়ে না, সেই কেষ্ট সিবিআইয়ের ভয়ে দোতলার ঘরে লুকিয়ে ছিলেন। গোটা ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই রীতিমত সমালোচনা শুরু করেছে বিরোধী বিজেপি থেকে সিপিএম। 

দেড় ঘণ্টার অভিযানে সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়ে অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের 'বাহুবলি' জেলা সভাপতিকে গ্রেফতার করতে সিবিআইকে শতাধিক কেন্দ্রীয় বাহিনী নিতে হয়েছিল। বীরভূমের বিশ্বভারতীর রতনকুঠি গেস্ট হাউসে বুধবার মধ্যরাত থেকেই পরিকল্পনা শুরু করে সিবিআই। 

কলকাতা ও আসানসোলের ৩৫ জন সিবিআই অফিসার বোলপুরে হাজির হন। এই ঘটনায় জোরালো প্রতিক্রিয়া এসেছে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের কাছ থেকে। তিনি বলেন, "দীর্ঘ প্রতীক্ষিত গ্রেপ্তার। অনুব্রত স্থানীয় বাজারে মাছ বিক্রি করতেন। এখন হাজার কোটি টাকার মালিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য ধন্যবাদ।"

বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন অনুব্রত মন্ডল একজন মাফিয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্রয়ে ও প্রশ্রয়ে এখন তিনি হাজার কোটির মালিক। 

এর উত্তরে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ও আইনজীবী বিশ্বজিত দেব বলেন বিজেপির ওয়াশিং মেশিনে ঢুকে পরিষ্কার হয়ে গেলেই কারোর দোষ খারিজ হয়ে যায় না। তাই শুভেন্দুর মুখে নীতি আর দুর্নীতির কথা মানায় না। তৃণমূল কংগ্রেস কোনওদিনই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়নি, এখনও দেবে না।  

অনুব্রতর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন কোটি কোটি টাকার মালিকের অন্যায় দাপটের এই পরিণতিই হওয়ার ছিল। পুলিশকে বোম মারো, গুড়বাতাসা, একাধিক বিতর্কে জড়ালেও অনুব্রত প্রসঙ্গে বরাবরই চুপ থাকতেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্রয়েই এই ঘটনা। এটা হওয়ারই ছিল। নতুন নয়। গ্রেফতারির বিকল্প ছিল না। লুকিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন, এটাই পরিণতি হওয়ার ছিল। 

উল্লেখ্য, দশবার তাঁকে সিবিআই তলব করেছিল। কিন্তু চিকিত্সার অজুহাতে তিনি বারবারই হাজিরা এড়িয়েছেন। তাই অনুব্রতর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। বুধবার মাঝরাতে বোলপুরে পৌঁছয় সিবিআই টিম। বৃহস্পতিবার সকাল ৯.৪৫ মিনিট নাগাদ সিবিআইয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একটি দল তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করে।

সূত্রের খবর, তাঁকে হাজিরা এড়ানো প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আধিকারিকরা। পাশাপাশি তল্লাশি চলে তাঁর বাড়িতে বলে সূত্র মারফত জানা গেছে। অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির চারদিক ঘিরে ফেলা হয়। বাড়ির দরজায় তালা দিয়ে দেন সিবিআই আধিকারিকরা। বীরভুমের তৃণমূল জেলা সভাপতি বাড়িতেই ছিলেন বলে খবর। সূত্রের খবর সিবিআই আধিকারিকদের আসার খবর পেয়েই  তাঁর বাড়ির চারপাশে অগণিত মানুষের ভিড় জমে যায়।