সংক্ষিপ্ত
- ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্র- রাজ্য তরজা
- ক্ষতিপূরণ দেয়নি কেন্দ্র, দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী
- ৪১৪.৯০ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র, সংসদে দাবি মন্ত্রীর
- কেন্দ্রের দাবিকে উড়িয়ে দিল রাজ্যের শাসক দল
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষতিপূরণ বাবদ এখনও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে কোনও অর্থ সাহায্য পায়নি রাজ্য। সোমবারই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এই দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সেই দাবি কার্যত খারিজ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি দাবি করেন, বুলবুলের ক্ষতিপূরণ বাবদ পশ্চিমবঙ্গকে ইতিমধ্যেই ৪১৪.৯০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। যদিও কেন্দ্রের এই দাবিকে মিথ্যে বলে পাল্টা আসরে নেমেছে তৃণমূল।
সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে রাজ্যে প্রায় তিরিশ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুলবুল পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখে গিয়েছে। তার পরেও রাজ্য সরকারকে এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়নি কেন্দ্র।
রাজ্যের এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, স্টেট ডিজাসস্টার রেসপন্স ফান্ড বা এসডিআরএফ-এর আওতায় বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিপূরণ বাবদ পশ্চিমবঙ্গকে ৪১৪.৯০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ওড়িশাকে দেওয়া হয়েছে ৫৫২ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার লোকসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি জানান, প্রাথমিকভাবে বুলবুলের তাণ্ডবে এগারোজনের মৃত্যু এবং ৩৫ লক্ষ ৫৭ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন বলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে কেন্দ্রকে জানানো হয়। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ইতিমধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্য৪১৪৪.৯০ কোটি টাকা রাজ্য সরকারকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। এর বাইরে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে ন্যাশনাল ডিজাসস্টার রেসপন্স ফান্ড থেকে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা হয়।
আরও পড়ুন- এখনও মেলেনি বুলবুলের ক্ষতিপূরণ, মোদীর উপরেই ভরসা রাখছেন মমতা
মন্ত্রী জানান বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের পরে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিভিন্ন মন্ত্রকের আধিকারিকদের নিয়ে তৈরি প্রতিনিধি দল পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায় ঘুরে গিয়েছে। কিন্তু জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ চেয়ে কোনও রাজ্যের তরফেই দাবিপত্র পেশ করা হয়নি বলে জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। মন্ত্রী এও মনে করিয়ে দেন, এই ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলার প্রাথমিক দায়িত্ব বর্তায় রাজ্য সরকারগুলির উপরেই।
কেন্দ্রের এই দাবিকে অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার এবং শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার যে টাকার কথা বলছে, তা রাজ্যের রুটিন প্রাপ্যের মধ্যে পড়ে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিল তহবিল থেকে ওই টাকা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দিতে বাধ্য কেন্দ্র। যে ৪১৪.৯০ কোটি টাকার কথা বলা হচ্ছে, তা এপ্রিল মাসে দেওয়া হয়। এর সঙ্গে বুলবুলের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি মন্ত্রীর।
একই অভিযোগ করেছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। মিথ্যে অপপ্রচার বন্ধ করতে বলে টুইটারে তাঁর দাবি, যে টাকার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, তা ঘূর্ণিঝড় ফণীর আছডে় পড়ার পনেরো- কুড়ি দিন পরে পাঠানো হয়েছিল। এর সঙ্গে বুলবুলের কোনও সম্পর্কই নেই।