সংক্ষিপ্ত

দফতরের ভিতরে থাকা দুটি ফ্লেক্সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছবির পাশে দেবশ্রীর ছবি ছিল। সেই ছবিতে থাকা দেবশ্রীর মুখ দলীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। 

কিছুদিন ধরেই জেলা বিজেপির সঙ্গে একটু একটু করে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। কয়েকদিন আগেই জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন তিনি। আর এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে স্থানীয় বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর ছবি ঢেকে দিলেন। নিজের দফতরের সব জায়গাতেই দেবশ্রীর ছবি ঢেকে দিয়েছেন। যা নিয়ে বাড়ছে জল্পনা। 

দফতরের ভিতরে থাকা দুটি ফ্লেক্সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছবির পাশে দেবশ্রীর ছবি ছিল। সেই ছবিতে থাকা দেবশ্রীর মুখ দলীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। দফতরের বাইরে থাকা ফ্লেক্সের উপর দেবশ্রীর মুখ সাদা কাগজ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। 

রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, বিধায়ক ও সাংসদের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেই কারণে এই আচরণ করছেন কৃষ্ণ কল্যাণী। এই জল্পনার মাঝেই আবার মঙ্গলবার কলকাতায় গিয়েছিলেন তিনি। যা নিয়ে জল্পনা আরও বাড়ছে। এনিয়ে কৃষ্ণ কল্যাণীর বক্তব্য, "আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কোনও ষড়যন্ত্রকারীর ছবি কার্যালয়ে রাখব না।"

আরও পড়ুন- এবার 'দাদাগিরি' সিলভার স্ক্রিনে, লাভ ফিল্মের প্রযোজনায় আসছে সৌরভের বায়োপিক

আরও পড়ুন- 'মুখ্যমন্ত্রী করার কাজ তো কমিশনের নয় ', ভবানীপুর ইস্যুতে বিস্ফোরক দিলীপ

দু'দিন আগেই জেলা বিজেপির থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে জেলা নেতৃত্ব ও সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দলীয় কর্মসূচি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বিধায়ক। এদিকে বুধবার তিনি কলকাতায় থাকলেও তাঁর দফতরে ঢাকা পড়ল দেবশ্রী চৌধুরীর ছবি। দফতরের মধ্যে বেছে বেছে শুধুমাত্র দেবশ্রীর ছবিই ঢেকে দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, "বিধায়ক নিজের অফিসে কার ছবি রাখবেন আর কার ছবি রাখবেন না এটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে তিনি বিজেপির সঙ্গেই আছেন। আর বিধায়ক বা সাংসদের ছবি রাখতেই হবে এমন কোনও ব্যাপার নেই।" 

আরও পড়ুন- ৩ দিন ধরে নদীর জলে ভাসছিল 'দেহ', কাছে যেতেই তাজ্জব গ্রামবাসীরা, জীবিত অবস্থায় উদ্ধার ব্যক্তি

এদিকে এই বিষয়ে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ি করেছেন জেলা তৃণমূল নেতা অরিন্দম সরকার। তিনি বলেন, "বিজেপির প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে রাজ্যজুড়ে। এরা মানুষের হয়ে কোনও কাজ করে না। জেলায় এখন বিজেপির বিধায়ক মাত্র ১ জন। খুব শীঘ্রই তিনিও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন।" অন্যদিকে কৃষ্ণ কল্যাণীর দফতরের কর্মী নিতাই সরকার বলেন, "সংস্কারের জন্য কাজ চলছে। হয়তো সেই কারণেই ছবি ঢাকা হয়েছে।" 

এ প্রসঙ্গে কৃষ্ণ কল্যাণী সাফ জানিয়েছেন, "প্রথমদিন থেকেই দেবশ্রী চৌধুরী আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। নির্বাচনে রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিট পাওয়ার পরই তিনি বিরোধিতা করে চলেছেন। বিধানসভা নির্বাচনের কিছু আগেই আচমকা নিজের প্রভাব খাটিয়ে জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ীকে সরিয়ে নিজের পছন্দসই একজনকে জেলা সভাপতির পদে নিযুক্ত করেন। এতে জেলার দলীয় কর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়। এরপর নির্বাচনে  আমাকে হারানোর জন্য গোপনে ষড়যন্ত্র করেন। তাতেও লাভ হয়নি। মানুষের আর্শীবাদ নিয়ে আমি জিতে বিধায়ক হই। তারপর থেকেই দলের কাছে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করে আমাকে দল থেকে তাড়াতে চাইছেন। এই ধরনের ষড়যন্ত্রকারীর ছবি আমার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে রাখার কোনও কারণ নেই। এই কারণেই তাঁর ছবি আমি ঢেকে দিয়েছি।"

আর এই অভিযোগ প্রসঙ্গে কী বলছেন খোদ দেবশ্রী চৌধুরী? তাঁর কথায়, "ব্যক্তিগতভাবে আমি আমার ছবি রাখতেও বলিনি। তিনি বিধায়ক হওয়ার পরেই আমার কাছে কিছু আবদার করেছেন। যেটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এই থেকেই তাঁর ক্ষোভ হয়েছে। তবে এই ঘটনা রাজ্য নেতৃত্ব দেখবে।"

YouTube video player