সংক্ষিপ্ত

বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই অশ্বত্থ গাছের পাতায় বাউল লোকগীতির সুর। করোনা নিয়ে বেঁধেছেন গান। আজও প্রচারের আড়ালে পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের অন্ধ লোক শিল্পী।

বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই অশ্বত্থ গাছের পাতায় বাউল লোকগীতির সুর। করোনা নিয়ে বেঁধেছেন গান। আজও প্রচারের আড়ালে পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের (remote village in Purulia) অন্ধ লোক শিল্পী (Blind folk artist)। এখন অনুষ্ঠান নেই তাই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন অন্ধ শিল্পী গণেশ মাঝি।

গ্রামের খাটিয়ায় বসে রয়েছেন গণেশ মাঝি। পাশে রাখা রয়েছে বেশ কয়েকটি অস্বস্থ গাছের পাতা। কোনো রকম বাদ্য যন্ত্র ছাড়াই সেই পাতা ঠোঁটে চাপ দিয়ে বাঁশির আওয়াজে তুলছেন জনপ্রিয় বাউল গানের সুর। কখনো বা ঢোল বাজিয়ে গেয়ে চলেছেন নিজের তৈরি করোনা সংক্রমণ নিয়ে গান। পুরুলিয়ার হুড়া থানার কেশরগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের জঙ্গল লাগোয়া প্রত্যন্ত গ্রাম লাউসেন বেড়া। এই গ্রামের শিল্পী গণেশ মাঝি। জন্ম থেকেই অন্ধ এই শিল্পী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অনুষ্ঠান করতে গেছেন। 

কিন্তু করোনা আবহে এখন সব বন্ধ। সরকারি প্রাপ্য বলতে ১০০০টাকা শিল্পী ভাতা। অনেক সমস্যার মধ্যেও তিনি সংগীত থেকে সরে যাননি। আজও তিনি গান বাঁধেন করোনা সংক্রমণ নিয়ে। অবসর সময়ে অশ্বত্থ গাছের পাতা দিয়ে বাঁশির সুরে বাউল গান শুনিয়ে আনন্দ দেন শ্রোতাদের। সামান্য গাছের পাতাতেও যে ওঠে বাঁশির সুর, তা গণেশ মাঝির কাছেই শেখা যায়। 

অশ্বত্থ পাতা দিয়ে বাঁশির সুর ধীরে ধীরে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল হয়েছে। গণেশ মাঝি জানান "আমি তো ছোট বেলা থেকেই চোখে দেখতে পাইনা। কিন্তু গাছ আমাকে দেখতে পায়"। তাই আমি যে কোনো পাতাতেই হাত দিতে পারি। আর এভাবেই অশ্বত্থ গাছের সাথে বন্ধুত্ব তৈরী হয় এবং সেই গাছের পাতা থেকেই বাঁশি বানিয়ে গান গাই। আজও এভাবেই চলছে।"

করোনা নিয়ে গান তৈরি প্রসঙ্গে গণেশ মাঝি জানান এই মহামারিতে কি হবে জানা নেই। টিভি দেখতে পাইনা। রেডিও শুনে তথ্য জোগাড় করে করোনা নিয়ে চারটি গান তৈরি করেছি। লক ডাউন পুরোপুরি উঠে গেলে যদি আবার অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করার সুযোগ পাই তাহলে মঞ্চে উঠে আগে গাইবো করোনা মহামারি নিয়ে নিজের তৈরি করা গান।