সংক্ষিপ্ত

রাজ্যে কৃষক আন্দোলনের অন্যতম আঁতুড়ঘর বলা হয় সিঙ্গুরকে। বাম শাসনের পতন আর তৃণমূলে উত্থানের পিছনে সিঙ্গুর আন্দোলন অনেকটাই দায়ি বলে মনে করেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

এক বছরের বেশি সময় পর অবশেষে আন্দোলন শেষ করে ঘরে ফিরছেন দিল্লিতে (Delhi) আন্দোলনরত কৃষকরা (Farmer Protest)। যুদ্ধ জয়ের উল্লাস রয়েছে তাঁদের চোখে মুখে। কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) তিনটি কৃষি আইনের (Farm Law) বিরুদ্ধে এতদিন ধরে আন্দোলন করছিলেন তাঁরা। আর সেই একই দিনে বাংলার কৃষকদের (Bengal Farmer) জন্য এবার সিঙ্গুরে (Singur) আন্দোলনে বসার ঘোষণা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।  

রাজ্যে কৃষক আন্দোলনের অন্যতম আঁতুড়ঘর বলা হয় সিঙ্গুরকে। বাম শাসনের পতন আর তৃণমূলে উত্থানের পিছনে সিঙ্গুর আন্দোলন অনেকটাই দায়ি বলে মনে করেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আর এবার সেই সিঙ্গুরেই কৃষকদের জন্য আন্দোলনে নামতে চলেছে বিজেপি। অনেক বিষয় থেকেই তৃণমূল সরকার কৃষকদের বঞ্চিত রেখেছে বলে দাবি তাদের। আর সেই কারণেই ১৪, ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর সিঙ্গুরে ধর্নায় বসতে চলেছে বিজেপি। শনিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) সঙ্গে সাক্ষাতের পর একথা ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু।

আরও পড়ুন- 'কলকাতা পুরভোটে একটি আসনও পাবে না BJP', বিস্ফোরক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক

সাতদফা দাবি নিয়ে কিষাণ মোর্চার নেতাদের নিয়ে আজ রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু। সেই দাবিগুলি হল--- 

  • অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ করা হোক।
  • আত্মহত্যাকারী কৃষক পরিবারকে এককালীন ২০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।
  • সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিশেষ ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ দেওয়া হোক।
  • অবিলম্বে পেট্রো পণ্যে রাজ্য সরকারের সেস কম করা হোক।
  • বিদ্যুতের দাম কম করা হোক। কৃষি ও সেচের কাজে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়া হোক।
  • সরকারকে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ফসল সংগ্রহ করতে হবে। ফড়েদের রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • কৃষকদের ফসলের লাভজনক দাম দিতে হবে।

রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শুভেন্দু। এরপর তিনি বলেন, "সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে আলু,আমন ধান, শীত কালীন সবজি তোলা যায়নি। অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার জেরে চরম সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। কিন্তু, খেলা-মেলাতে বিপুল খরচ করা সরকার, মোয়াজ্জেমদের ভাতা দেওয়া সরকার কৃষকদের এই দুর্দিনে উদাসীন। এমনকী কৃষকদের অবস্থা খতিয়ে দেখতে কোনও বিডিও-কেও পাঠানো হয়নি। অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে শাসক দল তাদের শাখা-প্রশাখা বিস্তার করতে ব্যস্ত। কৃষকদের সহায়তার জন্য রাজ্যপাল যাতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন তার জন্য অনুরোধ করেছি।" 

আরও পড়ুন, Home Tutors Protest: 'স্কুল-শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি বন্ধ করতে হবে', কোর্টে মামলা গৃহ শিক্ষকদের

শুভেন্দু আরও বলেন, "দেশের একাধিক রাজ্যে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়া হয় কৃষকদের, কোথাও কোথাও বিদ্যুতের দামে সরকার ভর্তুকি দেয়। তাই আমাদের দাবি, রাজ্য সরকার এ রাজ্যের কৃষকদের বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দিক, আর যদি সরকারের পক্ষে সেটা সম্ভব না হয় তাহলে সর্বাধিক ২ টাকা প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ দেওয়া হোক কৃষকদের।" এরপরই কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সিঙ্গুরে তিনদিনের ধর্মা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন তিনি। যদিও বিজেপির এই ধর্নাকে 'নাটক' বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।